দেশে আরও ২ জন করোনায় আক্রান্ত

আইইডিসিআর পরিচালক মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা। ছবি: অনলাইন ব্রিফিং থেকে নেওয়া

গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত আরও দুই জনকে শনাক্ত করা হয়েছে। এ নিয়ে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে ৫১ জনে দাঁড়িয়েছে। এদের মধ্যে আরও ছয় জন সুস্থ হয়েছেন। মোট সুস্থ হয়েছেন ২৫ জন। এ ছাড়া, এখন পর্যন্ত মারা গেছেন পাঁচ জন।

আজ মঙ্গলবার বিকাল ৩টার দিকে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে করোনা পরিস্থিতি নিয়ে অনলাইন ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানিয়েছেন সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) পরিচালক মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা।

তিনি বলেন, ‘আমাদের হটলাইনে গত ২৪ ঘণ্টায় প্রাপ্ত কলের সংখ্যা ৩ হাজার ৬৩৭টি। যার মধ্যে ২ হাজার ৫০৯টি কল কোভিড-১৯ সংক্রান্ত। এ পর্যন্ত আমরা মোট নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা করেছি ১ হাজার ৬০২ জনের। গত ২৪ ঘণ্টায় ১৪০ জনের। অনেকের মনে প্রশ্ন হতে পারে, গতকালকের চেয়ে আজকের সংখ্যা একটু অন্যরকম দেখাচ্ছে। এখন আরও কয়েকটি প্রতিষ্ঠানে পরীক্ষা শুরু হয়েছে, সেখানে মোট পরীক্ষার যে সংখ্যা, সেই সংখ্যার তথ্যটি আমাদের কাছে দেরিতে আসার কারণে আজকে আমরা সন্নিবেশিত করেছি। যে কারণে গতকালকের সঙ্গে আজকের ১৪০টি যোগ করলেও সংখ্যাটি আগের তুলনায় বেশি দেখাচ্ছে। সবমিলিয়ে সর্বমোট নমুনা পরীক্ষার সংখ্যা ১ হাজার ৬০২। গত ২৪ ঘণ্টায় ১৪০ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এখানে সংখ্যা বলছি মানে কতজন সন্দেহজনক রোগীর নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। যারা নিশ্চিত রোগী, তাদের ক্ষেত্রে আমরা একাধিকবার নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা করে থাকি। সে সংখ্যাটি এখানে উল্লেখ করা হয়নি।’

‘গত ২৪ ঘণ্টায় যে ১৪০ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছ, তাদের মধ্যে আমরা দুই জনের দেহে কোভিড-১৯ এর সংক্রমণ নিশ্চিত করেছি। দুজনের মধ্যে একজনের বয়স ৫৭ বছর, তিনি পুরুষ। তিনি সৌদি আরব থেকে এসেছেন। তারা শারীরিক অবস্থা ভালো, কিন্তু ডায়াবেটিস রয়েছে। অন্যজনও পুরুষ, তার বয়স ৫৫ বছর। বিদেশ ভ্রমণ করার কোনো ইতিহাস তার নেই। তার ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপ রয়েছে। নতুন আক্রান্ত দুজনই সুস্থ আছেন। তাদের মধ্যে কোনো জটিলতা নেই। আমরা তাদের হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা করছি’, যোগ করেন তিনি।

তিনি আরও বলেন, ‘আরও ছয় জনের দেহে কেভিড-১৯ এর সংক্রমণ নেই বলে নিশ্চিত হয়েছি। এদের মধ্যে একজনের বয়স ৭০ বছর। চার জনের বয়স ৩০-৪০ এর মধ্যে। একজনের বয়স ৪০-৫০ এর মধ্যে। তাদের মধ্যে চার জন পুরুষ ও দুই জন নারী। এদের মধ্যে একজন নার্স রয়েছেন, যিনি সুস্থ হয়ে গেছেন। ১ হাজার ৬০২ জনের নমুনা পরীক্ষার পরিপ্রেক্ষিতে আমরা ইতোমধ্যে জানিয়েছে এখন পর্যন্ত পাঁচ জন মারা গেছেন।’

‘ইতোমধ্যে ঢাকা এবং ঢাকার বাইরের কিছু মৃত্যু নিয়ে জনমনে বেশ উদ্বেগের সৃস্টি হয়েছিল। যাদের ক্ষেত্রে এ নমুনা সংগ্রহ করা আমাদের পক্ষে সম্ভব হয়েছে, অর্থাৎ, তাদের সৎকার হয়ে যাওয়ার আগে আমরা তথ্য পেয়েছি, তাদের নমুনা সংগ্রহ করে আমরা পরীক্ষা করেছি। কারোর দেহেই কোভিড-১৯ এর কোনো সংক্রমণ পাওয়া যায়নি। সেজন্য আমরা আপনাদের আশস্ত করতে চাই, মৃত্যু হলেই কোভিড-১৯ ভেবে আপনারা দুশ্চিন্তাগ্রস্ত হবেন না, আতঙ্কিত হবেন না। আমরা সব রোগী যাদের মধ্যে মনে হয়, কোভিডের সংক্রমণ থাকতে পারে, আমরা তাদের প্রত্যেকের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা করে নিশ্চিত করছি রোগীর সংখ্যা’, বলেন তিনি’, বলেন তিনি।

তিনি বলেন, ‘গত ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশনে গেছেন আরও ১৩ জন। বর্তমানে আইসোলেশনে আছেন ৭৫ জন। গত ২৪ ঘণ্টার তথ্য অনুযায়ী প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে আছেন ৩৮ জন।’

‘ইতোমধ্যে নমুনা পরীক্ষা করার কেন্দ্রের সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে। আমরা যাদের মধ্যে সন্দেহ করবো যে করোনার উপস্থিতি রয়েছে, তাদের প্রত্যেকের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা করতে চাই। যাতে করে কোনো আক্রান্ত ব্যক্তি সমাজের মধ্যে রয়ে না যান, যার কাছ থেকে সংক্রমণটি ছড়িয়ে পড়তে পারে এবং তার চিকিৎসা ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে চাই। এক্ষেত্রে আপনাদের সহযোগিতা কামনা করছি’, যোগ করেন তিনি।

আইইডিসিআর পরিচালক বলেন, ‘আমরা অবশ্যই কেউ এখন ঘরের বাইরে যাবো না। অত্যন্ত প্রয়োজন না হলে সবাই ঘরের ভেতরেই থাকুন। যদি অত্যন্ত প্রয়োজন হয়, সেক্ষেত্রে মাস্ক ব্যবহার করে ঘরের বাইরে যেতে পারেন। কোভিড-১৯ আক্রান্ত যে কোনো ব্যক্তির সংস্পর্শ এড়িয়ে চলুন।’

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেমের (এমআইএস) পরিচালক ডা. মো. হাবিবুর রহমান বলেন, ‘পারসোনাল প্রোটেকটিভ ইকুইপমেন্টের (পিপিই) কোনো অভাব হবে না। আমরা প্রতিদিনই পিপিই সংগ্রহ করছি। আমাদের কাছে পর্যাপ্ত মজুদ রয়েছে। আমাদের কিট সংগ্রহের প্রক্রিয়াও অব্যাহত রয়েছে।’

Comments

The Daily Star  | English

Uncovering the silent deaths of migrant women

In the shadows of booming remittance flows and the quiet resilience of Bangladesh’s labour diaspora, a disturbing reality persists: numerous Bangladeshi female migrant workers, particularly those employed as domestic help in Gulf countries, are returning home in coffins.

16h ago