স্বাস্থ্যকর্মীর পরিবারকে ‘ইটভাটায়’ থাকতে বললেন চেয়ারম্যান

Dhamrai
স্টার অনলাইন গ্রাফিক্স

ঢাকার ধামরাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের এক কর্মীর পরিবারকে বাড়ি ছাড়তে বলে ‘ইটভাটায় থাকার নির্দেশ দিয়েছেন’ এমন অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় এক চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে।

আজ সোমবার বেলা ১২টার দিকে বিষয়টি জানান ধামরাই উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. নূর রিফফাত আরা।

ভুক্তভোগী ঐ স্বাস্থ্যকর্মীর বাড়ি ধামরাইয়ের বালিয়া ইউনিয়নের মাদারপুর এলাকায়। তিনি দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘আমি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কাজ করি বিধায় এলাকা চেয়ারম্যান আহম্মদ হোসেন ও স্থানীয় ইউপি সদস্য আমাকে এলাকায় ঢুকতে দেন না। গতকাল বাড়িতে যাওয়ার পর এলাকার লোকজন দিয়ে আমাকে তারা বাড়িকে আটকে রাখেন।’

‘চেয়ারম্যান বলেছেন, আমিসহ আমার পরিবার যেন ইটভাটায় গিয়ে থাকি,’ অভিযোগ করেন তিনি।

কান্নাজড়িত কন্ঠে তিনি আরও বলেন, ‘আমার ঘরে বাবা-মা দুজনেই হার্টের রোগী। সব সময় ওষুধ লাগে তাদের। এ অবস্থায় কাউকে বাড়ি থেকে বের হতে দিচ্ছে না। বর্তমানে আমার পরিবারকে খুব চাপের মুখে রেখেছেন তারা।’

ধামরাই উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. নূর রিফফাত আরা জানান, ধামরাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মালি দীর্ঘদিন যাবৎ তাদের এখানে কাজ করেন। জনবল সংকট থাকায় বর্তমানে তিনি টিকিট কাউন্টারেও বসেন। হাসপাতালে কাজ করেন বিধায় কয়েকদিন আগে এলাকার চেয়ারম্যান-মেম্বর তাকে বাড়ি ছাড়তে বলেন।

‘তার পরিবারকে অবরুদ্ধ করে বাড়িতে লাল পতাকা টানিয়ে দেওয়া হয়েছে’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘সেই কর্মীকে এলাকায় থাকতে দিবে না বলে আজ তার পরিবারকে ইটভাটায় থাকার নির্দেশ দিয়েছেন তারা। তার পরিবারের সদস্যরা জরুরি প্রয়োজনে বাড়ি থেকে বের হতে পারছেন না, বাজারে যেতে পারছেন না।’

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের প্রধান এই কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘এ খবর পেয়ে আমি আমার কর্মীকে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসি। কিন্তু, তার পরিবারকে এখনো অবরুদ্ধ করে রেখেছেন জনপ্রতিনিধিরা।’

‘ঐ কর্মীর নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। তার করোনা নেগেটিভ এসেছে। তবুও কীভাবে উপজেলার নির্দেশ ছাড়া চেয়ারম্যানরা এভাবে একজনের বাড়িতে অবরুদ্ধ করে রাখেন?’ প্রশ্ন রাখেন তিনি।

ঘটনাটিকে খুব দুঃখজনক বলেও মন্তব্য করেন এই স্বাস্থ্য কর্মকর্তা।

বিষয়টি অস্বীকার করে ধামরাই উপজেলার বালিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আহম্মদ হোসেন বলেন, ‘আমি আসলে সেভাবে কিছু বলি নাই। স্বাস্থ্যকর্মীর পরিবারসহ এলাকাবাসীর সুরক্ষার জন্য তাকে আলাদা ঘর অথবা অন্য কোথাও থাকার জন্য বলা হয়েছে৷’

এ বিষয়ে ধামরাই থানার পরিদর্শক দীপক চন্দ্র সাহা দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘খবর পাওয়া মাত্র আমরা চেয়ারম্যানকে ফোনে বলে দিয়েছি যেন স্বাস্থ্যকর্মীর পরিবারকে কোনো প্রকার হয়রানি করা না হয়। পরিস্থিতি এখন স্বাভাবিক রয়েছে।’

এরপরও যদি তাদের হয়রানি করা হয় তাহলে চেয়ারম্যান ও ইউপি সদস্যর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।

Comments

The Daily Star  | English
BNP will not tolerate extortionists and grabbers

BNP won’t tolerate extortionists, land grabbers: Rizvi

Attempts are being made to create chaos in the society in the name of "mob culture", says the BNP leader

1h ago