দ্বিগুণ দামে বিক্রি হচ্ছে ব্লিচিং পাউডার
করোনাভাইরাস থেকে নিরাপদ থাকতে আসবাবপত্র, ফ্লোর ও গাড়িসহ বিভিন্ন যন্ত্রাংশ জীবাণুমুক্ত করতে ব্লিচিং পাউডারের ব্যবহার বেড়েছে। ফলে গত এক মাসের মধ্যে বাজারে এর পাইকারি দাম বেড়ে দ্বিগুণ হয়েছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, চট্টগ্রামের চাক্তাই-খাতুনগঞ্জে অর্ধশতাধিক দোকানের সামনে পাইকারি ও খুচরা পর্যায়ে ব্লিচিং পাউডার বিক্রি করছেন ব্যবসায়ীরা। পাইকারি পর্যায়ে প্রতি ড্রাম (৫০ কেজি) মানভেদে বিক্রি হচ্ছে ৩ গাহার ৮০০ টাকা থেকে ৩ হাজার ৯০০ টাকা পর্যন্ত। অথচ মার্চের শুরুতে তা বিক্রি হয়েছে ১ হাজার ৮৫০ টাকা থেকে ১ হাজার ৯০০ টাকা। এছাড়া প্রতি ২৫ কেজি ওজনের ড্রাম আগে যেখানে ১ হাজার টাকা থেকে ১ হাজর ১শ টাকা দরে বিক্রি হতো তা এখন বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ৮৫০ টাকা থেকে ১ হাজার ৯৫০ টাকা।
খাতুনগঞ্জের বাজারে খুচরা পর্যায়ে প্রতি কেজি ব্লিচিং পাউডার বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকা থেকে ১১০ টাকা কেজি। নগরীর অন্যান্য বাজারে এটি কেজি প্রতি আরো ২০-২৫ টাকা বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে।
খাতুনগঞ্জ থেকে দুই থেকে তিন কিলোমিটার মধ্যে চকবাজার, কাজির দেউরি ও বহদ্দারহাট বাজার। এসব এলাকায় পণ্যটি ১২০ টাকা থেকে ১৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। তারপরও জীবাণুনাশক এ পণ্যটি সচারচর পাওয়া যাচ্ছে না।
খাতুনগঞ্জের মাখন লাল বণিক দোকানের বিক্রয়কর্মী রাশেদ হোসেন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, গত দুই-তিন সপ্তাহ ধরে পণ্যটির চাহিদা প্রায় ২০-২৫ গুণ বেড়েছে। আগে যেখানে প্রতিদিন গড়ে ২০ থেকে ২৫ ড্রাম বিক্রি হতো বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে ৪০০ ড্রামের বেশি। হঠাৎ করে এর চহিদা বাড়ায় পণ্যটির দাম প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে।
ভারত থেকে নিয়মিত ব্লিচিং পাউডার আমদানি করেন চট্টগ্রামের আমাদনিকারক আরিফ হোসেন। তিনি বলেন, শুধু বাংলাদেশে নয়, সারা বিশ্বেই এ পণ্যটির চহিদা ও দাম বেড়েছে। আগে ট্যানারি, হাসপাতাল ও বিভিন্ন শিল্প কারখানায় ব্যবহার হলেও বাসা-বাড়ি বা ব্যক্তিপর্যায়ে তেমন ব্যবহার ছিল না। করোনা ভাইরাসের প্রভাবের কারণে সারা বিশ্বেই এখন এ পণ্যটি জীবাণুনাশক হিসাবে বাসা বাড়ী, অফিসসহ প্রায় সবখানেই ব্যবহার হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, করোনা মোকাবেলায় পণ্যটির চাহিদা বাড়ায় বেশ কয়েকটি দেশ এর রফতানিতে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। ফলে পণ্যটি সব সময় পাওয়া যাচ্ছে না। সম্প্রতি পাকিস্তান থেকে একটি চালান আসার কথা থাকলে তা বাতিল করেছেন রফতানিকারক প্রতিষ্ঠান।
খাতুনগঞ্জের ব্লিচিং পাউডার কিনতে আসা একটি ক্লিনিকের কর্মী বলেন, ক্লিনিকের বিভিন্ন বর্জ জীবাণুমুক্ত করতে প্রতিদিন কয়েক কেজি ব্লিচিং পাউডার প্রয়োজন হয়। কিন্তু গত দুই সপ্তাহ ধরে সব জায়গায় ব্লিচিং পাউডার পাওয়া যাচ্ছে না। পণ্যটির সরবরাহ স্বাভাবিক না থাকলে হাসপাতাল-ক্লিনিকের বিভিন্ন বর্জ্য জীবাণুমুক্ত করা সম্ভব হবে না। এতে জীবাণু ছড়িয়ে পড়ার আশংকা রয়েছে।
Comments