বিশ্বকাপে পাকিস্তানের বিপক্ষে সেই ইনিংসটি বারবার দেখেন শচিন
আগে ব্যাট করে ২৭৪ রানের চ্যালেঞ্জিং লক্ষ্য ছুঁড়ে দিয়েছিল পাকিস্তান। তবে ২৬ বল হাতে রেখে অনায়াস জয় পেয়েছিল ভারত। এর মূল কৃতিত্ব শচিন টেন্ডুলকারের। ওয়াসিম আকরাম, ওয়াকার ইউনুস, শোয়েব আখতারদের নিয়ে গড়া পাকিস্তানের বিধ্বংসী বোলিং লাইনআপকে কচুকাটা করেছিলেন তিনি। বাহারি সব শটে সেঞ্চুরিয়নের সুপারস্পোর্ট পার্কের দর্শকদের মোহিত করেছিলেন ‘ক্রিকেট ঈশ্বর’ খ্যাত সাবেক এই ব্যাটসম্যান।
২০০৩ দক্ষিণ আফ্রিকা বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্বের ওই আগ্রাসী ইনিংসটি শচিনের হৃদয়ে আলাদা মাহাত্ম্য নিয়ে জায়গা দখল করে আছে। ১২ চার ও ১ ছক্কায় ৭৫ বলে ৯৮ রানের ইনিংস খেলেছিলেন তিনি। এই সব সংখ্যা দিয়ে ‘মাস্টার ব্লাস্টার’- এর ইনিংসটিকে ব্যাখ্যা করে বোঝানো যাবে না। সহজ ভাষায় বলতে গেলে, সেদিন তার ব্যাটিং শৈলী পুরো ক্রিকেটবিশ্বকে আরও একবার তাক লাগিয়ে দিয়েছিল। তার নৈপুণ্যে ৬ উইকেট হাতে রেখে পাকিস্তানকে হারিয়েছিল ভারত। দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীর মধ্যকার ম্যাচটা এখনও রোমাঞ্চিত করে শচিনকে। পেছন ফিরে তাকিয়ে বারবার ওই ম্যাচের উত্তেজনায় ডুব দিতে ভালো লাগে এই কিংবদন্তি তারকার।
শুক্রবার (২৪ এপ্রিল) জীবনের ইনিংসে ৪৭ বছর পূর্ণ হয়েছে শচিনের। জন্মদিন উপলক্ষে ক্রীড়া বিষয়ক ওয়েবসাইট স্পোর্টস্টারকে ইতিহাসের অন্যতম সেরা এই ক্রীড়া ব্যক্তিত্ব দিয়েছেন সাক্ষাৎকার। তার কাছে প্রশ্ন রাখা হয়, ঘুরে তাকিয়ে কোন ইনিংসটির কথা ভাবতে বেশি ভালো লাগে? উত্তরে তিনি জানান, ‘২০০৩ বিশ্বকাপে পাকিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচটির ইনিংস। চরম উত্তেজনাপূর্ণ ম্যাচ ছিল এটি। পেছন ফিরে তাকিয়ে দেখার জন্য ম্যাচটি দারুণ। আমার বারবারই এই ম্যাচটি দেখতে ভালো লাগে।’
করোনাভাইরাস মোকাবিলায় দেশটির সরকারের নির্দেশে ভারতজুড়ে চলছে লকডাউন। শচিন নিজেও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সরব, ভিডিও বার্তায় সবাইকে সচেতন হতে ও বাড়িতে থাকতে উদ্বুদ্ধ করছেন। এ প্রসঙ্গে নিজের উদাহরণ টেনে তিনি বলেন, ‘গত ১৫ মার্চ থেকে আমি একবারও বাড়ির বাইরে বের হইনি। বাইরের কারো সঙ্গে দেখা করিনি, এমনকি বন্ধুদের সঙ্গেও না।’
বাড়িতে বন্দি থাকার সময়টায় বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় উপলব্ধি করতে পেরেছেন শচিন। তার মতে, চলমান সংকটজনক পরিস্থিতির কিছু ইতিবাচক দিকেরও দেখা মিলছে, ‘এই সময়টা আমাদের সুযোগ করে দিয়েছে গত কয়েক বছরের অর্জনগুলোর দিকে ফিরে তাকানোর এবং সামনের পথের ছবি এঁকে নেওয়ার। পাশাপাশি সমাজকে কিছু ফিরিয়ে দেওয়ার, বিশেষ করে সুবিধাবঞ্চিতদের, এই সময় এটি গুরুত্বপূর্ণ। আর পুরো পরিবারই এগুলোর সঙ্গে সম্পৃক্ত আছে। পরিবারে একজন ডাক্তার (শচিনের স্ত্রী) থাকাটাও ভালো ব্যাপার।’
‘সন্তানদের সঙ্গেও সময় কাটাচ্ছি। যদিও ওদের দুজনের বয়স ২০ পেরিয়েছে এবং ওদের নিজস্ব অনেক বন্ধু-বান্ধব আছে। তবে যতটা সম্ভব পরস্পরের সঙ্গে সময় কাটিয়ে এই পরিস্থিতিটা আমরা পার করতে পারি। যেহেতু একদমই বাইরে যেতে পারছি না, তাই মাকে যে সময়গুলো দিতে পারিনি, সেগুলো দেওয়ার চেষ্টা করছি। একদিক থেকে বিবেচনা করলে, এই সময়টা তাই শাপেবর হয়ে গেছে।’
Comments