বাংলাদেশে ‘থার্ড পার্টি ফ্যাক্ট চেকিং প্রোগ্রাম’ চালু করল ফেসবুক

ভুল তথ্য ছড়ানো প্রতিরোধে ও অনলাইনে প্রাপ্ত খবরের গুণগত মান উন্নয়নে চলমান প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে বাংলাদেশে থার্ড পার্টি ফ্যাক্ট চেকিং প্রোগ্রাম চালু করার ঘোষণা দিয়েছে ফেসবুক।
Facebook-1.jpg

ভুল তথ্য ছড়ানো প্রতিরোধে ও অনলাইনে প্রাপ্ত খবরের গুণগত মান উন্নয়নে চলমান প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে বাংলাদেশে থার্ড পার্টি ফ্যাক্ট চেকিং প্রোগ্রাম চালু করার ঘোষণা দিয়েছে ফেসবুক।

ফেসবুক বিওওএম (বুম) এর সঙ্গে অংশীদার হয়ে কাজ করবে, যা পয়েন্টার ইনস্টিটিউটের নিরপেক্ষ অঙ্গসংগঠন ইন্টারন্যাশনাল ফ্যাক্ট চেকিং নেটওয়ার্ক (আইএফসিএন) অনুমোদিত একটি প্রতিষ্ঠান।

আজ রোববার থেকে বুম বাংলাদেশের ফেসবুক কমিউনিটিতে বিদ্যমান ছবি ও ভিডিওসহ ফেসবুক স্টোরিগুলোর যথার্থতা পর্যালোচনা করবে এবং অ্যাকুরেসি রেটিং প্রদান করবে। যখন থার্ড পার্টি ফ্যাক্ট-চেকাররা কোনো পোস্টকে অসত্য হিসেবে রেটিং দেবে, তখন এটি নিউজ ফিডে কম বা একেবারে নিচের দিকে প্রদর্শিত হবে যা পোস্টটির ছড়িয়ে পড়া উল্লেখযোগ্যভাবে কমিয়ে দেবে। ফেসবুক ভারত এবং মিয়ানমারের মতো অন্যান্য দেশেও বুমের সঙ্গে কাজ করছে।

ফেসবুকের এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলের নিউজ পার্টনারশিপ ডিরেক্টর অঞ্জলি কাপুর বলেন, ‘আমরা জানি যে ফেসবুক ব্যবহারকারীরা সঠিক তথ্যই পেতে চায়। সেজন্য আমরা বাংলাদেশে বুম-এর সঙ্গে অংশীদারিত্বের মাধ্যমে আমাদের থার্ড পার্টি ফ্যাক্ট চেকিং প্রোগ্রাম অব্যাহত রাখতে পেরে অত্যন্ত আনন্দিত। আমরা বিশ্বাস করি, এই ফ্যাক্ট চেকিং প্রোগ্রামের সাহায্যে আমরা আরও সচেতন জনগোষ্ঠী তৈরি করতে এবং স্থানীয়ভাবে এই প্রোগ্রামটি আরও সম্প্রসারণ করতে পারবো।’

নিউজ ফিডে যে পোস্টগুলো দেখা যায়, সেগুলোর মান এবং সত্যতা উন্নত করতে এই প্রোগ্রামটি ফেসবুকের থ্রি-পার্ট ফ্রেমওয়ার্ক-এর সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। থার্ড পার্টি ফ্যাক্ট-চেকাররা যখন কোনো পোস্ট নিয়ে লেখেন, ফেসবুকের নিউজ ফিডে সেই পোস্টের ঠিক নিচে রিলেটেড আর্টিকেলস অংশে সেটি সঙ্গে সঙ্গেই দেখায়। ফেসবুকের বিদ্যমান পেজগুলোর এডমিন বা কোনো সদস্যও যদি কোনো অসত্য তথ্য পোস্ট করার চেষ্টা করে তাদের কাছেও নোটিফিকেশন পৌঁছে যাবে। এর ফলে ফেসবুক ব্যবহারকারীরা কী ধরণের পোস্ট পড়বে, কোন তথ্যটি বিশ্বাস করবে আর কী শেয়ার করবে বা করবে না- তা নিজেরাই জেনে-বুঝে সিদ্ধান্ত নিতে পারবে।

