করোনায় মৃতদের দাফনে জমি দিলেন পুলিশ কর্মকর্তা

করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে কেউ মারা গেলে তার মরদেহ দাফনের জন্য জমি দিলেন এক পুলিশ কর্মকর্তা।
দাফনের জন্য নির্ধারিত জায়গা। (ইনসেটে জমি দেওয়া পুলিশ কর্মকর্তা)

করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে কেউ মারা গেলে তার মরদেহ দাফনের জন্য জমি দিলেন এক পুলিশ কর্মকর্তা।

পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার হিসেবে কর্মরত ওই পুলিশ কর্মকর্তা মো. এনায়েত করিম রাসেলের বাড়ি মানিকগঞ্জ শহরের বেউথা এলাকায়। পারিবারিক ও বেওয়ারিশ লাশ দাফনের জন্য বছরখানেক আগে তিনি জেলা শহরের নওখন্ডা মৌজায় ১০ শতাংশ জমি কিনেছিলেন। বর্তমানে করোনা পরিস্থিতির কারণে তিনি এই জায়গা ব্যবহার করার ঘোষণা দিয়েছেন।

দেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছে। করোনার উপসর্গ নিয়ে কেউ মারা গেলে তার দাফনেও বাধা দেওয়া হচ্ছে। দেশের এমন বাস্তবতায় এগিয়ে আসলেন পুলিশ কর্মকর্তা এনায়েত করিম রাসেল।

সম্প্রতি ব্যক্তিগত ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে তিনি এ বিষয়ে একটি পোস্ট করেন। সেখানে তিনি জানান, মানিকগঞ্জের ব্যক্তি যারা অন্যত্র বসবাস করেন অথবা বাংলাদেশের যে কেউ (আল্লাহ না করুক) করোনা উপসর্গ নিয়ে মারা গেলে বিনা সংকোচে নিয়ে আসুন। গংগাধরপট্টি চকে উত্তর-পূর্ব কোণে (নওখন্ডা), আমাদের কবরস্থানে তাকে দাফন করা যাবে। আশপাশে কোনো জনবসতিও নেই। প্রশাসনের অনুমতি নিয়ে এখানে কবর দেওয়া সবার জন্য উন্মুক্ত। 

তিনি আরও জানান, আরও ২২ শতাংশ জমি কেনার প্রক্রিয়া চলছে। প্রয়োজন দেখা দিলে সেখানেও মরদেহ দাফনের ব্যবস্থা করা হবে।

পুলিশ কর্মকর্তা জানান, ইতোমধ্যে মানিকগঞ্জের জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, পৌর মেয়রসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের বিষয়টি জানানো হয়েছে। জেলা প্রশাসক অথবা মেয়রের কাছ থেকে অনুমতি নিয়ে আসলেই যেকোনো ব্যক্তিকে সেখানে সমাহিত করা যাবে।

যোগাযোগের জন্য তিনি নিজের মোবাইল নম্বর (০১৭৩০৩৩৬২২৩) এবং তার তিন বন্ধু— ডিএফএম লোটাস (০১৭৭৭৩০৫০১৬), শুভ হক (০১৭১২২৯২৯২২) ও মোস্তফার (০১৭১২৫৫৭০৮৬) মোবাইল নম্বর দিয়েছেন। এ কাজে তারা সর্বাত্মক সহযোগিতা করবেন বলে জানান এনায়েত করিম রাসেল।

তার এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে মানিকগঞ্জের পুলিশ সুপার রিফাত রহমান শামীম বলেন, ‘এটি একটি ব্যক্তিগত উদ্যোগ, প্রশংসনীয় উদ্যোগ। যেখানে করোনার উপসর্গ নিয়ে মানুষ মারা গেলে নানা ধরনের প্রতিকূল অবস্থায় পড়তে হচ্ছে, সেখানে এমন উদ্যোগ অবশ্যই মানবিকতার বড় উদাহরণ। তার এই কাজে উদ্বুদ্ধ হয়ে দেশের অন্য এলাকার মানুষও এই মানবিক কাজে এগিয়ে আসবেন।’

জেলা প্রশাসক এস এম ফেরদৌস বলেন, ‘এটি একটি প্রশংসনীয় উদ্যোগ। কোনো ব্যক্তির দাফন করার ক্ষেত্রে অনুমতি দেওয়াসহ সব ধরনের সহযোগিতা করা হবে।’

ইতোমধ্যেই ভূমি অফিসকে এ ব্যাপারে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে যেকোনো ভালো কাজে সর্বাত্মক সহযোগিতা দেওয়া হবে।’

Comments

The Daily Star  | English

Mob beating at DU: Six students confess involvement

Six students of Dhaka University, who were arrested in connection with killing of 35-year-old Tofazzal Hossain inside their hall on Wednesday, confessed to their involvement in the crime before a magistrate

4h ago