ভারতীয় ফুটবল কিংবদন্তি চুনী গোস্বামীর চিরবিদায়

চুনীর ফুটবলজীবন ছিল অসংখ্য কীর্তিতে উজ্জ্বল। আর সেসবের মধ্যে সেরা অর্জন ছিল এশিয়ান গেমসে নেতৃত্ব দিয়ে ভারতকে সোনা জেতানো।
chuni
ছবি: বিসিসিআই টুইটার

না ফেরার দেশে পাড়ি দিলেন কিংবদন্তি ফুটবল তারকা চুনী গোস্বামী। তিনি ছিলেন ১৯৬২ সালের এশিয়ান গেমসে সোনাজয়ী ভারতীয় দলের অধিনায়ক। বৃহস্পতিবার কলকাতার একটি হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। অর্জুন পুরস্কার ও পদ্মশ্রী জেতা এই সাবেক ফুটবলারের মৃত্যুকালে বয়স হয়েছিল ৮২ বছর।

হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন এই প্রবাদপ্রতিম স্ট্রাইকার। গত কয়েকমাস ধরেই অবশ্য নানা ধরনের শারীরিক জটিলতায় ভুগছিলেন তিনি। চুনীর পরিবারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, মূলত সুগার, প্রোস্টেট এবং স্নায়ু সমস্যার কারণে এদিন সকালে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছিল। সেখানেই বিকালে প্রয়াত হন তিনি।

১৯৩৮ সালের ১৫ জানুয়ারি বাংলাদেশের (তৎকালীন অবিভক্ত ভারত) কিশোরগঞ্জ জেলায় জন্মগ্রহণ করেছিলেন চুনী। আসল নাম সুবিমল গোস্বামী হলেও ডাকনামেই খ্যাতির শিখরে পৌঁছান তিনি। ১৯৫৬ থেকে ১৯৬৪ সালের মধ্যে ভারত জাতীয় ফুটবল দলের হয়ে খেলেন ৫০টি ম্যাচ।

চুনীর ফুটবলজীবন ছিল অসংখ্য কীর্তিতে উজ্জ্বল। আর সেসবের মধ্যে সেরা অর্জন ছিল এশিয়ান গেমসে নেতৃত্ব দিয়ে ভারতকে সোনা জেতানো। দীর্ঘ ১৪ বছর ভারতীয় ফুটবলের শীর্ষ পর্যায়ে খেলেছেন তিনি। ছিলেন ‘ওয়ান ক্লাব ম্যান’। ১৯৬৪ সালে বুটজোড়া তুলে রাখার আগে ক্যারিয়ারের গোটা সময়টাই কাটান মোহন বাগানের হয়ে। ১৯৬০-৬৪ সাল পর্যন্ত পাঁচ মৌসুম ক্লাবটিকে নেতৃত্বও দেন।

মাত্র ২৭ বছর বয়সে জাতীয় দলকে বিদায় বলেছিলেন চুনী। এর মধ্যেই ১৯৬২ এশিয়ান গেমসে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পাশাপাশি তার নেতৃত্বে ১৯৬৪ সালে এশিয়ান কাপে রানার্সআপ হয়েছিল ভারত। ছয় মাস পরে মারদেকা কাপের ফাইনালেও জায়গা করে নিয়েছিল তারা।

বর্ণাঢ্য ক্যারিয়ারে চুনীর ব্যক্তিগত অর্জনের ঝুলিও সমৃদ্ধ। ১৯৬২ সালে এশিয়ার সেরা স্ট্রাইকারের পুরস্কার জিতেছিলেন তিনি। ভারতীয় ফুটবলে অসামান্য অবদান রাখায় ১৯৬৩ সালে অর্জুন পুরস্কার ও ১৯৮৩ সালে পদ্মশ্রী দিয়ে সম্মানিত করা হয় তাকে। ২০০৫ সালে মোহনবাগান রত্ন পুরস্কারও পান তিনি।

শুধু ফুটবলার হিসেবে নন, ক্রিকেটার হিসেবেও প্রতিভাবান ছিলেন তিনি। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে বাংলার হয়ে রঞ্জি ট্রফিতে খেলেছেন ১৯৬২ থেকে ১৯৭৩ সাল পর্যন্ত। ১৯৭১-৭২ মৌসুমে তার নেতৃত্বেই রঞ্জির ফাইনালে পৌঁছেছিল বাংলা।

উল্লেখ্য, গেল মাসে আরও একজন কিংবদন্তি ফুটবলারকে হারিয়েছে ভারত। ফুটবলের জন্য গোটা জীবন উৎসর্গ করা পিকে (প্রদিপ কুমার) ব্যানার্জি মারা গেছেন গেল ২০ মার্চ। কলকাতায় বার্ধক্যজনিত কারণে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮৩ বছর।

Comments

The Daily Star  | English

Over 5,500 held in one week

At least 738 more people were arrested in the capital and several other districts in 36 hours till 6:00pm yesterday in connection with the recent violence across the country.

13h ago