বিল পরিশোধে ডিপিডিসিতে বিদ্যুৎবিহীন কয়েকশ গ্রাহকের ভিড়
করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়া ঠেকাতে সরকারের অনুরোধে যখন ঢাকার অধিকাংশ মানুষ নিজেদের বাসায় অবস্থান করছেন, তখন বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ায় ঢাকা বিদ্যুৎ বিতরণ কোম্পানি (ডিপিডিসি) এর আজিমপুর কার্যালয়ের সামনে কয়েকশ গ্রাহকের ভীড়।
গত ২২ মার্চ সরকারের এক ঘোষণা অনুযায়ী বিদ্যুতের আবাসিক গ্রাহকরা কোনো জরিমানা ছাড়াই পরবর্তীতে বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করতে পারবেন বলে জানানো হয়। তারপরও হঠাৎ করে আজ আজিমপুর ও লালবাগ এলাকার আবাসিক গ্রাহকদের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।
এমন অবস্থায়, হঠাৎ বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ার পর কয়েকশো মানুষ তাদের প্রিপেইড কার্ড রিচার্জ করার জন্য ছুটে যান ডিপিডিসির আজিমপুর কার্যালয়ে। তবে এত গ্রাহককে একসাথে সেবা দেয়ার প্রস্তুতি ছিল না সেখানে। তিনটি কাউন্টারের মধ্যে খোলা ছিল একটি। দ্য ডেইলি স্টারের প্রতিবেদক জানিয়েছেন, দুপুর ১২টার মধ্যে সেখানে প্রায় এক কিলোমিটার লম্বা লাইন হয়ে যায়।
বিদ্যুতের কার্ড রিচার্জ করতে যাওয়া অনেকেই ছিলেন নারী ও বয়স্ক ব্যক্তি। প্রখর রোদে তিন চার ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকার সময় অনেকেই গরম সহ্য করতে না পেরে মাস্ক খুলে ফেলেন।
আজিমপুরের গ্রাহক আসিফ আহমেদ জানান, ‘করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়া ঠেকাতে ব্যাংকে ভীড় এড়াতে সরকার পরে বিদ্যুৎ বিল দেয়ার জন্য বলেছিল। আশ্বস্ত করা হয়েছিল, এই সময়ে বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ হবে না। এখন আমরা ৩৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস গরমে তিন ঘণ্টা ধরে দাঁড়িয়ে আছি। এরই মধ্যে অনেকেই অসুস্থ হয়ে পড়েছেন।’
আরেক গ্রাহক আসমা খাতুন প্রায় চার ঘণ্টা অপেক্ষার পর তার কার্ড রিচার্জ করতে পারেন।
তিনি বলেন, ‘কাউন্টারে মাত্র দুজন কর্মী কাজ করছে, আর বাকি অফিস বন্ধ। মাত্র দুজন কর্মী দিয়ে তারা কীভাবে বিদ্যুতের মতো একটা গুরুত্বপূর্ণ অফিস চালু রেখেছেন?’
বিদ্যুত সংযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়া আরেক গ্রাহক, মো কামরুজ্জামান বলেন, ‘সরকার এই ভীড় তৈরি করতে আমাদের বাধ্য করেছে। আমরা যদি এখান থেকে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হই, তাহলে কি ডিপিডিসি সে দায় নেবে?’
ডিপিডিসির তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী, শেখ মো. জিয়াউল হাসান বলেন, দেরিতে বিদ্যুৎ বিল দেয়া যাবে এমন ঘোষণাটি আসলে পোস্টপেইড গ্রাহকদের জন্য। আর প্রিপেইড গ্রাহকরা আগাম কেনা বিদ্যুৎ ব্যবহার করেন, যা শেষ হয়ে গেলে মিটার থেকে সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়।
তিনি আরো জানান, ‘যদিও পদ্ধতিটি এমনভাবে তৈরি করা হয়েছে যাতে ছুটির দিনে বিদ্যুতের সংযোগ বিচ্ছিন্ন হবে না। যেহেতু আজ রবিবার, প্রথম কার্যদিবস, সে কারণে একসাথে সব সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছে। বিষয়টি আমরা ভবিষ্যতে খেয়াল রাখবো এবং পরবর্তীতের প্রিপেইড মিটার প্রোগ্রাম করার সময় বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করব।’
Comments