সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ব্যবহারে আমরা উদ্বিগ্ন

শফিকুল ইসলাম কাজল। ছবি: সংগৃহীত

সারা দেশের সাংবাদিকদের গ্রেপ্তার ও ভয় দেখানোর জন্য ক্রমবর্ধমানভাবে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ব্যবহার নিয়ে আমরা উদ্বিগ্ন। সম্প্রতি, এক পুলিশ কর্মকর্তার সঙ্গে কথা না বলে তাকে উদ্ধৃত করে সংবাদ প্রকাশ করায় এই আইনে দায়ের করা মামলায় তিন সাংবাদিককে কারাগারে পাঠিয়েছে নরসিংদী আদালত। আমাদের প্রতিবেদন অনুযায়ী, জেলার অনলাইনসহ দুটি স্থানীয় সংবাদপত্র পুলিশ হেফাজতে একজনের মৃত্যুর খবর প্রকাশ করে। সেখানে পুলিশের এই কর্মকর্তার সঙ্গে কথা না বলেই তার উদ্ধৃতি প্রকাশ করা হয় বলে অভিযোগ করা হয়েছে। পুলিশ কর্মকর্তা তাত্ক্ষণিকভাবে ‘তার সম্মান রক্ষার্থে’ ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে মামলা করেন।

এই সাংবাদিকরা যদি সত্যই ‘বানোয়াট ও ভিত্তিহীন’ সংবাদ প্রকাশের জন্য দোষী হয়ে থাকেন কিংবা তারা যদি কোনো যোগাযোগ না করেই রিপোর্টে ওই কর্মকর্তার মন্তব্য দিয়ে থাকে, তাহলে পুলিশ অন্য কোনো ভাবে  এর সমাধান করতে পারত। তারা প্রকাশিত সংবাদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করে সংবাদপত্রগুলোতে চিঠি দিতে পারত। কিন্তু, তা না করে পুলিশ কর্মকর্তা তাদের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করেছেন। যে গতিতে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে তা আমাদের ভাবতে ভাবতে বাধ্য করছে, আইনটি ন্যায়বিচার পাওয়ার জন্য ব্যবহার করা হচ্ছে নাকি ভয় দেখানোর জন্য।

আমাদের মনে হচ্ছে, তথাকথিত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনটি সাংবাদিকদের কণ্ঠকে দমাতে এবং তাদের মধ্যে ভয় তৈরি করতে বেশি ব্যবহৃত হয়েছে। সম্প্রতি, বিডি নিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের প্রধান সম্পাদক এবং জাগো নিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদকসহ চার সাংবাদিকের বিরুদ্ধে এই আইনে মামলা করা হয়েছে করোনাভাইরাসে ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য বরাদ্দকৃত সহায়তা আত্মসাতের প্রতিবেদন করার কারণে। এই আইনের ‘অপব্যবহার’ করার এমন আরও অনেক উদাহরণ রয়েছে, যেখানে সাংবাদিকদের লক্ষ্যবস্তু বানানো হয়েছে।

সারাদেশের সাংবাদিকদের কঠিন সময়ের মধ্যেও আশাব্যঞ্জক খবর ১০ মার্চ থেকে নিখোঁজ সাংবাদিক শরিফুল ইসলাম কাজলকে ৫৩ দিন পরে যশোরের বেনাপোলে পাওয়া গেছে। বর্ডার গার্ড বাংলাদেশকে (বিজিবি) ধন্যবাদ জানাতে চাই কাজলকে খুঁজে পাওয়া এবং তার পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করিয়ে দেওয়ার জন্য। নিখোঁজ হওয়ার একদিন আগে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে তিনিসহ ৩১ জনের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছিল। এখন যেহেতু খুঁজে পাওয়া গেছে, আমরা তার নিখোঁজ হওয়ার কারণ এবং এই সময়ে তার সঙ্গে কি ঘটেছে তা জানতে চাই। আমরা সত্য জানতে চাই।

Comments

The Daily Star  | English

Baitul Mukarram to host five Eid jamaats

Prayer times: 7am, 8am, 9am, 10am, 10:45am

15m ago