হাত না ধুয়ে যে গ্রামে প্রবেশ নিষেধ
গ্রামের প্রবেশ মুখেই দেওয়া হয়েছে বাঁশের ব্যারিকেড। নোটিশে লেখা আছে হাত ধুয়ে গ্রামে প্রবেশ করুন। পাশেই স্থাপন করা হয়েছে একটি বেসিন। তিনটি বোতলে রাখা হয়েছে জীবাণুনাশক ওষুধ ও পানি। হাত ধোয়ার পাশাপাশি শরীরে ও গাড়িতে জীবাণুনাশক স্প্রে করার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।
এই চিত্র ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলার বড়াইল ইউনিয়নের জালশুকা গ্রামের। করোনা পরিস্থিতিতে সচেতনতা সৃষ্টি করতে গ্রামের যুবকরা এই উদ্যোগ নিয়েছেন। এ ছাড়া গত ২৪ মার্চ গ্রামে ও আশেপাশের এলাকায় জীবাণুনাশক স্প্রে করেন তারা।
এই উদ্যোগের সঙ্গে জড়িতদের একজন রেজাউল হক বুলু। তিনি দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, গ্রামের ভেতরে আসার সময় সবাই যেন জীবাণুমুক্ত হতে পারেন সেই জন্য এই ব্যবস্থা। বাঁশের ব্যারিকেড দেওয়া হয়েছে যেন হঠাৎ কেউ গ্রামের ভেতরে গাড়ি নিয়ে ঢুকে পড়তে না পারেন।
ওই গ্রামের বাসিন্দা রিজেন জানান, তাদের গ্রামে আড়াই হাজার মানুষ বাস করেন। এর মধ্যে পাঁচজন প্রবাসী রয়েছেন। একজন ইতালি থেকে ফিরে হোম কোয়ারেন্টিনে আছেন। বাকি চার জনের হোম কোয়ারেন্টিন শেষ হলেও তারা ঘর থেকে বের হচ্ছেন না। ঢাকা বা অন্য জেলা থেকে যারা এসেছেন, তাদেরও সচেতন থাকার অনুরোধ জানানো হয়েছে।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, গ্রামের প্রবেশের রাস্তা থেকে অন্তত ৩০ গজ দূরে একটি বাংলো ঘরের সামনে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে যুবকরা পালা করে বসে লোকজনের চলাচলের ওপর নজর রাখছেন। বেসিনের সঙ্গে নোটিশ সাঁটানো রয়েছে, ‘প্রিয় গ্রামবাসী, আসসালামু আলাইকুম। একটি বিশেষ ঘোষণা। সকলের অবগতির জন্যে জানানো যাচ্ছে যে, প্রাণঘাতী ভাইরাস করোনার আতঙ্কে সারা বিশ্ববাসী এখন আতঙ্কিত। তাই গ্রামের সর্বসাধারণ ভাই-বোনদের জানানো যাচ্ছে যে, আপনারা সকলে যার যার ঘরে অবস্থান করুন। অপ্রয়োজনে বাইরে ঘোরাঘুরি করবেন না। গ্রামের মূল রাস্তায় জীবাণুনাশক স্প্রের ব্যবস্থা করা হয়েছে। সুতরাং গ্রাম থেকে বাহির হওয়ার সময় ও প্রবেশের সময় জীবাণুনাশক স্প্রেটি ব্যবহার করুন। যদি কেউ গাড়ি নিয়ে আসা-যাওয়া করেন তবে উক্ত স্প্রে দিয়ে আপনার গাড়িটিও স্প্রে করবেন। উক্ত কাজটি নিজে করুন এবং অন্যকেও উৎসাহিত করুন।’
এতে আরও লেখা রয়েছে, ‘উক্ত কাজটি করার ক্ষেত্রে কেউ যদি আপত্তি পোষণ করেন বা কারো সাথে দুর্ব্যবহার করেন তার প্রতি আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। অতএব, নিজের জীবনকে মূল্যায়ন করুন, গ্রামকে ভাইরাস মুক্ত রাখুন।’
Comments