প্রবাস

স্বাভাবিক হয়ে আসছে স্লোভেনিয়া

স্লোভেনিয়ার ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব পাবলিক হেলথ প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী গতকাল রবিবার নতুন করে কেউই করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হয়নি।
ছবি: রয়টার্স ফাইল ফটো

স্লোভেনিয়ার ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব পাবলিক হেলথ প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী গতকাল রবিবার নতুন করে কেউই করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হয়নি।

এর আগের চব্বিশ ঘণ্টার ব্যবধানে করোনায় সংক্রমিত হয়ে দুই জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে স্লোভেনিয়াতে করোনায় মৃতের সংখ্যা দাঁড়ালো ৯৬ জনে। এখন পর্যন্ত সুস্থ হয়ে বাসায় ফিরেছেন ২৪১ জন।

এছাড়াও, এখন পর্যন্ত স্লোভেনিয়ায় অন্তত ১,৪৩৯ জনের করোনা পজিটিভ ধরা পড়েছে।

প্রতিবেশি রাষ্ট্র অস্ট্রিয়ার মতো ধীরে ধীরে স্লোভেনিয়াতেও মার্চ মাসের ১৯ তারিখ থেকে জারি করা জরুরি অবস্থা তুলে নেওয়া হচ্ছে। বিশেষ করে, এতো দিন বিশেষ অনুমতি ছাড়া স্লোভেনিয়ার এক শহর থেকে অন্য শহরে যাতায়াতের ব্যাপারে যে নিষেধাজ্ঞা ছিল গত বৃহস্পতিবার থেকে তা শিথিল করা হয়েছে।

পাশাপাশি আজ সোমবার থেকে শর্ত সাপেক্ষে কফিশপ, বার ও রেস্তোরাঁগুলো খোলা রাখার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও, গত ২৯ এপ্রিল থেকে বিভিন্ন মিউজিয়াম, আর্ট গ্যালারি, থিয়েটার, লাইব্রেরিগুলোকেও আবার খুলে দেওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়েছে।

স্কুল, কলেজ কিংবা বিশ্ববিদ্যালয়গুলো খুলে দেওয়ার ক্ষেত্রে এখন পর্যন্ত কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। স্থানীয় গণমাধ্যম সূত্রে জানা গিয়েছে যে এই সপ্তাহের মধ্যে স্কুল, কলেজ, কিন্ডারগার্টেনসহ বিভিন্ন শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানের কয়েকজন শিক্ষার্থীর নমুনা সংগ্রহ করা হবে এবং তাদেরকে কোভিড-১৯ টেস্টের আওতায় আনা হবে। যদি সন্তোষজনক ফল পাওয়া যায় তাহলে এ মাসের মাঝামাঝি শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানগুলো খুলে দেওয়া হতে পারে।

এছাড়াও, পরিস্থিতি এ রকম স্থিতিশীল থাকলে মে মাসের শেষের দিকে যথাসময়ে স্টেস্ট মাতুরা এক্সাম অনুষ্ঠিত হবে। স্টেট মাতুরা এক্সামকে আমাদের দেশের মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট পরীক্ষার সঙ্গে তুলনা করা যেতে পারে।

তবে কবে নাগাদ বাস কিংবা ট্রেনসহ গণপরিবহন সেবা আবার সচল করে দেওয়া হবে সে ব্যাপারে স্লোভেনিয়ার সরকারের পক্ষ থেকে এখনও পর্যন্ত কিছু জানানো হয়নি। পরবর্তী ঘোষণা না আসা পর্যন্ত স্লোভেনিয়ার রাজধানী লুবলিয়ানাতে অবস্থিত দেশটির একমাত্র বিমানবন্দর ইয়োজে পুচনিক ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্ট থেকেও সব ধরণের ফ্লাইট বন্ধ থাকবে।

করোনার চিকিৎসায় বর্তমানে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে স্টেম সেল থেরাপি কিংবা প্ল্যাজম থেরাপির কথা বলা হচ্ছে। স্টেম সেল এক ধরণের কোষ যা আমাদের শরীরে রোগ প্রতিরক্ষায় বিশেষ ভূমিকা পালন করে। স্টেম সেলকে মেমোরি সেল হিসেবেও আখ্যা দেওয়া হয়।

আমরা যখন কোনো রোগ-জীবাণুর সংক্রমণ থেকে সুস্থ হয়ে উঠি, পরে যখন ঐ একই ধরণের রোগ-জীবাণু আমাদের শরীরে আক্রমণের চেষ্টা করে স্টেম সেল আগের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে সেগুলোকে শনাক্ত করার চেষ্টা করে। সব রোগ-জীবাণুকে ধ্বংস করে ফেলে।

বর্তমানে করোনাভাইরাসের চিকিৎসায় আলোচিত এ স্টেম সেল থেরাপি। এতে বলা হচ্ছে, সাম্প্রতিক সময়ে করোনার সংক্রমণ থেকে সুস্থ হয়েছেন এমন কোনো ব্যক্তির রক্ত থেকে প্লাজমা বা রক্তরস নিয়ে আক্রান্ত অন্য কোনো ব্যক্তির শরীরে প্রতিস্থাপনের মধ্য দিয়ে সে ব্যক্তিকে সুস্থ করে তোলা সম্ভব। স্লোভেনিয়ার ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব পাবলিক হেলথের ডিপার্টমেন্ট অব ইমিউনোলজি ও ডিপার্টমেন্ট অব ভাইরোলজির সমন্বিত এই গবেষণালব্ধ ফল পৃথিবীর অনেক দেশই অনুসরণ করার চেষ্টা করছে।

আপাতদৃষ্টিতে স্লোভেনিয়ায় সব স্বাভাবিক অবস্থায় যাচ্ছে বলে দেশটির স্থানীয় অধিবাসীদের অনেকে মনে করলেও প্রধানমন্ত্রী ইয়ানেজ ইনশার গত বৃহস্পতিবার টেলিভিশন সাক্ষাৎকারে বলেছেন, খুব শীঘ্রই সব কিছু স্বাভাবিক অবস্থানে ফিরে আসার সম্ভাবনা নেই।

পাশাপাশি তিনি সবাইকে যথাসম্ভব সতর্ক থাকার আহবান জানিয়েছেন। তিনি দাবি করেছেন, যেকোনো মুহূর্তে চেহারা পরিবর্তন করে গত শতাব্দীতে মহামারি আকারে পৃথিবীর বিভিন্নস্থানে ছড়িয়ে পড়া স্প্যানিশ ফ্লু ভাইরাসের মতো দ্বিতীয় ধাপে যেকোনো সময় আবার এ ভাইরাসটি ফিরে আসতে পারে, যদি পরিস্থিতি ভালো হয়ে যাওয়ার পরও আমরা যথার্থ সতর্কতা মেনে না চলি।

রাকিব হাসান, স্লোভেনিয়ার ইউনিভার্সিটি অব নোভা গোরিছার সায়েন্স ইন ফিজিক্স অ্যান্ড অ্যাস্ট্রোফিজিক্স বিভাগের শিক্ষার্থী

Comments

The Daily Star  | English

One month of interim govt: Yunus navigating thru high hopes

A month ago, as Bangladesh teetered on the brink of chaos after the downfall of Sheikh Hasina, Nobel Laureate Muhammad Yunus returned home to steer the nation through political turbulences.

7h ago