পুলিশি হেফাজতে সন্দেহভাজন আসামির মৃত্যু: আইন ও সালিশ কেন্দ্রের উদ্বেগ
বরগুনার আমতলী থানা হেফাজতে হত্যা মামলার সন্দেহভাজন আসামি শানু হাওলাদারের রহস্যজনক মৃত্যুর ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে মানবাধিকার সংগঠন আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক)। সেই সঙ্গে নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে জড়িতদের আইনানুযায়ী বিচারের দাবি জানিয়েছে সংগঠনটি।
আজ শুক্রবার এক বিবৃতিতে আসক বলে, পুলিশের পক্ষ থেকে সন্দেহভাজন আসামি আত্মহত্যা করেছে বলে দাবি করা হলেও তা বিশ্বাসযোগ্য নয়। এ ঘটনায় বেশ কিছু প্রশ্ন থেকে যাচ্ছে। মামলার আসামিকে রেখে কেন তার ভাইকে গ্রেপ্তার করা হলো এবং গ্রেপ্তারের পর কেন তাকে আদালতে সোপর্দ করা হয়নি। হাজতে না থেকে তিনি কীভাবে তদন্ত কর্মকর্তার রুমে গেলেন, আত্মহত্যা করার উপকরণ তিনি কীভাবে পেলেন, ওই সময় পুলিশ কর্মকর্তারা কোথায় ছিলেন— এসব প্রশ্ন খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
সম্প্রতি আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হেফাজতে নির্যাতন ও মৃত্যুর বেশ কিছু ঘটনা ঘটেছে, যা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। এসব ঘটনা স্পষ্টত সংবিধানে বর্ণিত জীবনের অধিকার, আইনের আশ্রয় ও বিচারলাভের অধিকার, নির্যাতন থেকে সুরক্ষার অধিকার, বাংলাদেশের স্বাক্ষর করা জাতিসংঘের নির্যাতনবিরোধী সনদ এবং গ্রেপ্তার ও রিমান্ড সংক্রান্ত উচ্চ আদালতের নির্দেশনার চরম লঙ্ঘন। আসক মনে করে, এ ধরনের ঘটনার নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য তদন্ত ও কার্যকর শাস্তি নিশ্চিত না হওয়ার যে অপসংস্কৃতি চালু আছে তার অবসান ঘটাতে ন্যায়বিচার ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা আবশ্যক।
গতকাল বরগুনার আমতলী থানা হাজত থেকে হত্যা মামলার সন্দেহভাজন আসামি শানু হাওলাদারের (৫৫) ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। পরিবারের অভিযোগ, পুলিশ তিন লাখ টাকা দাবি করেছিল। সেই টাকা না পেয়ে শানুকে নির্যাতন করে মেরে ফেলা হয়েছে। পুলিশের দাবি, শানু হাওলাদার আত্মহত্যা করেছেন।
বরগুনার পুলিশ সুপার মারুফ হোসেন এ ঘটনা তদন্ত করতে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অপরাধ) তোফায়েল আহম্মেদকে প্রধান করে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করেছেন। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (বরগুনা সদর) মো. মহব্বত আলী ও সহকারী পুলিশ সুপার (আমতলী-তালতলী সার্কেল) সৈয়দ রবিউল ইসলাম।
আরও পড়ুন:
বরগুনায় থানা হেফাজতে সন্দেহভাজন আসামির মৃত্যু: ওসি প্রত্যাহার
Comments