চা-শ্রমিকরাই বন্ধ করে দিলো বাগান
করোনাভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকি থাকায় অন্য সব প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়া হলেও ছুটি পাননি স্বাস্থ্যঝুঁকিতে থাকা ১৬৩ চা-বাগানের শ্রমিকরা। তাই নিজেদের নিরাপত্তার কথা ভেবে নিজেরাই উদ্যোগী হয়ে চা-বাগান বন্ধ করে দিয়েছেন মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জ উপজেলার সমশেরনগর চা-বাগানের শ্রমিকরা।
আজ শুক্রবার তারা নিজ উদ্যোগে বাগান বন্ধ করে দেন।
চা-বাগান পঞ্চায়েত কমিটির যুগ্ম সম্পাদক আশা অরনাল দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘আমরা শহরের পাশে থাকি। শহরের সবকিছুই বন্ধ। কিন্তু, পাশের চা-বাগানটি খোলা। সে কারণে যে যার মতো যখন ইচ্ছা বাগানে আসছেন। আমরা বুঝতেও পারছি না কে সুস্থ, কে অসুস্থ। আজ সকালে বাগানের ম্যানেজারের সঙ্গে দেখা করে কথা বলি। কিন্তু, তিনি বিভিন্ন আইনের কথা বলেন। শেষ পর্যন্ত নিজেদের উদ্যোগেই বাগান বন্ধ করতে বাধ্য হই।’
চা-শ্রমিকের ছেলে ও জাগরণ যুবা ফোরামের সভাপতি মোহন রবিদাস বলেন, ‘চা-শ্রমিকদের করোনাভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকি থেকে মুক্ত রাখতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসক বাগান কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছেন। বাগানে বাইরের লোক প্রবেশ নিষিদ্ধ। একইসঙ্গে বাগানের মদের দোকানগুলোকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে। কিন্তু, কেউ তা অনুসরণ করছে না। রাতে বেশিরভাগ মদের দোকান খোলা থাকে। বহিরাগতদের প্রবেশ অব্যাহত রয়েছে। এজন্য সবার নিরাপত্তার কথা ভেবে আমরা চা-বাগান বন্ধ রেখেছি।’
চা-বাগানের পঞ্চায়েত কমিটির সম্পাদক শ্রীকান্ত কানু গোপাল বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী আমাদের ঘরে থাকতে বলেছেন। আমরা কেন কাজে যাব? আগে নিজে বাঁচি, পরে দেখা যাবে।’
মজুরি পাবেন কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘যেহেতু আমরা নিজেরাই চা-বাগান বন্ধ করেছি, তাই মজুরি পাব কি না, তা জানি না।’
তাদের চা-বাগানে ২ হাজার ৪২৪ জন স্থায়ী শ্রমিকসহ মোট ১২ হাজার শ্রমিক রয়েছেন বলেও জানান তিনি।
চা-বাগানের শ্রমিকরা মজুরি পাবেন কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে বাগানের ম্যানেজার জাকির হোসেন বলেন, ‘এ বিষয়ে বাগান কর্তৃপক্ষ যে সিদ্ধান্ত নেবে, তাই হবে।’
Comments