নারায়ণগঞ্জে আতঙ্কে আছেন ক্রিকেটার রনি
![Rony Talukder Rony Talukder](https://tds-images-bn.thedailystar.net/sites/default/files/styles/big_202/public/feature/images/vfguyrpvv977wbqd_rony.jpg?itok=6rjNmTHt×tamp=1586698368)
কেমন আছেন? জিজ্ঞেস করতেই কণ্ঠে প্রচণ্ড উদ্বেগ। এই সময়ে স্বস্তিতে থাকার অবস্থা কারোরই নেই। কিন্তু ক্রিকেটার রনি তালুকদারের উৎকণ্ঠা যেন একটু বেশি। তার কারণও অবশ্য অনুমেয়। তার যেখানে বাসা সেই নারায়ণগঞ্জ যে করোনাভাইরাসের জন্য নতুন এক আতঙ্কের নাম।
রোববার পর্যন্ত সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) জানায় দেশে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৬২১ জন। এরমধ্যে ১০৭ জনই নারায়ণগঞ্জের। নারায়ণগঞ্জ থেকে অন্য জেলায় গিয়ে আক্রান্ত হয়েছে এমনও আছেন অনেকে। এখন পর্যন্ত নারায়ণগঞ্জে মারা গেছেন ৯ জন।
প্রতিদিনই আক্রান্তের নতুন খবর আসছে। অবরুদ্ধ নারায়ণগঞ্জে উড়ো খবরেরও যেন শেষ নেই। বাংলাদেশের হয়ে একটি টি-টোয়েন্টি খেলা রনি ঘরোয়া ক্রিকেটে বেশ পরিচিত নাম, নিয়মিত পারফর্মার। রোববার মুঠোফোনে জানালেন, প্রতিটি দিন আতঙ্ক মাথায় নিয়ে কাটছে তাদের, ‘অবস্থা তো খারাপ। সবাই আতঙ্কে আছে। প্রতিদিন রোগীর সংখ্যাও বাড়ছে। আমার বাড়ির এক কিলোমিটারের মধ্যেই আছে একাধিক আক্রান্ত। ভয় আরেকটা জায়গাতেও আছে। কিছু লোকের মৃত্যুর খবর পাচ্ছি করোনা উপসর্গ নিয়ে, কিন্তু সেগুলো চিহ্নিত হচ্ছে না বা পরিস্কার হতে পারছি না আসলেই কি ছিল।’
‘আমরা তো বাসা থেকে বের হই না। নানান রকম কথা শুনতে পাই। অনেক সময় সত্য মিথ্যা যাচাই করার উপায়ও নাই। একারণে ভীতি বাড়ে।’
শিল্পনগরি হওয়ায় দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের মানুষের ভিড় নারায়ণগঞ্জে। এদের অনেকেই নিম্ন আয়ের। করোনাভাইরাস বাংলাদেশে ছড়িয়ে যাওয়ার পর সবাইকেই সতর্ক করতে বলা হয়েছিল। কিন্তু ঘনবসতির নারায়ণগঞ্জে সেই কাজটাই হয়নি ঠিকঠাক। সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার যে আহবান করা হয়েছিল তা আমলে নেয়নি বেশিরভাগ মানুষ, রনি মনে করেন এর ফলই দেখছে তাদের শহর, ‘মানুষ সতর্ক ছিল না ভাই। নিম্ন আয়ের মানুষ বেশি। তারা নানান ছুতোয় বাসা থেকে বেরুচ্ছিল। তারা মুভ করছিল, ভিড় হচ্ছিল। এখন লকডাউন করে দিয়েছে তারপরও দেখা যাচ্ছে লোকজন রাস্তায় হাঁটছে। প্রতিদিন সতর্ক করা হয়েছে। কেউ গায়ে মাখেনি।’
ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ বন্ধ হওয়ার পর থেকে নারায়ণগঞ্জেই আছেন রনি। লকডাউনের আগ পর্যন্ত বন্ধুদের নিয়ে দিনরাত ত্রাণ বিতরণে ঘুরে বেড়িয়েছেন তিনি। এখন আর বাইরে গিয়ে ত্রাণ দেওয়ারও অবস্থা নেই। তবে খবর পাচ্ছেন, করোনার সঙ্গে নিম্ন আয়ের মানুষদের একটা খাদ্য সংকটের বিপদও আসছে, ‘আমাদের সংগঠন ফ্রেন্ডস ডটকম ওটা থেকে ত্রাণ দিয়েছি। এছাড়া আমাদের বাড়িতে একটা সংগঠন আছে আমার বাবার (মনোরঞ্জন তালুকদার) নামে যেটা আমার ছোটভাই চালায়। ওখান থেকেও দিয়েছি। কিন্তু দেখছি সামনে আরও বিপদ আসতে পারে। আমরা এটা চালু রাখব। আমরা বন্ধুরা মিলে কথা বলেছি, সামনে রোজা আসতেছে। কি করা যায়, ভাবছি।’
ঘরবন্দি সময়ে ছোটভাই আরেক ক্রিকেটার জনি তালুকদারকে নিয়ে ফিটনেস ঠিক রাখার কাজটা চালু আছে তার। বিসিবির ট্রেনারদের দেওয়া পরামর্শ মেনে চলার চেষ্টা করছেন। কিন্তু আতঙ্কের আবহে কোন কাজই ঠিকমতো হয়ে উঠছে না। আবার কবে সব স্বাভাবিক হবে, ফিরতে পারবেন মাঠে তা নিয়ে চিন্তা বাড়ছে ক্রমশ, ‘সামনে কি আছে একমাত্র উপরওয়ালা জানেন। অনিশ্চয়তা বাড়ছে। আমরা যদি এখনো সতর্ক না হই মহাবিপদ হতে পারে।’
Comments