করোনাভাইরাস

ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা নির্ণয়ে বিগ ডেটা ও এআই-এর ব্যবহার হচ্ছে

দেশে করোনাভাইরাস ঝুঁকির সম্ভাব্য এলাকা চিহ্নিত করতে সরকার একটি ডিজিটাল ম্যাপ করার উদ্যোগ নিয়েছে। মূলত মোবাইল ফোন ব্যবহারকারীদের কাছ থেকে পাওয়া তার স্বাস্থ্য তথ্যের ভিত্তিতেই এই ম্যাপ করা হবে। এক্ষেত্রে উন্নত দেশ কোরিয়া ও সিঙ্গাপুরের মতো করেই ব্যবহার হবে বিগ ডেটা অ্যানালিটিক্স ও আর্টিফিশিয়াল ইন্টিলিজেন্স বা এআই প্রযুক্তির।

দেশে করোনাভাইরাস ঝুঁকির সম্ভাব্য এলাকা চিহ্নিত করতে সরকার একটি ডিজিটাল ম্যাপ করার উদ্যোগ নিয়েছে। মূলত মোবাইল ফোন ব্যবহারকারীদের কাছ থেকে পাওয়া তার স্বাস্থ্য তথ্যের ভিত্তিতেই এই ম্যাপ করা হবে। এক্ষেত্রে উন্নত দেশ কোরিয়া ও সিঙ্গাপুরের মতো করেই ব্যবহার হবে বিগ ডেটা অ্যানালিটিক্স ও আর্টিফিশিয়াল ইন্টিলিজেন্স বা এআই প্রযুক্তির।

জানা গেছে, বেশ কয়েকটি উপায়ে সরকার নাগরিকদের স্বাস্থ্য তথ্য সংগ্রহ করার কাজ শুরু করতে যাচ্ছে। এক্ষেত্রে সেলফ রিপোর্টিং বা স্বেচ্ছা তথ্য প্রদানকেই সরকারের দিক থেকে সবচেয়ে বেশি প্রাধান্য দিয়ে প্রক্রিয়াটি সাজিয়েছে।

তাছাড়া কয়েকটি ক্ষেত্রে গ্রাহক নিজের নিরাপত্তার জন্যে বিভিন্ন জায়গায় কিছু তথ্য রেখে যাবেন। সেগুলোও যেমন আর্টিফিশিয়াল ইন্টিলিজেন্স-এর মাধ্যমে সংগ্রহের প্রক্রিয়া নেওয়া হয়েছে, একই সঙ্গে সব ডেটা এক সঙ্গে করে অ্যানালিটিক্সের মাধ্যমে সরকার একটি করোনা ম্যাপ করলে যেখান থেকে সহজেই বোঝা যাবে দেশের কোন এলাকাগুলো ঝুকিপূর্ণ এবং কোন এলাকা কম ঝুঁকিতে আছে।

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের অ্যাকসেস টু ইনফরমেশান প্রোগ্রাম বা এটুআই সরকারের এই পুরো প্রক্রিয়াটির নেতৃত্ব দিচ্ছে। তাছাড়া, তাদের সঙ্গে কাজ করছে ন্যাশনাল টেলিকম মনিটরিং সেন্টার, সব মোবাইল ফোন অপারেটর এবং স্বাস্থ্য ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

এটুআইএ-এর পলিসি অ্যাডভাইজার আনির চৌধুরী গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, কর্মপরিকল্পনা শেষ করার পর টেস্টিংয়ের কাজ করছেন তারা।

‘(আজ) রোববার থেকে পুরো প্রক্রিয়া শুরু হতে পারে। এ ক্ষেত্রে তথ্য সংগ্রহের পর অল্প কয়েকদিনের মধ্যেই আমরা আমাদের কাঙ্খিত ম্যাপটি পেয়ে যাবো।’

ম্যাপটি তৈরি হয়ে গেলে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পরামর্শে সেটির ব্যবহার করে করোনা পরিস্থিতিকে অনেকটাই নিয়ন্ত্রণ করা যাবে বলে মনে করেন আনির চৌধুরী।

ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তফা জব্বার বলেন, ‘গত এক সপ্তাহ ধরে সরকারের দিক থেকে বিষয়টি নিয়ে কাজ করা হচ্ছে।’

‘বিগ ডেটা ও এআই ব্যবহার করে দক্ষিণ কোরিয়াসহ আরও কয়েকটি দেশ করোনা নিয়ন্ত্রণে সফল হয়েছে। আমাদের প্রযুক্তিগত দক্ষতা আছে। তাহলে আমরা কেনো সেটির ব্যবহার করবো না?’ যোগ করেন ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী।

