অসীম অর্থনৈতিক যুদ্ধে সরকার

বাংলাদেশ এখন পর্যন্ত আট দশমিক ৫৬ বিলিয়ন ডলারের প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেছে। এটি করোনাভাইরাস মহামারিতে সম্ভব্য অর্থনৈতিক ক্ষতির প্রায় তিনগুণের বেশি।
Corona BD.jpg
প্রতীকী ছবি। সংগৃহীত

বাংলাদেশ এখন পর্যন্ত আট দশমিক ৫৬ বিলিয়ন ডলারের প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেছে। এটি করোনাভাইরাস মহামারিতে সম্ভব্য অর্থনৈতিক ক্ষতির প্রায় তিনগুণের বেশি।

মার্চের শুরুর দিকে এশিয়ান উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) পূর্বাভাস দিয়েছিল, বাংলাদেশের মোট দেশীয় পণ্য (জিডিপি) করোনাভাইরাসের কারণে প্রায় এক দশমিক এক শতাংশ কমে যাবে। যার অর্থ ৩০০ বিলিয়ন ডলারেরও বড় অর্থনীতি থেকে বাদ পরে যাবে প্রায় তিন দশমিক শূন্য দুই বিলিয়ন ডলার।

পরবর্তীতে, গত ৩ এপ্রিল এডিবি জানায়, তাদের প্রাথমিক ধারণা অনুযায়ী বিশ্বব্যাপী মহামারির কারণে বাংলাদেশের জিডিপির প্রায় শূন্য দশমিক দুই থেকে শূন্য দশমিক চার শতাংশ হারাতে পারে। 

সে হিসাবে সরকারের ঘোষিত প্রণোদনা পর্যাপ্ত বলেই মনে হচ্ছে।

গত রোববার সব ব্যবসা-বাণিজ্য, শিল্প ও অর্থনৈতিক খাতের জন্য ৬৭ হাজার ৭৫০ কোটি টাকার দ্বিতীয় প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করার সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘তবে বর্তমান পরিস্থিতি দেখে ধারণা করা হচ্ছে ক্ষতির পরিমাণ আরও অনেক বেশি হতে পারে।’

রোগতত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইডিসিআর) তথ্য অনুযায়ী, আজ মঙ্গলবার পর্যন্ত বাংলাদেশে করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হয়েছেন ১৬৪ জন এবং মারা গেছেন ১৭ জন। সংক্রমণ রোধে ২৬ মার্চ থেকে সব ধরনের অফিস ও কারখানা বন্ধ ঘোষণা করে সারা দেশ লকডাউনে রাখছে সরকার। যার মেয়াদ বেড়েছে ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত।

দেশে করোনা আক্রান্তর সংখ্যা ক্রমাগত বেড়ে যাওয়ায় ধারণা করা হচ্ছে সামনে এই সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। ফলে বেড়ে যেতে পারে লকডাউনের মেয়াদও। লকডাউনের মেয়াদ বাড়লে বাড়বে অর্থনৈতিক কার্যক্রমে স্থবিরতাও।

কীভাবে মারাত্মক এই ভাইরাসটি অর্থনীতিতে প্রভাব ফেলছে তার কয়েকটি উদাহরণ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। চলতি অর্থ বছরে আমদানি ব্যয় ও রপ্তানি আয় আগের বছরগুলোর তুলনায় প্রায় পাঁচ শতাংশ কমেছে। তিনি জানান, এই কমার প্রভাব অর্থবছরের শেষ পর্যন্ত চলতে পারে।

জাতীয় রপ্তানি আয়ের ৮০ শতাংশেরও বেশি আসে গার্মেন্টস খাত থেকে। আগামী কয়েকমাস এই খাত মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। কারণ বিজেএমইএর তথ্য অনুযায়ী করোনার প্রভাবে পশ্চিমা বাজারে ধসের কারণে চাহিদা কমায় ছোট ব্যবসায়ীরা তাদের প্রায় তিন দশমিক শূ্ন্য দুই বিলিয়ন ডলারের অর্ডার বাতিল করেছে।

চলমান মেগা প্রকল্প নির্মাণ, বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপন ও একক অঙ্কের সুদের হার বাস্তবায়নে দেরি হওয়ার কারণে ব্যক্তিগত বিনিয়োগ প্রত্যাশিত পর্যায়ে পৌঁছাতে নাও পারে।

প্রধানমন্ত্রী তার ভাষণে উল্লেখ করেন, হোটেল, রেস্তোরাঁ, পরিবহন ও বিমান চলাচলসহ বিভিন্ন সেবা খাতে বিরূপ প্রভাব পড়বে।

আন্তর্জাতিক চাহিদা কমে যাওয়ায় বিশ্বব্যাপী জ্বালানি তেলের দাম ৫০ শতাংশেরও বেশি কমেছে। এর ফলে, রেমিট্যান্স প্রবাহ ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

বাংলাদেশের অর্থনীতির বড় শক্তি রেমিট্যান্স করোনাভাইরাস মহামারির কারণে মার্চ মাসে গত ১৫ মাসের তুলনায় সর্বনিম্নে এসে ঠেকেছে।

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘আমি আশা করি, আমাদের অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়াবে এবং আগের ও বর্তমান প্রণোদনা প্যাকেজ দ্রুত বাস্তবায়ন করা গেলে আমরা কাঙ্ক্ষিত অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির কাছে পৌঁছতে পারব।

Comments

The Daily Star  | English

How Islami Bank was taken over ‘at gunpoint’

Islami Bank, the largest private bank by deposits in 2017, was a lucrative target for Sheikh Hasina’s cronies when an influential business group with her blessing occupied it by force – a “perfect robbery” in Bangladesh’s banking history.

8h ago