মানবিক সহায়তায় ‘ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী’র পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান

করোনাভাইরাস মোকাবিলায় সারাদেশে যে লকডাউন পরিস্থিতি চলছে তাতে মানবিক সহায়তায় দেশের প্রান্তিক ‘ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী’র পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরাম, জাতীয় আদিবাসী পরিষদ ও কাপেং ফাউন্ডেশন।
গত ১২ এপ্রিল এক বিবৃতিতে এ আহ্বান জানানো হয়।
বিবৃতিতে বলা হয়, দেশে ৪০ লাখের বেশি ‘ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী’র মানুষ রয়েছে। যাদের বেশিরভাগই দরিদ্র ও নিম্ন আয়ের।
পাহাড় ও সমতলের এসব প্রান্তিক মানুষের অনেকেই সরকারি-বেসরকারি ত্রাণ সহায়তার বাইরে থেকে যাচ্ছে বলে উদ্বেগ জানানো হয় বিবৃতিতে।
এতে বলা হয়, এরই মধ্যে নালিতাবাড়ী, ধোবাউড়া, দুর্গাপুর, কলমাকান্দা, মধ্যনগর ও তাহিরপুর উপজেলার বেশকিছু হাজং ও বানাই গ্রামের শতাধিক পরিবারে খাদ্য সংকট দেখা দিয়েছে। লকডাউনের কারণে তাদের উপার্জন বন্ধ। কোনো কোনো পরিবার একবেলা খাবার পাচ্ছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, রাজশাহী ও রংপুরের ১৩ জেলায় সাঁওতাল, উড়াও, মুন্ডা, মাহাতো, কোল, ভিল, তোলি, কোচসহ ৩৮টির বেশি জাতিসত্ত্বার ১৫ লাখ মানুষের বাস। জমি জালিয়াতির কারণে তাদের ৯০ শতাংশই ভূমিহীন। তাদের জীবন চলে দিনমজুরির টাকায়। মহামারিতে লকডাউনে এদের বেশিরভাগই এখন কাজহীন। এরই মধ্যে উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের এসব পরিবারে খাদ্য সংকট দেখা দিয়েছে। চড়া সুদে মহাজনের কাছ থেকে দাদন নিতে বাধ্য হচ্ছে তারা। এছাড়া গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জের প্রায় ১২০০ সাঁওতাল পরিবার অভিযোগ করেছে এখনও তারা কোনো ত্রাণ পাননি।
বিবৃতিতে বলা হয়, সিলেটের অধিকাংশ চা শ্রমিক খাদ্য সংকট ও স্বাস্থ্যঝুঁকিতে আছে। এছাড়াও শ্রীমঙ্গলের ৩৫টি গারো পরিবার কঠিন অবস্থার মধ্যে দিন পার করছে।
পার্বত্য চট্টগ্রামে দরিদ্র ও প্রান্তিক জুম চাষীদের অবস্থা খুবই নাজুক জানিয়ে বিবৃতেতে বলা হয়, এই পরিস্থিতি তারা সামাল দিতে পারছে না। করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবের পাশাপাশি হামের নতুন প্রাদুর্ভাব তিন পার্বত্য জেলাকে বিপর্যস্ত করে রেখেছে।
এ অবস্থায় দেশের প্রান্তিক ও দরিদ্র এসব জনগোষ্ঠীর ঘরে সরকারি ত্রাণ সহায়তা অনতিবিলম্বে পৌঁছানোর আহ্বান জানানো হয়েছে বিবৃতিতে। সেইসঙ্গে অন্যান্য দাতা ও উন্নয়নন সংস্থা, বেসরকারি ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনকেও এগিয়ে আসার অনুরোধ করা হয়েছে।
Comments