লালমনিরহাট, কুড়িগ্রাম থেকে কৃষি শ্রমিক যাচ্ছে হাওর-দক্ষিণাঞ্চলে
প্রতিবছর এই সময় লালমনিরহাট ও কুড়িগ্রাম থেকে হাজারো কৃষি শ্রমিক যেতেন হাওর ও দক্ষিণের বিভিন্ন জেলায়। সেখানে বোরো ধান কাটা, মাড়াই করে বাড়ি ফিরে আবার এ অঞ্চলের ধান কাটা ও মাড়াইয়ের কাজ করতেন।
তবে এ বছর করোনা প্রাদুর্ভাবের কারণে তারা বাড়ি থেকে বেরোতে পারছেন না। তাই প্রশাসনের পক্ষ থেকে নেওয়া হয়েছে বিশেষ ব্যবস্থা। হাওর ও দক্ষিণাঞ্চলে ধান কাটতে ও মাড়াইয়ের জন্য যেতে আগ্রহী কৃষি শ্রমিকদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে সাথে প্রয়োজনীয় ওষুধ ও করোনা সংক্রমণ এড়াতে প্রয়োজনীয় দিক নির্দেশনা দিয়ে নির্দিষ্ট পরিবহনে গন্তব্যে পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে।
গত এক সপ্তাহে লালমনিরহাট ও কুড়িগ্রাম জেলা থেকে আড়াই হাজার কৃষি শ্রমিককে হাওর অঞ্চলসহ বিভিন্ন জেলায় পাঠানো হয়েছে বোরো ধান কাটা ও মাড়াই করার জন্য।
হাওর অঞ্চলে ধান কাটতে ও মাড়াইয়ের কাজে যাওয়া আদিতমারী উপজেলার ভাদাই গ্রামের কৃষি শ্রমিক সেকেন্দার আলী জানান, প্রশাসনের বিশেষ ব্যবস্থায় হাওরে ধান কাটতে ও মাড়াইয়ের কাজে গেছেন।
‘প্রতি বছর আমরা হাওর অঞ্চলে ধান কাটা ও মাড়াইয়ের কাজ করে একমাসে প্রায় ২০-২৫ হাজার টাকা রোজগার করি। এ টাকা আমাদের পরিবারে অনেক কাজে আসে,’ তিনি বলেন।
লালমনিরহাট সদর উপজেলার মোগরহাট ইউনিয়নের কুরুল এলাকার কৃষি শ্রমিক ধনেশ্বর বর্মণ বলেন, প্রতিবছর এ সময় হাওর ও দক্ষিণে বোরো ধান কাটা ও মাড়াই করে আয় করতেন কিন্তু এ বছর যেতে পারছেন না। বাড়িতে বসে আছেন কর্মহীন হয়ে।
তিনি বলেন, ‘আমি শ্রমিকের দল তৈরি করতে না পারায় প্রশাসনের সাথে যোগাযোগ করতে পারছি না। আর এ বছর হাওর অঞ্চলে ধান কাটা ও মাড়াইয়ের কাজ করে আয় করতে না পারলে আমি বড় সমস্যায় পড়ে যাব।’
লালমনিরহাট কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তরের উপপরিচালক শামিম আশরাফ দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘গ্রুপ করে কৃষি শ্রমিকরা তাদের সাথে যোগাযোগ করলে তাদেরকে হাওর ও দক্ষিণ অঞ্চলে ধান কাটা ও মাড়াইয়ের কাজে বিশেষ ব্যবস্থায় পাঠানো
হচ্ছে।’
চাহিদা অনুযায়ী পর্যায়ক্রমে কৃষি শ্রমিক পাঠানো হবে বলেও তিনি জানান।
আদিতমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুহাম্মদ মনসুর উদ্দিন বলেন, কৃষি শ্রমিকদের পাঠানোর আগে তাদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয়। দেয়া হয় করোনা সংক্রমণ রোধে বিধিনিষেধ নির্দেশনা।
‘এখানকার কৃষি শ্রমিকরা বিশেষ ব্যবস্থায় কাজ করার সুযোগ পাওয়ায় খুশি। তাদের প্রতিনিয়ত খোঁজ খবর রাখা হচ্ছে,’ তিনি জানান।
Comments