পটুয়াখালীতে কলেজছাত্রকে কুপিয়ে হত্যা
পটুয়াখালীর বাউফলের কালিশুরী ইউনিয়নের শিবপুর গ্রামে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে এক কলেজছাত্রকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। কুপিয়ে জখম করা হয়েছে তার অপর দুই ছোট ভাইকে।
আজ রোববার ভোররাত আড়াইটার দিকে এ ঘটনা ঘটেছে বলে দ্য ডেইলি স্টারকে নিশ্চিত করেছেন বাউফল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান।
ঘটনায় নিহত হয়েছেন মৃত নুরুল হক সিকদারের ছেলে রেদোয়ান (১৯) এবং আহত হয়েছে আবদুল্লাহ (১৬) ও ফয়সাল (৮)।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, গত ৯ এপ্রিল (শব-ই-বরাতের দিন) কাঁথা ও কম্বল রোদে দেওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে প্রতিবেশী আলম খানের স্ত্রী সাহিদা বেগমের সঙ্গে নিহত রেদোয়ানের ভাবি রেশমা বেগমের ঝগড়া হয়।
রেশমা বেগম জানান, ওই ঘটনার জের ধরে ঘটনার দিন রাত আড়াইটার দিকে সাহিদা (৪০) বেগম ও তার ছেলে ইমরান (১৬) তাদের নির্মাণাধীন ঘরে প্রবেশ করে তার ঘুমন্ত তিন দেবর রেদোয়ান, আবদুল্লাহ ও ফয়সালকে এলোপাথাড়ি ভাবে কুপিয়ে জখম করে।
এ সময় বাইরে থেকে তার রুমের দরজা দড়ি দিয়ে বাধা ছিল। রুমের ভেতর থেকে তিনি শুধু চিৎকারের শব্দ শুনতে পাচ্ছিলেন। একপর্যায়ে তার ছোট দেবর ফয়সাল এসে দরজা খুলে দিলে তাকে রক্তাক্ত অবস্থা দেখতে পান এবং অন্য রুমে গিয়ে তার অপর দুই দেবরকে রক্তাক্ত অবস্থায় পরে থাকতে দেখেন বলে যোগ করেন তিনি।
রেশমা বেগম আরও জানান, তার চিৎকার শুনে বাড়ির অন্যান্যরা এগিয়ে আসেন। ঘটনার সময় রেদোয়ানের মা মমতাজ বেগম ও বড় ভাই দিনার সিকদার বাড়ি ছিলেন না। তারা ঢাকায় অবস্থান করছিলেন।
কালিশুরী ইউনিয়নের মেম্বার বাবুল হোসেন জানান, খবর পেয়ে তিনি রাতেই ঘটনাস্থলে গিয়ে চৌকিদার চুন্নু হাওলাদারের সহযোগিতায় আহতদের উদ্ধার করে বাউফল স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক রেদোয়ানকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। তার আহত অপর দুই ভাই আবদুল্লাহ ও ফয়সালকে রাতেই আশঙ্কাজনক অবস্থায় বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে এবং এখন সেখানেই চিকিৎসাধীন রয়েছে।
নিহত রেদোয়ান কালিশুরী ডিগ্রী কলেজের একাদশ শ্রেণীর ছাত্র ছিল। তার অপর দুই ভাই আবদুল্লাহ কালিশুরী এসএ ইনস্টিটিউটে নবম শ্রেণীতে এবং ফয়সাল স্থানীয় একটি হাফেজিয়া মাদ্রাসা পড়াশুনা করছেন।
বাউফল থানা পুলিশ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে আজ রোববার সকাল ৯টার দিকে কালিশুরী কুমারখালী বাজারের কাছ থেকে সাহিদা বেগমকে (৪০) আটক করেছে। তবে, তার ছেলে ইমরান পলাতক রয়েছেন।
এ ঘটনায় এখনও কোনো মামলা হয়নি। তবে মামলা দায়েরের পর সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান ওসি।
Comments