আগের মতোই জমজমাট ২৫০টি হাট
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। সেই সঙ্গে জনসমাগম এড়িয়ে চলতে বলা হচ্ছে, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার নির্দেশনা দিয়ে যাচ্ছে সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর)। এগুলোর তোয়াক্কা না করে লালমনিরহাট ও কুড়িগ্রামের নিয়মিত বসছে ২৫০টি হাট। তাতে ক্রেতা-বিক্রেতাদের উপস্থিতিও থাকছে চোখে পড়ার মতো।
গতকাল সোমবার বিকালে লালমনিরহাট সদর উপজেলার নয়ারহাট ঘুরে দেখা যায়, বিপুল সংখ্যক মানুষের সমাগম ঘটেছে হাটে। স্থানীয়রা জানান, স্বাভাবিক সময়ে এত মানুষের উপস্থিতি দেখা যায় না। শুধু নয়ারহাট নয়, লালমনিরহাট ও কুড়িগ্রাম জেলার ২৫০টি হাটের দৃশ্য একই রকম।
কুলাঘাট গ্রামের নয়ারহাটে এসেছেন কৃষক দেলোয়ার হোসেন (৫৮)। তিনি বলেন, ‘আমি এখন আর চায়ের দোকানে বসি না। আগে বসতাম, চা-পানি খেতাম। করোনা ভাইরাসের কারণে সব কিছু বন্ধ হয়েছে, কিন্তু হাট বন্ধ হয়নি। কারণ হাট হলো আমাদের জীবনযাপনের সঙ্গে জড়িত। হাটে এসে জিনিসপত্র বিক্রি করি, কিনি।’
বানিয়াদীঘি গ্রামের নজরুল ইসলাম (৫৩) বলেন, ‘সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার ব্যাপারে আমি জানি কিন্তু মানতে পারছি না। হাটে আসতে হয়, অনেক মানুষের ভিড় থাকে হাটে। ঘেঁষাঘেঁষি করি চলতে হয়। আল্লাহ ভরসা ছাড়া আর কোনো উপায় নেই।’
কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার বালারহাটে এসেছেন নাওডাঙ্গা গ্রামের নাদের আলী। তিনি বলেন, ‘আগের চেয়ে হাটে লোকজনের সমাগম বেশি হচ্ছে। সব দিকে দোকান-পাট বন্ধ থাকায় লোকজন হাটে ছুটছেন। আমিও হাটে আসতে বাধ্য হচ্ছি। কারণ হাটে না এলে পরিবারের প্রয়োজন মেটানো সম্ভব হচ্ছে না।’
লালমনিরহাট সদর উপজেলার দুড়াকুটি হাটের ইজারাদার নুরুল ইসলাম বলেন, ‘যেহেতু হাট বন্ধ রাখতে কোনো নির্দেশনা পাওয়া যায়নি. তাই হাট চলছে আর লোকজনের সমাগমও ঘটছে। ইজারাদার হিসেবে হাটে আমি নিজেও সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে পারি না।’
লালমনিরহাট জেলা সিভিল সার্জন ডা. নির্মলেন্দু রায় দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, হাটগুলোতে মানুষের সমাগম বেশি হচ্ছে। উপচে পড়া ভিড়। হাটগুলো এখন আশঙ্কার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। হাট থেকে খুব তাড়াতাড়ি করোনা ছড়িয়ে পড়তে পারে।
আদিতমারী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুহাম্মদ মনসুর উদ্দিন বলেন, আমরা চেষ্টা করছি হাটগুলোতে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে যেন পণ্য বেচা-কেনা হয়। দৈনন্দিন চাহিদা মেটানোর জন্য মানুষ হাটগুলোতে ছুটছেন। অনেক হাটে গিয়ে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে মানুষজনকে বাধ্য করা হয়েছে। কিন্তু আমরা চলে এলে আবারো বিশৃঙ্খলা তৈরি হয়।’
Comments