করোনাভাইরাস

খুলনা বিভাগে শনাক্ত ১১৫ জন

Jessore Map
স্টার অনলাইন গ্রাফিক্স

খুলনা বিভাগের ১০টি জেলার মধ্যে নয়টিতেই করোনাভাইরাসের সংক্রমণ পাওয়া গেছে। মাত্র তিন দিনের ব্যবধানে বিভাগে নতুন করে আরও ৬২ করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে। সব মিলিয়ে আজ বুধবার পর্যন্ত জেলায় ১১৫ জনকে শনাক্ত করা হয়েছে।

এর আগে, গত ২৫ এপ্রিল খুলনা বিভাগের সব জেলা মিলে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ছিল ৫১। ওই দিন ঝিনাইদহ জেলায় প্রথম দুই জন করোনা রোগী শনাক্ত হয়। গত তিন দিনে ওই জেলায় আক্রান্ত রোগী পাওয়া গেছে আরও ১৯ জন। যশোরে রোগীর সংখ্যা ১৫ থাকলেও গতকাল তা বেড়ে ৪৪ জনে দাঁড়িয়েছে। তবে, গতকাল পর্যন্ত সাতক্ষীরা জেলা ছিল করোনামুক্ত।

সব মিলেয়ে বিভাগে শনাক্ত হয়েছেন ১১৫ জন। এদের মধ্যে মারা গেছেন দুই জন, আর সুস্থ হয়েছেন চার জন।

গত ১০ মার্চ থেকে করোনা আক্রান্ত রোগী ও কোয়ারেন্টিন সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য সংগ্রহ করছে খুলনা বিভাগের স্বাস্থ্য পরিচালকের দপ্তর। ওই তথ্য থেকে দেখা গেছে, গতকাল মঙ্গলবার পর্যন্ত বিভাগে শনাক্ত হওয়া মোট ১১৫ জন রোগীর মধ্যে যশোর জেলাতেই রয়েছেন ৪৪ জন। তবে, সেখানে কেউ এখনো মারা যায়নি।

যশোরের সিভিল সার্জন শেখ আবু শাহীন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘যশোরে কেন আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেশি পাওয়া যাচ্ছে তা নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না। সবচেয়ে ভয়াবহ ব্যাপার হলো— জেলায় স্থানীয়ভাবে আক্রান্ত রোগী বেশি পাওয়া যাচ্ছে। তবে, মনে হয় বাইরে থেকে আসা ব্যক্তিদের সংস্পর্শেই ওই সংক্রমণ হচ্ছে।’

এর আগে, যশোরের পরেই সবচেয়ে বেশি রোগী পাওয়া গিয়েছিল খুলনা জেলায়। তবে, সেটা ছাড়িয়ে এখন দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রোগী পাওয়া গেছে ঝিনাইদহ জেলায়। অথচ গত ২৪ এপ্রিল পর্যন্ত ঝিনাইদহ জেলায় কোনো রোগী শনাক্ত হয়নি। জেলায় বর্তমানে করোনা রোগী রয়েছে ২১ জন। এই জেলায় এখনও পযন্ত কেউ মারা যায়নি।

ঝিনাইদহের সিভিল সার্জন সেলিনা বেগম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘কিছুদিন আগ পর্যন্ত ঝিনাইদহ জেলা খুবই ভালো পরিস্থিতির মধ্যে ছিল। কিন্তু হঠাৎ করেই ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, মাদারীপুর থেকে হাজারো শ্রমিক জেলায় প্রবেশ করেছেন। লকডাউন করে রাখা ওইসব এলাকা থেকে কীভাবে এত শ্রমিক আসছে, তা নিয়েই শঙ্কা। তথ্য পাওয়া মাত্রই ওই ব্যক্তিদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে হোম কোয়ারেন্টিনে থাকার নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে। এর মধ্যে যাদের সন্দেহ হচ্ছে, তাদের নমুনা সংগ্রহ করলে করোনা পজিটিভ পাওয়া যাচ্ছে। এ কারণেই জেলায় হঠাৎ করেই করোনা রোগীর সংখ্যা বাড়ছে।’

গত ২৫ এপ্রিল নড়াইল জেলায় সাত জন শনাক্ত রোগী থাকলেও গতকাল রোগীর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৩ জনে। এর মধ্যে একজনকে সুস্থতার ছাড়পত্রও দেওয়া হয়েছে। জেলাটিতে কেউ হাসপাতালে ভর্তি নেই এবং কেউ মারাও যায়নি।

গতকাল পর্যন্ত কুষ্টিয়া জেলায় রোগী শনাক্ত হয়েছেন ১১ জন। গত ২৫ এপ্রিল ওই জেলায় রোগীর সংখ্যা ছিল মাত্র পাঁচ জন।

এক প্রকার স্থিতিশীল অবস্থার মধ্যে রয়েছে খুলনা জেলা। জেলাটিতে পাওয়া ১২ জন রোগীর মধ্যে একজন সুস্থ ও এক জন মারা গেছেন। মোট রোগীর মধ্যে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক ও নার্স, রূপসা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্যকর্মী, নারী পরিচ্ছন্নতাকর্মী ও নৈশপ্রহরীও রয়েছেন।

খুলনা সিভিল সার্জন ডা. সুজাত আহমেদ বলেন, ‘বাইরে থেকে আগতরাই ভাবাচ্ছে বেশি। কারণ, এখনো পর্যন্ত জেলায় যে কয়জন করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছেন তাদের বেশিরভাগই ঢাকা থেকে খুলনায় এসেছেন। বাইরে থেকে মানুষ প্রবেশ বন্ধ করতে পারলে খুলনা অনেকটা ভালো পরিস্থিতির মধ্যে থাকবে।’

এ ছাড়াও, বিভাগের মধ্যে সাত জন চুয়াডাঙ্গা জেলায়, চার জন মাগুরা জেলায়, দুই জন মেহেরপুর জেলায়। মেহেরপুরের দুই জনের মধ্যে একজন মারা গেছেন। বাগেরহাটে একজন রোগী পাওয়া গিয়েছিল। বর্তমানে তিনি সুস্থ রয়েছেন।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর খুলনার পরিচালক রাশেদা সুলতানা দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘হঠাৎ করেই যশোর ও ঝিনাইদহ জেলায় রোগীর সংখ্যা বেড়ে গেছে। অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে নতুন সংক্রমণের স্থান হিসেবে চিহ্নিত হচ্ছে যশোর ও ঝিনাইদহ জেলা। ওইসব জেলায় সতর্ক দৃষ্টি রাখা হচ্ছে। সংক্রমণ যেন ছড়িয়ে না পড়ে, সেদিকে লক্ষ্য রেখেই নতুন নতুন পরিকল্পনা করা হচ্ছে।’

Comments

The Daily Star  | English

Wrap up polls preparations by December

Chief Adviser Prof Muhammad Yunus yesterday ordered the authorities concerned to complete, by December, the preparations for the upcoming national election.

4h ago