অস্ট্রেলিয়ায় করোনাভাইরাস ছড়িয়ে দেওয়া সেই জাহাজে গোয়েন্দাদের অভিযান

‘রাবি প্রিন্সেস’ জাহাজে অভিযান চালিয়েছে গোয়েন্দারা। ছবি: সংগৃহীত

নিউজিল্যান্ড থেকে আসা যাত্রীবাহী জাহাজ ‘রাবি প্রিন্সেস’ অস্ট্রেলিয়ায় করোনাভাইরাস ছড়িয়ে দিয়েছে বলে গোয়েন্দা সংস্থার প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে। জাহাজের ক্রুদের জিজ্ঞাসাবাদ করতে ও প্রয়োজনীয় প্রমাণ সংগ্রহ করতে ব্যক্তিগত সুরক্ষা সরঞ্জাম পরে গোয়েন্দারা ইতোমধ্যে রাবি প্রিন্সেস জাহাজে অভিযান চালিয়েছেন।

গত ২০ মার্চ ওই জাহাজটি অস্ট্রেলিয়ার বাণিজ্য নগরী সিডনির আন্তর্জাতিক টার্মিনালে অবতরণ করে। ওই জাহাজটি অবতরণের আগে অস্ট্রেলিয়ায় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ছিল মাত্র ৬০০ জন। তিন সপ্তাহের ব্যবধানে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৬ হাজার ২৮৩ জনে। দ্রুত গতিতে ভাইরাসটি ছড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে ওই জাহাজ কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে।

জাহাজে কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগী আছে— এই খবর জানার পর জাহাজটি অবতরণের অনুমতি না দিতে সরকারের কাছে অনুরোধ জানায় অস্ট্রেলিয়ানরা। তবুও, জাহাজটি অবতরণ করে এবং ২ হাজার ৬৪৭ জন যাত্রী সিডনিতে প্রবেশ করেন। এরপর তারা বিভিন্ন রাজ্যে ছড়িয়ে পড়েন। ওই জাহাজের যাত্রীরা অবতণের পর থেকেই দ্রুত গতিতে অস্ট্রেলিয়ায় বাড়তে থাকে কোভিড-১৯’এ আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা। কেবলমাত্র ওই জাহাজ থেকে নামা যাত্রীদের মধ্যে থেকেই তিন সপ্তাহে মৃত্যুবরণ করেছেন ১২ জন।

জাহাজে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী থাকার পরও যাত্রীদের অস্ট্রেলিয়ায় প্রবেশের অনুমতি কে দিয়েছেন এবং কী কারণে অনুমতি দেওয়া হয়েছিল, তা তদন্তের জন্য দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে সর্বোচ্চ গোয়েন্দা সংস্থাকে। গোয়েন্দা পুলিশের প্রধান ইন্সপেক্টর জেসন ডিকিনসন এই তদন্তের নেতৃত্ব দিচ্ছেন।

অস্ট্রেলিয়ার অ্যাটর্নি জেনারেল ক্রিশ্চিয়ান পোর্টার পুলিশের তদন্তকে সমর্থন জানিয়েছেন। তিনি এবিসি রেডিওকে বলেছেন, ‘এতে নাগরিক জালিয়াতিসহ পুরোপুরি অপরাধ হয়েছে। অবশ্যই এটি তদন্তের বিষয়। এই অপরাধ প্রমাণিত হলে তা হবে খুনের সমতুল্য অপরাধ।’

নিউ সাউথ ওয়েলসের পুলিশ কমিশনার মিক ফুলার গত সপ্তাহে বলেছিলেন, ‘আমাদের কাছে সম্ভাব্য সব তথ্য-উপাত্ত আসার পর সেগুলো বিশ্লেষণের পরেই বলা যাবে যে জাহাজটি অবতরণের অনুমতি দেওয়ার মাধ্যমে আমাদের জাতীয় বায়োসিকিউরিটি আইন ও রাষ্ট্রীয় আইনগুলো ভঙ্গ করা হয়েছে কি না।’ জাহাজটি এখন আছে সিডনির অদূরে পোর্ট কেম্বলায়।

তদন্ত সংস্থা বলেছে, তদন্তে রুবি প্রিন্সেসের ক্যাপ্টেন, চিকিৎসক, ক্রু ও যাত্রী ছাড়াও নিউ সাউথ ওয়েলসের সংশ্লিষ্ট সরকারি অফিস ও এজেন্সিগুলোর কর্মীদেরও জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।

অস্ট্রেলিয়ার বিরোধীদল লেবার বলেছে, এই কেলেঙ্কারি নিয়ে নিউ সাউথ ওয়েলস রাজ্য প্রধানের পদত্যাগ করা উচিত।

উল্লেখ্য, জনস হপকিনস ইউনিভার্সিটির তথ্য অনুযায়ী, অস্ট্রেলিয়ায় এখন পর্যন্ত করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ৬ হাজার ২৮৩ জনকে শনাক্ত করা হয়েছে এবং মারা গেছেন ৫৬ জন।

Comments

The Daily Star  | English
Bangladesh garment exports face US tariff hike

Can Bangladesh retain its foothold in US market?

As Bangladesh races against a July 9 deadline to secure a lower tariff regime with the United States, the stakes could not be higher.

15h ago