তথ্য সংগ্রহের প্রথম প্রক্রিয়ায় আজ থেকে দেশের সব মোবাইল ফোনে একটি করে এসএমএস যাওয়ার কথা। যেখানে বলা থাকবে- আপনার শ্বাস কষ্ট, জ্বর বা কাশি থাকলে ডায়াল করুন *৩৩৩২# নম্বরে।

গ্রাহক *৩৩৩২# ডায়াল করলেই ৯০ সেকেন্ডের একটি আইভিআর ভয়েস শুনতে পাবেন যেখানে তাকে পাঁচটি স্বাস্থ্য তথ্য দিতে হবে।

গ্রাহকদের কাছ থেকে পাওয়া প্রশ্নের উত্তরগুলো সরাসরি চলে যাবে রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট বা আইইডিসিআর এবং এনটিএমসি বা এটুআই-এর কাছে।

এটুআই ও এনটিএমসি এই ডেটাগুলো বিগ ডেটা অ্যানালিটিক্স-এর মাধ্যমে বিশ্লেষণ করবে। অন্যদিকে, উত্তরগুলো পর্যালোচনা করে কিছু গ্রাহকের কাছে আরও বিস্তারিত তথ্য জানাতে চাইবে আইইডিসিআর। এক্ষেত্রে গ্রাহককে আরও একবার আইইডিসিআর থেকে ফোন করা হবে বলে জানা গেছে।

এর বাইরে গ্রাহকের জন্যে সুযোগ রাখা হয়েছে http://corona.gov.bd/ ওয়েবে নিজে থেকে তথ্য দিয়ে দেওয়ার জন্যে।

দেশের জনপ্রিয় কয়েকটি মোবাইল অ্যাপ্লিকেশনকেও তথ্য সংগ্রহের কাজে ব্যবহার করছে সরকার। এক্ষেত্রে ইতোমধ্যেই বিকাশের অ্যাপের মধ্যে একটি লিংক দিয়ে দেওয়া হয়েছে যে লিংকটিতে ঢুকলে গ্রাহক আরও একটি অ্যাপে চলে যাবেন এবং সেখান থেকে তিনি নিজের করোনা বিষয়ে পাশাপাশি তথ্য পাবেন, একইভাবে নিজের স্বাস্থ্য তথ্যও জানিয়ে দিতে পারবেন।

সরকারের তথ্য পাওয়ার আরও মাধ্যমগুলোর মধ্যে জনপ্রিয় শর্টকোড ৩৩৩ তে প্রতিদন এক লাখের বেশি কল আসছে এখন। যার প্রায় পুরোটাই করোনা বিষয়ে। এর বাইরে আইইডিসিআর ও জাতীয় স্বাস্থ্য বাতায়নের শর্টকোডেও অসংখ্য কল আসছে। এসব কল থেকেও তথ্য পাওয়া যাচ্ছে।

সব তথ্যকে এক জায়গায় করে বিগ ডেটার ব্যবহার করলে যে ম্যাপটি পাওয়া যাবে তার নির্ভুলতার পরিমাণ হবে ৯৫ থেকে ৯৮ শতাংশ।

বিষয়টিতে মোবাইল ফোন অপারেটর রবি সরকারকে সবচেয়ে বেশি সহায়তা দিচ্ছে বলে জানান আনির চৌধুরী।

তিনি বলেন, ‘গ্রাহকের স্বাস্থ্য তথ্যকেই কেবল কাজে লাগোনো হবে এখানে। গ্রাহকের ব্যক্তিগত তথ্যের ব্যবহার বা তা প্রকাশের কোনো সুযোগ নেই।’

জানা গেছে, এই ম্যাপটির কাজ হয়ে গেলে পরে প্রযুক্তির মাধ্যমে এটিও বের করা সম্ভব যে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় অবস্থান করা কোনো গ্রাহক যদি ওই এলাকার বাইরে চলে যেতে চান তার মুভমেন্টও এখানে ফলো করা সম্ভব।

মূলত গ্রাহকের মোবাইল নম্বর, তার মোবাইল ফোনের ১৫ ডিজিটের আইএমআই ও তার জিওগ্রাফিক্যাল লোকেশনই এখানে ব্যবহার হবে বলে জানা গেছে।

Comments

The Daily Star  | English

Culprits of Khagrachhari, Rangamati violence will be brought to book: CA office

High-powered probe body to be formed; home adviser to visit Khagrachharai and Rangamati tomorrow

2h ago