গ্রামীণ টেলিকম ট্রাস্টের অর্থায়নে ডিজিটাল হেলথের বিনা মূল্যে ‘করোনা বিমা’ চালু

কেউ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হলে তার খরচ বহন করতে বিমা কর্মসূচি চালু করেছে ডিজিটাল হেলথ (ডিএইচ)। ‘করোনা বিমা’ নামের এই কর্মসূচির স্পন্সর গ্রামীণ টেলিকম ট্রাস্ট। অনলাইনে নিবন্ধন করা এক লাখ মানুষকে বিনা খরচে এই বিমা সুবিধা দেওয়া হবে।
গ্রামীণ টেলিকম ট্রাস্ট থেকে দেওয়া এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তি থেকে জানা যায়, গত ১৪ এপ্রিল থেকে ‘করোনা বিমা’ কর্মসূচির কার্যক্রম শুরু হয়েছে। অনলাইনে এক লাখ নিবন্ধনকারীকে ‘আগে আসলে আগে পাবেন ভিত্তিতে’ বিনা খরচে এই বিমা সুবিধা দেওয়া হবে। এ বিমার মাধ্যমে নিবন্ধনকারীদের মধ্যে কারো করোনা পরীক্ষার ফল পজিটিভ আসলে হোম আইসোলেশনে যাওয়ার জন্য তাকে দুই হাজার টাকা এবং কেউ হাসপাতালে ভর্তি হলে তাকে পাঁচ হাজার টাকা দেওয়া হবে। এ ছাড়া, করোনা আক্রান্ত রোগীকে জীবন বিমা কভারেজ হিসেবে (করোনা আক্রান্ত হয়ে কেউ মারা গেলে তার নমিনিকে) নগদ ২০ হাজার টাকা দেওয়া হবে। বিমা কভারেজের মেয়াদ নিবন্ধনের দিন থেকে পরবর্তী দুইমাস।
আগামী ১১ জুন পর্যন্ত এই বিমা কর্মসূচিটি চালু থাকবে। তবে, ১১ জুনের আগেই যদি এক লাখ মানুষ নিবন্ধন করে ফেলে, তাহলে আর কারো নিবন্ধন নেওয়া হবে না। https://care.dh.health/insurance ওয়েবসাইটে গিয়ে করোনা বিমা নিবন্ধন করা যাবে। এই কর্মসূচিতে যারা নিবন্ধন করবেন, তাদেরকে করোনাভাইরাস মোকাবিলার জন্য সময়ে সময়ে বিভিন্ন স্বাস্থ্য বিষয়ক ভিডিও ও পরামর্শ পাঠানো হবে।
উল্লেখ্য, গত ২৮ মার্চ থেকে ডিজিটাল হেলথ একটি অনলাইন ভিত্তিক করোনাভাইরাস সিম্পটম চেকার চালু করেছে (https://coronachecker.dh.health/)। যে কেউ বিনা খরচে এটির সুবিধা নিতে পারবে। চালুর প্রথম পাঁচ দিনেই এক লাখ ৩১ হাজার ৫৯০ জন ডিএইচ করোনা সিম্পটম চেকারের প্রশ্নপত্র সম্পূর্ণ করেছেন। যেখানে প্রতিটি পরীক্ষায় সময় লেগেছে গড়ে চার মিনিটের মতো। চেকারে যাদের ঝুঁকি উচ্চ মাত্রার বলে শনাক্ত হয়েছে, তাদের বাংলাদেশ সরকারের কোভিড হেল্পলাইন ৩৩৩ ও ১৬২৬৩ নম্বরে যোগাযোগ করতে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
করোনা সিম্পটম চেকার চালুর প্রথম পাঁচ দিনে যারা চেকারে পরীক্ষা করিয়েছেন, তাদের মধ্যে ৭০ শতাংশই ঢাকা, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম, যশোর ও কক্সবাজারের অধিবাসী। পরীক্ষাকারীদের মধ্যে সবচেয়ে সাধারণ যে উপসর্গগুলো পরিলক্ষিত হয়েছে, তা হচ্ছে— জ্বর (৫৬ শতাংশ) ও গলা ব্যথা (৪৪ শতাংশ)।
যারা ডিএইচ করোনা চেকারের মাধ্যমে পরীক্ষা সম্পন্ন করছেন, তাদের সবাইকে হাত ধোয়ার গুরুত্ব ও লক্ষণগুলো জোরালো মনে হলে আইসোলেশনে যাওয়াসহ স্বাস্থ্য সুরক্ষা ও সচেতনতা বিষয়ক বিভিন্ন পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। আমরা প্রত্যেককে ডিএইচ করোনা চেকারে গিয়ে নিজেকে পরীক্ষা করতে অনুরোধ করছি। পরীক্ষাটি খুবই অল্প সময়ের ও এতে কোনো ধরনের খরচ নেই।
ডিজিটাল হেলথের প্রধান নির্বাহী জনাব সাজিদ রহমান বলেন, ‘এটা অনেকটা স্বস্তিদায়ক যে, রোগীদের অধিকাংশই করোনাভাইরাসে আক্রান্ত নন বলে জানা যাচ্ছে। তারা খুব সাধারণ চিকিৎসাতেই জ্বর ও গলা ব্যথার সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে পারেন। তবে, প্রতিটি ব্যক্তি ও পরিবারের জন্যই করোনাভাইরাস থেকে সুরক্ষার লক্ষে প্রস্তুতি নেওয়া জরুরি। আমরা আশা করছি, আমাদের সিম্পটম চেকার, করোনা বিমা ও বিনা মূল্যে স্বাস্থ্য ও জীবন বিমা মানুষের দুশ্চিন্তা লাঘবের পাশাপাশি দেশের স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থার ওপর সৃষ্ট বাড়তি চাপ কমাতেও সহায়তা করবে।’
‘এই চরম উৎকণ্ঠার সময়ে এক লাখ মানুষকে করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে বিনা মূল্যে স্বাস্থ্য ও জীবন বিমা সুবিধা বর্তমান সংকট মোকাবিলায় মানুষকে প্রস্তুত হতে বিশেষভাবে সহায়তা করবে বলে আশা করা যায়। সবার সহযোগিতা পেলে ডিজিটাল হেলথ এই জনস্বাস্থ্য ও অর্থনৈতিক ঝুঁকি মোকাবিলায় দেশের মানুষের সক্ষমতা বৃদ্ধিতে নতুন নতুন উদ্ভাবনমূলক কর্মসূচি নিয়ে আরও বেশি এগিয়ে আসতে পারবে বলে আমরা আশা করছি’, বলেন তিনি।
Comments