করোনা মোকাবিলা

সরকারি চা বাগানেই মানা হচ্ছে না সরকারি নির্দেশনা

করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব রোধে সাধারণ ছুটি ঘোষণাসহ সরকারের দেওয়া নির্দেশনাগুলো রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন নিউ সমনবাগ ও পাথারিয়া চা বাগানে মানা হচ্ছে না। শ্রমিকদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত না করেই তাদেরকে দিয়ে টিলা, কারখানাসহ বিভিন্ন স্থানে কাজ করানো হচ্ছে। খোলা রাখা হয়েছে বাগানের কার্যালয়, চলছে স্বাভাবিক কার্যক্রম। মারাত্মক ঝুঁকি নিয়ে কাজ করছেন দুই হাজার চা শ্রমিক, কর্মচারী ও কর্মকর্তা।
Govt_tea-garden
করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব উদ্ভূত পরিস্থিতিতে সরকারের দেওয়া নির্দেশনা রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন নিউ সমনবাগ ও পাথারিয়া চা বাগানে মানা হচ্ছে না। ছবি: স্টার

করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব রোধে সাধারণ ছুটি ঘোষণাসহ সরকারের দেওয়া নির্দেশনাগুলো রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন নিউ সমনবাগ ও পাথারিয়া চা বাগানে মানা হচ্ছে না। শ্রমিকদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত না করেই তাদেরকে দিয়ে টিলা, কারখানাসহ বিভিন্ন স্থানে কাজ করানো হচ্ছে। খোলা রাখা হয়েছে বাগানের কার্যালয়, চলছে স্বাভাবিক কার্যক্রম। মারাত্মক ঝুঁকি নিয়ে কাজ করছেন দুই হাজার চা শ্রমিক, কর্মচারী ও কর্মকর্তা।

বিশ্ববিদ্যালয় চা ছাত্র সংসদের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সভাপতি ডা. রাজু কুর্মী বলেন, সব সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান সাধারণ ছুটির আওতায় রয়েছে। অথচ বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অধীনে সরকারি চা বাগানগুলোতে পুরোদমে কাজ চলছে। নিউ সমনবাগ ও পাথারিয়া চা বাগানে প্রায় দুই হাজার নিয়মিত শ্রমিক ও শতাধিক কর্মকর্তা-কর্মচারী কাজ করছেন। করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব ঠেকাতে সরকার গত ২৬ মার্চ থেকে ৪ এপ্রিল পর্যন্ত অফিস-আদালতে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করেছে। সেই সঙ্গে জরুরি প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বের না হওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ওষুধ ও নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দোকান ছাড়া সব ধরনের বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। কিন্তু দুটি সরকারি চা বাগানের চিত্র একেবারেই আলাদা। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে সরকারের নানামুখী পদক্ষেপ যেন চা বাগানের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়!

তিনি আরও অভিযোগ করেন, করোনা প্রতিরোধে মাস্ক ও স্যানিটাইজার ব্যবহার সংক্রান্ত কোনো সচেতনতা কার্যক্রম এখানে চালানো হয়নি। জনপ্রতিনিধি, এমপি, মন্ত্রী, চা শ্রমিক নেতা কারো কোনো মাথা ব্যথা নেই।

শনিবার সরেজমিনে নিউ সমনবাগ ও পাথারিয়া চা বাগান ঘুরে শ্রমিকদের দল বেঁধে কাজে যেতে দেখা গেছে। স্বাস্থ্য সুরক্ষার কোনো ব্যবস্থা চোখে পড়েনি। চা বাগান কার্যালয়ে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের স্বাভাবিক কার্যক্রম দেখা গেছে। তবে তাদের চোখে-মুখে ছিল অজানা এক আতঙ্ক।

চা শ্রমিক শিলা রিকমুন, যমুনা রিকমুন, নমিতা কৃষ্ণ গোয়ালা ও মিনা রিকমুন বলেন, ‘শুনছি দেশে কী একটা কঠিন অসুখ এসেছে, সরকার সব কিছু বন্ধ করে দিয়েছে। আমাদের বাগানতো বন্ধ দেয়নি, তাই কাজে যাচ্ছি। করোনা প্রতিরোধে বাগানের পক্ষ থেকে কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে জানতে চাইলে তারা বলেন, ‘বাসায় ব্যক্তিগতভাবে হাত-মুখ ধোয়ার ব্যবস্থা করেছি।’

নিউ সমনবাগ চা বাগানের ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ আলী খান ও পাথারিয়া চা বাগানের ব্যবস্থাপক শাহিদ নেওয়াজ জানান, করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব রোধে সরকার সাধারণ ছুটি ঘোষণা করলেও এ ব্যাপারে টি বোর্ডের কোনো নির্দেশনা তারা পাননি। বিভাগীয় শ্রম অধিদপ্তরের (শ্রীমঙ্গল) উপপরিচালক মোহাম্মদ নাহিদুল ইসলাম গত ২৫ মার্চ এক চিঠিতে সরকার ঘোষিত সাধারণ ছুটি চা বাগানগুলোর ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয় বলে জানিয়েছেন। যে কারণে তারা শ্রমিকদের ছুটি দেননি।

বাংলাদেশ টি স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি হাবিবুর রহমান চা বাগানকে দ্রুত সরকার ঘোষিত সাধারণ ছুটির আওতাভুক্ত করতে গত ২৬ মার্চ শ্রম দপ্তরের উপপরিচালক বরাবরে আবেদন করেছেন। তিনি বলেন, করোনাভাইরাস প্রতিরোধে চা শ্রমিক ও কর্মচারীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষার কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। তাই এখানে ঝুঁকি বেশি।

Comments

The Daily Star  | English

Abu sayed’s death in police firing: Cops’ FIR runs counter to known facts

Video footage shows police shooting at Begum Rokeya University student Abu Sayed, who posed no physical threat to the law enforcers, during the quota reform protest near the campus on July 16. He died soon afterwards.

10h ago