লোকবল সংকটে হিমশিম খাচ্ছে বিআইটিআইডি
চট্টগ্রামে ফৌজদারহাটে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল অ্যান্ড ইনফেকশাস ডিজিজেজ (বিআইটিআইডি) হাসপাতালের পরীক্ষাগারে কোভিড-১৯ রোগ শনাক্তকরণ পরীক্ষার চাপ বাড়ছে। আর লোকবল সংকটে ক্রমবর্ধমান চাহিদা মেটাতে হিমশিম খাচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি।
কোভিড-১৯ পরীক্ষার জন্য চট্টগ্রাম বিভাগে একমাত্র বিআইটিআইডিকে অনুমোদন দিয়েছে সরকার। গত ২৫ মার্চ থেকে আটটি জেলার নমুনা পরীক্ষা করছে বিআইটিআইডি।
সূত্র জানায়, বর্তমানে বিআইটিআইডির পরীক্ষাগার পরিচালনার জন্য মাত্র একজন ভাইরোলজিস্ট ও আট জন টেকনিশিয়ান আছেন। স্বাভাবিক অবস্থায় বিদ্যমান যন্ত্র ও লোকবলে দিনে প্রায় ৪০টি নমুনা পরীক্ষা করা সম্ভব। সেখানে এখন প্রতিদিন প্রায় ১ শ নমুনা পরীক্ষা করতে হচ্ছে। গত বৃহস্পতিবার পরীক্ষার জন্য ১৪০টি নমুনা এসেছিল, তার মধ্যে ১০৪টি পরীক্ষা করা সম্ভব হয়। শুক্রবার মোট ৯৪টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়।
বিআইটিআইডি পরীক্ষাগারের ইনচার্জ প্রফেসর ড. শাকিল আহমেদ বলেন, ‘আমাকে পরীক্ষাগারে প্রতিদিন ১৪ ঘণ্টা কাজ করতে হয়। আমি সকাল ৮টায় আসি, রাত ১০টায় হাসপাতাল থেকে বের হই।’
নমুনা পরীক্ষার সক্ষমতার বিষয়ে একমত পোষণ করে তিনি বলেন, ‘আমাদের মাত্র আট জন টেকনিশিয়ান আছেন। তারা শুধু পরীক্ষাগারেই কাজ করেন না, নমুনা সংগ্রহের জন্যও যেতে হয়। রিপোর্ট টাইপ করার জন্য আমাদের কোনো অফিস সহকারী নেই। তিন শিফটে কাজ করেও আমরা সময়মতো রোগীদের কাছে রিপোর্ট পৌঁছে দিতে পারছি না।’
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘পরীক্ষাগারের সক্ষমতা বাড়াতে হলে কমপক্ষে দুজন মাইক্রোবায়োলজিস্ট, চার জন টেকনিশিয়ান ও দুজন অফিস সহকারী নিয়োগ দেওয়া দরকার। সেই সঙ্গে চট্টগ্রামের আরও হাসপাতাল এবং পরীক্ষাগারে কোভিড-১৯ পরীক্ষা চালু করা দরকার। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি অ্যান্ড অ্যানিম্যাল সায়েন্সেস ইউনিভার্সিটি, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়োটেকনোলজি এবং জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ ও মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের পরীক্ষাগারগুলোকে কাজে লাগানো যেতে পারে।’
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বিআইটিআইডির পরিচালক অধ্যাপক ডা. এম এ হাসান বলেন, ‘আমরা পরীক্ষাগারের সক্ষমতা বাড়াতে কাজ করছি, যেন ক্রমবর্ধমান চাহিদা পূরণ করা যেতে পারে। ইতোমধ্যে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ থেকে একটি পিসিআর মেশিন নিয়ে আসা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের চার জন রিসার্চ স্টুডেন্ট আমাদের সঙ্গে কাজ করবেন। আমি আজ সকালে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর চট্টগ্রাম বিভাগের পরিচালকের সঙ্গে কথা বলেছি। তিনি আমাদের কমপক্ষে দুজন মাইক্রোবায়োলজিস্ট সরবরাহ করবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন।’
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের চট্টগ্রাম বিভাগীয় পরিচালক ডা. হাসান শাহরিয়ার কবির দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ক্রমবর্ধমান চাহিদা সামলানোর জন্য বিআইটিআইডি ল্যাবকে আরও শক্তিশালী করা হবে। আমরা ইতোমধ্যে তাদের চাহিদা অনুযায়ী কিছু লজিস্টিক সুবিধা দিয়েছি। আমরা বিআইটিআইডির ওপর থেকে অতিরিক্ত চাপ কমাতে কাজ করছি। চট্টগ্রামে আরও কিছু পরীক্ষাগারকে শিগগির কোভিড-১৯ পরীক্ষায় যুক্ত করা হবে।’
Comments