মোবাইল ফোনের নেটওয়ার্ক পেতে গাছে চড়ছেন আইসিসি আম্পায়ার!

ভারত-দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজ বাতিল হয়ে যাওয়ায় দুই ছেলেকে নিয়ে গিয়েছিলেন পিতৃপুরুষের বাড়ি। ভারতের উত্তরপ্রদেশের সেই গ্রামে গিয়ে লকডাউনের কারণে আটকে যান আইসিসি আম্পায়ার অনিল চৌধুরী। এরপর থেকে অবর্ণনীয় যোগাযোগ বিচ্ছিন্নতায় আছেন তিনি।
স্বাভাবিক গতির ইন্টারনেট দূরে থাক উত্তরপ্রদেশের শামলি জেলার ডানগ্রল গ্রামে নেই মোবাইলের নেটওয়ার্কও। কথা বলতে হলে চড়তে হয় গাছে, কিংবা যেতে হয় উঁচু কোন ভবনের ছাদে। প্রেস ট্রান্স অব ইন্ডিয়ার সঙ্গে গাছে চড়েই কথা বলে নিজের দুঃস্বপ্নের মতো অভিজ্ঞতা জানিয়েছেন তিনি।
৫৫ বছর বয়েসি অনিল আইসিসির আন্তর্জাতিক প্যানেলভুক্ত আম্পায়ার। নিয়মিতই ম্যাচ পরিচালনার দায়িত্ব পড়ে তার। মার্চে ভারত ও দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজেও আম্পায়ার ছিলেন তিনি। কিন্তু সিরিজ বাতিল হওয়ায় মেলে ফাঁকা সময়। তা কাজে লাগাতে এসে উলটো ফ্যাসাদে পড়েছেন তিনি, ‘গত ১৬ মার্চ থেকে আমি আমার দুই ছেলেকে নিয়ে এখানে। আমি মাঝে মাঝে আসি এখানে। এবার পরিকল্পনা ছিল সপ্তাহখানেক থেকে ফিরব। কিন্তু লকডাউনে আটকে গেলাম। আমার মা ও স্ত্রী দিল্লিতে আছেন।’
‘কিন্তু বড় সমস্যা হলো এখানকার নেটওয়ার্ক। আমি কারো সঙ্গে কথা বলতে পারছি না, ইন্টারনেটও ব্যবহার করা যাচ্ছে না। তা করতে গেলে গ্রামের বাইরে যেতে হয়, গাছে চড়তে হয় অথবা কোন ছাদ খুঁজে সেখানে উঠতে হয়। সব সময়ই নেটওয়ার্ক এরকমই বাজে অবস্থায় থাকে।’
নেটওয়ার্ক বিচ্ছিন্ন হওয়ায় কেবল দৈনন্দিন যোগাযোগই না, কাজেরও ক্ষতি হচ্ছে তার। আম্পায়ারদের জন্য আইসিসির অনলাইন প্রোগ্রামে অংশ নিতে দরকার ইন্টারনেট। জানালেন পড়াশোনা ক্ষতি হচ্ছে ছেলেদেরও, ‘আমার এক ছেলে হিন্দু কলেজে পড়ে, ‘আমার এক ছেলে হিন্দু কলেজে পড়ে, সে অনলাইনে তার ক্লাসগুলোতে অংশ নিতে পারছে না।’
বিস্ময়কর হলো, এত বেহাল নেটওয়ার্কের দশার এই গ্রাম ভারতের রাজধানী শহর দিল্লি থেকে ১০০ কিলোমিটারও দূরে না, ‘এই নেটওয়ার্ক সমস্যা গত এক বছর থেকেই দেখছি। অথচ এই গ্রাম দিল্লি থেকে কেবল ৮৫ কিলোমিটার দূরে।’
গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান এই সমস্যা নিয়ে জেলার কর্তৃপক্ষের সঙ্গে এরমধ্যে যোগাযোগও করেছে, ‘আমরা ১০ দিন আগে চিঠি দিয়েছি। কিন্তু কোন উত্তর আসেনি।’
এই অবস্থাতেও অবশ্য স্থানীয় মানুষকে সতর্ক করার কাজ করছেন অনিল, ‘সবাইকে বলছি ভিড় না করার জন্য। কার্ড খেলা আপাতত বন্ধ রাখার জন্য। এবং সবাই যাতে সাবান দিয়ে ঘন ঘন হাত ধোয়। একই সঙ্গে মাস্ক দিচ্ছি। শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখতে বলছি।’
Comments