দেখা দিতে পারে ডেঙ্গুর প্রকোপ

dengue
এডিস মশা। ফাইল ছবি

বিক্ষিপ্ত বৃষ্টিপাত ও ফাঁকা রাজধানী ডেঙ্গুবাহী এডিস মশার বংশ বিস্তারে সহায়ক পরিবেশ তৈরি করতে পারে— এমন আশঙ্কাই করছেন বিশেষজ্ঞরা।

তাদের মতে, খোলা কমোড ও বিভিন্ন ধরনের পরিত্যক্ত পাত্রে জমে থাকা পরিষ্কার পানি এবং বিভিন্ন নির্মাণ সাইটে থাকা জলাধারগুলো মশার উৎস হতে পারে।

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মমিনুর রহমান মামুন বলেন, ‘মানুষ যদি গ্রামে যাওয়ার আগে নিজ বাসায় থাকা পানির পাত্র খালি না করে, বাসার আশপাশের পরিত্যক্ত পাত্রগুলোতে জমে থাকা পানি ফেলে না যায় এবং কমোডগুলো ঢেকে না যায়, তাহলে গ্রাম থেকে ফিরে দেখবে বাড়িটি এডিস মশায় ভরপুর।’

স্বাস্থ্য বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, জানুয়ারি থেকে এখন পর্যন্ত ডেঙ্গুজ্বর নিয়ে ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন ১ হাজার ২৬৯ জন। ঢাকার বাইরে ৬৩ জন।

জুলজিক্যাল সোসাইটি অব বাংলাদেশের সাবেক সভাপতি ও কীটতত্ত্ববিদ মঞ্জুর চৌধুরী দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘বৃষ্টিপাত এডিসসহ সব ধরনের মশার জন্যই অনুকূল পরিবেশ তৈরি করবে। এডিস প্রতিরোধে আমরা পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নিচ্ছি না। এর ফলে সামনের মাসগুলোতে ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব দেখা দিতে পারে।’

‘কোভিড-১৯ ও ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব একসঙ্গেই হতে পারে’, যোগ করেন তিনি।

‘সিঙ্গাপুরে একইসঙ্গে এই দুটি ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীও রয়েছেন’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘সেখানে দুটো ভাইরাসই সক্রিয় রয়েছে এবং ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ২৫ হাজার।’

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক কবিরুল বাশার বলেন, ‘কয়েকদিন আগে হওয়া হালকা বৃষ্টিপাত এডিস মশার বংশ বিস্তারে সহায়তা করেছিল। এডিস মশা প্রাপ্ত বয়স্ক হতে ১৫ দিনের মতো সময় লাগে।’

‘সারাদেশে পরিচ্ছনতা কার্যক্রম ও সচেতনতামূলক প্রচারণা চালানো শুরু করা উচিত’, বলেন তিনি।

তিনি বলেন, ‘রেলস্টেশন, বাসস্ট্যান্ড ও পুলিশ স্টেশনগুলো পরিষ্কার করা উচিত। নির্মাণাধীন সাইটের মালিকদের খুব সচেতন হওয়া উচিত। এ ধরনের সাইটে থাকা খাদ, বিভিন্ন ধরনের পাত্র ও জলাধারগুলোতে ব্লিচিং পাউডার ব্যবহার করা উচিত।’

ইউনিয়ন পরিষদ ও উপজেলাগুলোতে মশা নিয়ন্ত্রণের জন্য পর্যাপ্ত সরঞ্জামাদি নেই বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগ নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্রের লাইন ডিরেক্টর শাহনিলা ফেরদৌসী বলেন, ‘সিটি করপোরেশনের প্রতিনিধিসহ প্রত্যেককেই পরিচ্ছন্নতার মিশন শুরু করা উচিত।’

তিনি বলেন, ‘আমরা ৪৯১টি উপজেলায় ডেঙ্গু পরীক্ষার ৪৩ হাজার কিট দিয়েছি। জানুয়ারিতে বিভিন্ন উপজেলার নতুন চিকিৎসকদের ডেঙ্গু রোগীদের ব্যবস্থাপনা বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে করোনা পরিস্থিতির কারণে আমরা অনলাইনে প্রশিক্ষণ দেওয়ার চেষ্টা করছি।’

‘কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত রোগী যদি ডেঙ্গুতেও আক্রান্ত হন, তাহলে তিনি গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়বেন। আমরা চিকিৎসকদের জ্বরে আক্রান্ত রোগীদের সতর্কতার সঙ্গে পর্যবেক্ষণের পরামর্শ দিচ্ছি’, যোগ করেন তিনি।

স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী তাজুল ইসলাম বলেন, ‘সিটি করপোরেশনগুলোকে পর্যাপ্ত পরিমাণ কীটনাশক সংগ্রহ এবং সেগুলো নিয়মিত ব্যবহার করতে বলা হয়েছে। একইসঙ্গে জনগণকে সচেতন করতে এবং প্রয়োজনে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করতে বলা হয়েছে।’

Comments

The Daily Star  | English

Tanvir takes five as Tigers clinch 2nd Sri Lanka ODI

Bangladesh captain Mehidy Hasan Miraz has won the toss and opted to bat first in the second ODI against Sri Lanka, looking to keep the three-match series alive with a win at the R Premadasa Stadium today. 

13h ago