বুম এর প্রতিষ্ঠাতা-সম্পাদক গোবিন্দ এথিরাজ বলেন, ‘বুম একটি নিবেদিত দল নিয়ে আমাদের ফ্যাক্ট চেকিং অপারেশন বাংলাদেশে প্রসারিত করতে পেরে আনন্দিত। আমরা স্বাস্থ্য এবং চিকিত্সা থেকে শুরু করে বর্তমান যে কোনো বিষয় নিয়ে অনলাইনে প্রচলিত ভুল তথ্যগুলোকে চিহ্নিত করে প্রতিরোধ করার চেষ্টা করব। ফ্যাক্ট চেকিং হলো আমাদের বিশেষত্ব এবং আমরা আশাবাদী যে এই প্রচেষ্টার মাধ্যমে বাংলাদেশের ফেসবুক ব্যবহারকারীরা প্রয়োজনীয় ও সঠিক তথ্য পেয়ে যেকোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে পারবেন এবং অনলাইনে সত্য খবর এবং তথ্য সনাক্ত করতে সক্ষম হবেন।’

থার্ড পার্টি ফ্যাক্ট চেকিংয়ের পাশাপাশি ফেসবুকের ব্যবহারকারীদের ডিজিটাল নিউজ লিটারেসি নিয়ে দক্ষতা অর্জন করে কী পড়তে হবে, কোন তথ্যটি বিশ্বাস করতে হবে এবং কী শেয়ার করা যাবে সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে সক্ষম করে। বিশ্বব্যাপী নিউজ লিটারেসি প্রোগ্রামগুলো প্রচার করে এবং মিথ্যা সংবাদ চিহ্নিত করার উপায় শেয়ার করে ফেসবুকের ব্যবহারকারীদের নিউজ ফিডের পোস্টগুলো সম্পর্কে সচেতন করে।

বাংলাদেশে ফেসবুক এ বছরের শুরুর দিকে দ্বিতীয়বারের মতো বাংলালিংকের সঙ্গে একটি ডিজিটাল সাক্ষরতা প্রোগ্রাম ‘ইন্টারনেট ১০১’ পরিচালনা করেছে। এই প্রোগ্রামটি ৩০০০ বাংলালিংক রিটেইল লোকেশনে ওয়ান-অন-ওয়ান ট্রেনিং সেশনের মাধ্যমে ফেসবুক ব্যবহারকারীদের ইন্টারনেট নিরাপত্তা বুঝতে শেখায়। প্রোগ্রামটি ডিজিটাল লিটারেসি এবং অনলাইন সুরক্ষা সম্পর্কে জানানোর জন্য জন্য কিছু নির্বাচিত বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৬০০ শিক্ষার্থীদের কাছে ইয়ুথ কানেক্ট সংগঠনের মাধ্যমে আলোচনা ফোরামের আয়োজন করবে।

ফেসবুকের ফ্যাক্ট চেকিং প্রোগ্রামটি শুরু হয় ২০১৬ সালের ডিসেম্বরে এবং আজ ৫০টির বেশি ভাষায় ৬০টিরও বেশি ফ্যাক্ট চেকিং সামগ্রী রয়েছে। ফেসবুক কমিউনিটির প্রতিক্রিয়াগুলো পর্যালোচনা করার মাধ্যমেও ফ্যাক্ট-চেকাররা কিছু মিথ্যা তথ্য উদঘাটন করে। ভুয়া খবর প্রতিরোধের জন্য ফেসবুকের ধারাবাহিক প্রচেষ্টার মধ্যে এটি সর্বশেষ সংযোজন এবং সঠিক তথ্যের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নিতে পারে এমন একটি কমিউনিটি গঠনে ফেসবুকের এই চেষ্টা অব্যাহত থাকবে।

Comments

The Daily Star  | English

How Islami Bank was taken over ‘at gunpoint’

Islami Bank, the largest private bank by deposits in 2017, was a lucrative target for Sheikh Hasina’s cronies when an influential business group with her blessing occupied it by force – a “perfect robbery” in Bangladesh’s banking history.

9h ago