করোনা সংকট মোকাবিলা

​২ হাজার চিকিৎসক ৫ হাজার নার্স নিয়োগের সুপারিশ চূড়ান্ত

করোনা সংকট মোকাবিলায় দুই হাজার চিকিৎসক ও পাঁচ হাজার নার্স নিয়োগের সুপারিশ চূড়ান্ত করেছে সরকারি কর্মকমিশন-পিএসসি।
৪৬ তম বিসিএস ফলাফল

করোনা সংকট মোকাবিলায় দুই হাজার চিকিৎসক ও পাঁচ হাজার নার্স নিয়োগের সুপারিশ চূড়ান্ত করেছে সরকারি কর্মকমিশন-পিএসসি।

এর মধ্যে দুই হাজার চিকিৎসক নিয়োগ পাবেন ৩৯তম বিসিএসের অপেক্ষমান তালিকা থেকে। পাঁচ হাজার নার্স নিয়োগ হবে ২০১৮ সালের সিনিয়র স্টাফ নার্স নিয়োগ পরীক্ষার অপেক্ষমান তালিকা থেকে। গতকাল মঙ্গলবার সরকারি কর্মকমিশনের এক বৈঠকে বিষয়টি চূড়ান্ত হয়।

এ বিষয়ে পিএসসির চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাদিক বলেন, ‘করোনা আমাদের জাতীয় সঙ্কট তৈরি করেছে। সরকারের কাছ থেকে ডাক্তার ও নার্স নিয়োগের চাহিদা পাওয়ার পর কত দ্রুত সময় সেই নিয়োগ দেওয়া যায় আমরা সেই উদ্যোগ নেই। নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি, আবার পরীক্ষা এগুলো দীর্ঘ প্রক্রিয়া। আমাদের যেহেতু ৩৯তম বিসিএসে চূড়ান্তভাবে উত্তীর্ণ আট হাজার ডাক্তারদের একটা অপেক্ষামান তালিকা ছিল সেখান থেকেই চিকিৎসক নিয়োগের সিদ্ধান্ত হয়েছে। আমরা দ্রুততম সময়ের মধ্যে এই তালিকা সরকারের কাছে পাঠিয়ে দেব। একইভাবে পাঁচ হাজার নার্স নিয়োগের সুপারিশ করা হচ্ছে। নতুন নিয়োগ পাওয়া এই চিকিৎসক ও নার্সরা যোগ দিলে নিশ্চয়ই স্বাস্থ্য সেবায় গতি আসবে।’

২০১৮ সালে ১০ এপ্রিল ৩৯তম বিশেষ বিসিএসের বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়। ওই বছরের ৩ আগস্ট প্রিলিমিনারি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। এতে ৩৭ হাজার ৫৮৩ জন অংশ নেন। পরীক্ষায় পাশ করেন ১৩ হাজার ৭৫০ জন চিকিৎসক। চূড়ান্ত মৌখিক পরীক্ষার পর আট হাজার ৩৬০ জন উত্তীর্ণ হন। সেখান থেকে চার হাজার ৭৯২ জন চিকিৎসককে নিয়োগের সুপারিশ করে পিএসসি। গত নভেম্বর মাসে তাদের মধ্যে থেকে ৪ হাজার ৪৪৩ জনকে স্বাস্থ্য ক্যাডারে নিয়োগ দিয়ে আদেশ জারি করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। বাকিরা অপেক্ষমান তালিকায় ছিল।

ওই তালিকা থেকে এ বছরের ১২ ফেব্রুয়ারি ওই ৫৩৫ জন চিকিৎসককে মেডিকেল অফিসার হিসেবে পরিবার পরিকল্পনা কল্যাণ অধিদপ্তরে নিয়োগের সুপারিশ করা হয়েছিল। এছাড়া আরও ২৯ জনকে অন্যান্য দপ্তরে নিয়োগের সুপারিশ করা হয়েছিল। নতুন করে চিকিৎসক নিয়োগ হবে শুনে সুপারিশ পাওয়া এই ৫৬৪ জন চিকিৎসক পিএসসি ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেন। ওই চিঠিতে তারা বলেন, যেহেতু সরকার দুই হাজার চিকিৎসক নিতে চাইছে কাজই তাদেরও পরিবার পরিকল্পনা দপ্তরের বদলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে যেন নিয়োগ দেওয়া হয়। ওই চিঠির প্রেক্ষিতে গতকালকের বৈঠকে পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের মেডিকেল অফিসার হিসেবে আগের নিয়োগ বাতিল করে মেধা তালিকা অনুযায়ী দুই হাজার চিকিৎসকদের তালিকায় তাদের রাখার সিদ্ধান্ত হয়।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও পিএসসির কর্মকর্তারা বলছেন, দুই হাজার চিকিৎসককে অ্যাডহক ভিত্তিতে নিয়োগের কথা উঠছিল। তবে এ ধরনের নিয়োগ নিয়ে নানা সমস্যার অতীত উদাহরণ আছে। ফলে পিএসসি বিসিএস ক্যাডারে নিয়োগের পক্ষে মত দেয়। পরে প্রধানমন্ত্রীও তা অনুমোদন করেন।

অন্যদিকে স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অধীন সেবা পরিদপ্তরের আওতায় চার হাজার সিনিয়র স্টাফ নার্স ও ৬০০ মিডওয়াইফ নিয়োগের জন্য ২০১৭ সালের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে পিএসসি। ১৬ হাজার ৯০০ চাকরিপ্রত্যাশী পরীক্ষায় অংশ নেন। চূড়ান্ত ফলে ১০ হাজার প্রার্থী উত্তীর্ণ হন। ২০১৮ সালের ১৯ আগস্ট তাদের মধ্য থেকে চূড়ান্তভাবে পাঁচ হাজার ১০০ জনকে নিয়োগের জন্য বাছাই করে পিএসসি। যারা তখন নিয়োগ পাননি তাদের এখন নার্সিংহোমে নিয়োগের জন্য সুপারিশ করেছে পিএসসি। তবে সরকার ছয় হাজার নার্স চাইলেও পিএসসি পাঁচ হাজারের বেশি দিতে পারছে না।

করোনাভাইরাস সংকটে রোগীদের চিকিৎসা দিতে গিয়ে এ পর্যন্ত তিনশর বেশি চিকিৎসক আক্রান্ত হয়েছেন। ফলে আরও বেশ কিছু ডাক্তারদের কোয়ারেন্টাইনে যেতে হয়েছে। এছাড়া নতুন করে কিছু হাসপাতালও করা হচ্ছে। ফলে জনবল সংকট মোকাবিলায় দুই হাজার নতুন ডাক্তার এবং ছয় হাজার নতুন নার্স নিয়োগের জন্য চাহিদাপত্র পাঠানো হয় পিএসসিত। নতুন চিকিৎসক ও নার্সরা নিয়োগ পেলে সংকট মোকাবিলায় কিছুটা গতি আসবে বলে আশা করছে সরকার।

Comments

The Daily Star  | English

Abu sayed’s death in police firing: Cops’ FIR runs counter to known facts

Video footage shows police shooting at Begum Rokeya University student Abu Sayed, who posed no physical threat to the law enforcers, during the quota reform protest near the campus on July 16. He died soon afterwards.

8h ago