কাজ বন্ধ করে দিলেন সিলেটের ২৩টি বাগানের চা শ্রমিকরা

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে সরকারি-বেসরকারি সব প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়া হলেও ছুটি পাননি সিলেটের ১৬৩টি চা বাগানের শ্রমিকরা। নিজেদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে আজ সোমবার ২৩টি বাগানের শ্রমিকরা কাজ বন্ধের ঘোষণা দিয়েছেন।
Tea-worker
বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়ন সিলেট ভ্যালির সভাপতি রাজু গোয়ালা বক্তব্য রাখছেন। ছবি: স্টার

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে সরকারি-বেসরকারি সব প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়া হলেও ছুটি পাননি সিলেটের ১৬৩টি চা বাগানের শ্রমিকরা। নিজেদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে আজ সোমবার ২৩টি বাগানের শ্রমিকরা কাজ বন্ধের ঘোষণা দিয়েছেন।

সিলেট চা জনগোষ্ঠী ছাত্র-যুব কল্যাণ পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি দিলীপ কুর্মী দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে ২৫ মার্চ সারা দেশের সরকারি-বেসরকারি অফিস আগামী ৪ এপ্রিল পর্যন্ত বন্ধ ঘোষণা করেছে সরকার। এর পরিপ্রেক্ষিতে বন্ধ হয়েছে অধিকাংশ পোশাক কারখানা। দাবি করেও ছুটি পাননি চা শ্রমিকরা। আজ সকালে বাগানের ম্যানেজারের সঙ্গে দেখা করে কথা বলেছি। তিনি বিভিন্ন আইনের কথা বললেন। শেষ পর্যন্ত নিজেদের উদ্যোগেই বাগান বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছি আমরা।

খাদিম চা বাগানের সভাপতি সবুজ তাতি জানান, শ্রমিকদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে বাগানের মালিকপক্ষ কোনো উদ্যোগ নেয়নি, ছুটিও দেয়নি। বুরজান চা বাগানের পঞ্চায়েত কমিটির সভাপতি বিলাশ বুনারজি বলেন, প্রধানমন্ত্রী আমাদের ঘরে থাকতে বলেছেন। আমরা কেন কাজে যাব? আগে নিজে বাঁচি, পরে দেখা যাবে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, যেহেতু আমরা নিজেরাই চা বাগান বন্ধ করেছি, তাই মজুরি পাব কি না জানি না।

সিলেট জেলার ২৩টি চা বাগানে ছয় হাজার ৭৬০ জন স্থায়ী শ্রমিকসহ মোট ১০ হাজার শ্রমিক কাজ করেন।

চা বাগান মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ চা সংসদ সিলেট অঞ্চলের চেয়ারম্যান শিবলি বলেন, ‘চা শ্রমিকরা এই সময় বৃষ্টি হওয়ার আগে চা গাছে পানি দিচ্ছে এবং তাদের ঘরগুলো মেরামত করছে। আমরা যদি বাগান বন্ধ করি, তাহলে অস্থায়ী কর্মীরা সুবিধাবঞ্চিত হবে।’

বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়ন সিলেট ভ্যালির সভাপতি রাজু গোয়ালা বলেন, বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় কমিটির নেতারা ফোন পর্যন্ত ধরছেন না। কোনো উপায় না দেখে আমরা এই উদ্যোগ নিয়েছি। আমরা কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করেছি যেন আমাদের সবেতনে ছুটি দেওয়া হয়। আমরা আর কেউ বাগানে যাব না।

বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় কমিটির সহসভাপতি পঙ্কজ কন্দ বলেন, শ্রম অধিদপ্তরে দফায় দফায় চিঠি দিয়েও আমরা কোনো উত্তর পাইনি। তবে সিলেট ভ্যালির সভাপতির আনা অভিযোগ অস্বীকার করেন তিনি।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে শ্রীমঙ্গলে বিভাগীয় শ্রম অধিদপ্তরের উপপরিচালক নাহিদ হোসেন বলেন, বাগান মালিকরা চাইলে নিরাপত্তার স্বার্থে বাগানের কার্যক্রম বন্ধ রাখতে পারেন। বিষয়টি আমরা চা শ্রমিক নেতাদের জানিয়েছি। এখানে আমাদের কিছুই করার নেই।

আরও পড়ুন:

সরকারি চা বাগানেই মানা হচ্ছে না সরকারি নির্দেশনা

Comments

The Daily Star  | English

Abu sayed’s death in police firing: Cops’ FIR runs counter to known facts

Video footage shows police shooting at Begum Rokeya University student Abu Sayed, who posed no physical threat to the law enforcers, during the quota reform protest near the campus on July 16. He died soon afterwards.

9h ago