অচাষকৃত শাকসবজি জোটাচ্ছে আহার
করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে সরকারি নির্দেশনায় দোকানসহ সব ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকায় বিপাকে পড়েছে দিনমজুর, রিকশাচালকসহ নিম্ন আয়ের মানুষেরা।
সরকারিভাবে, চাল, ডাল, আলু, তেলসহ খাদ্যসহায়তা দেওয়া হলেও তা সীমিত। চলমান এই পরিস্থিতিতে তাদের কাজে লাগছে অচাষকৃত শাকসবজি।
মানিকগঞ্জের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে প্রান্তিক মানুষদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বাড়ির আনাচে-কানাচে, রাস্তার পাশে, পুকুর ধারে, পতিত জায়গার অচাষকৃত শাকসবজি, যেমন- নানা ধরনের কচু, তেলাকুচা পাতা, কাটা নইটা, কলমি, হেলেঞ্চা, বউটুনিসহ বিভিন্ন রকমের শাক, আলু, শাপলা-শালুক রান্না করে খাচ্ছেন তারা।
তারা বলেন, এই দুঃসময়ে এসব শাক সবজি তাদের আহার জোটাচ্ছে।
হরিরামপুর উপজেলার ভ্যানচালক মহির উদ্দিন বলেন, তিনি স্থানীয় একটি ডেকোরেটরের মালামাল আনা নেওয়া করতেন। প্রতিদিন ৪শ থেকে ৫শ টাকা আয় হতো। এখন আর বিয়ে বা অন্য কোনো অনুষ্ঠান হয় না। এ কারণে তার ভ্যান চালানো বন্ধ। স্ত্রী ও দুই মেয়ে নিয়ে খুব কষ্টে দিন পার করছেন। ১০ টাকা কেজি চাল সংগ্রহ আর অচাষকৃত শাক সবজি কুড়িয়ে রান্না করে খাচ্ছেন।
পার্শ্ববর্তী দিয়াপাড় গ্রামের ৬০ বছর বয়সী আম্বিয়া বেগম বলেন, তার ছেলে রং-মিস্ত্রির কাজ করে সংসার চালাত। কাজ না থাকায় খুব কষ্টে দিন যাচ্ছে তাদের। এখনও কোনো সাহায্য পাননি তারা। বাড়ির আশে পাশের শাক সবজি রান্না করে খাচ্ছেন।
মানিকগঞ্জ জেলা প্রশাসক এস এম ফেরদৌস দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, সরকারিভাবে মানিকগঞ্জে এ পর্যন্ত ১৮ হাজার ২২৮ জনকে ১০ কেজি করে চাল এবং ১৩ হাজার ৭৮৯ জনকে নগদ ২৫০ টাকা করে দেওয়া হয়েছে। এই সহায়তা অব্যাহত থাকবে বলে জানান তিনি।
এছাড়া বিভিন্ন ব্যক্তি ও সংগঠনের উদ্যোগেও ত্রাণ বিতরণ করা হচ্ছে উল্লেখ করে তিনি আরো বলেন, সরকারের একার পক্ষে এই দুর্যোগ মোকাবেলা সম্ভব নয়। সবাই মিলে, প্রান্তিক মানুষের পাশে দাঁড়াতে হবে।
Comments