করোনা মোকাবিলায় ব্যস্ত প্রশাসন, দখল হচ্ছে সেহাকাঠী নদী
পটুয়াখালী সদর উপজেলার পটুয়াখালী-গলাচিপা নৌ-রুটের সেহাকাঠী নদীর পশ্চিম তীরে বালু ফেলে ভরাট করা হচ্ছে। কমপক্ষে ৩০ জন দখলদার নদীতীরে বাঁধ দিয়ে বালু ফেলে ভরাট করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
আর বালু ফেলার কাজে ব্যবহার হচ্ছে সরকারি ড্রেজার।
গত সোমবার বিকেলে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, পানি উন্নয়ন বোর্ডের বেড়ি বাঁধের বাইরে নদীর তীরের কমপক্ষে ৫০ একর জমিতে আরেকটি বাঁধ দেওয়া হয়েছে। ভেতরে পলিথিন বিছিয়ে দেয়া হয়েছে যাতে বালু ফেললে তা বেরিয়ে যেতে না পারে। পাশেই নদীতে সরকারি ড্রেজার। তা দিয়েই ভরাট করা হচ্ছে তীরভূমি।
স্থানীয়দের অভিযোগ, স্থানীয় প্রায় ৩০ জন দখলকারী আছে এর পেছনে।
তাদের একজন আলমগীর মৃধা (৪৫) দাবি করেন, ‘নদীর তীর হলেও এ জমি আমাদের বাপ-দাদার এবং আমাদের জমির মুখশা (সম্মুখভাগ)। এ জমির খাজনা (রাজস্ব) পরিশোধ করি নিয়মিত। জমি ভরাট করে বাড়ি-ঘর বানাতে চাই।’
নদী তীরে বালু ভরাট করা স্থানীয় মনির মৃধার দাবি তারা নিজেদের জমিই ভরাট করছেন। নদীর তীরভূমি খাস জমি, এটা ভরাট করা বেআইনি এমন কথার জবাবে তিনি বলেন, ‘আমরা নিয়মিত এ জমির খাজনা দিই। তাই এ জমির প্রকৃত মালিক আমরাই।’
এলাকার বাসিন্দা আবুল হোসেন জানান, এর আগে দক্ষিণ সেহাকাঠী গ্রাম ও ঢোলখালী গ্রামেও একইভাবে শতাধিক একর তীরভূমি দখল করেছে স্থানীয়রা।
এভাবে দখল হতে থাকলে অদূর ভবিষ্যতে নদীর অস্তিত্ব সংকটের মুখে পরবে বলে আশঙ্কা জানান আবুল হোসেন। বলেন, ‘প্রশাসনের উচিত এসব দখলদারদের রোধ করা এবং নদীর স্বাভাবিক প্রবাহ রক্ষা করা।’
জৈনকাঠী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. ফিরোজ আলম বলেন, ‘নদীর তীর দখল করা বেআইনি। বিষয়টি উপজেলা প্রশাসনের নজরে এনে এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
সরকারি ড্রেজারের চালক মো. বুলবুল আহমেদ জানান, 'খনন করা বালু ফেলার কোন জায়গা না পেয়ে আমরা নদীর তীরে বালু ফেলছি'। এতে নদীর প্রবাহে কোন সমস্যা হবে না বলেও দাবি তার।
প্রায় মাস খানেক ধরে এ ভরাট কাজ চললেও বিষয়টি প্রশাসনের নজরে আসেনি। এ ব্যাপারে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মো. মামুন উর রশিদ বলেন, ‘আমরা এ মুহূর্তে করোনাভাইরাস মোকাবেলায় সরকারের নানা কর্মসূচি বাস্তবায়নে ব্যস্ত সময় পার করছি। তাই বিষয়টি আমাদের গোচরে আসেনি। দখলদার যেই হোক, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
Comments