নোয়াখালী-লক্ষ্মীপুরে চিকিৎসকসহ আরও ৬ করোনা রোগী শনাক্ত

নোয়াখালী ও লক্ষ্মীপুরে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত আরও ছয় জনকে শনাক্ত করা হয়েছে। এ নিয়ে দুই জেলায় করোনায় আক্রান্ত ৬৭ জনকে শনাক্ত করা হয়েছে।
corona_detected.jpg
স্টার অনলাইন গ্রাফিক্স

নোয়াখালী ও লক্ষ্মীপুরে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত আরও ছয় জনকে শনাক্ত করা হয়েছে। এ নিয়ে দুই জেলায় করোনায় আক্রান্ত ৬৭ জনকে শনাক্ত করা হয়েছে।

নোয়াখালী সিভিল সার্জন ডা. মো. মোমিনুর রহমান ও লক্ষ্মীপুর সিভিল সার্জন ডা. আব্দুল গাফফার আজ মঙ্গলবার দুপুরে দ্য ডেইলি স্টারকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তারা জানান, নোয়াখালীতে দুই জন শনাক্ত হয়েছেন। এদের মধ্যে একজন সোনাইমুড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ও অপরজন করিবর হাট উপজেলায় কমিউনিটি ক্লিনিকের হেলথ কেয়ার প্রভাইডার (সিএইচসিপি)। অন্যদিকে, শনাক্ত হয়েছেন চার জন। তাদের মধ্যে লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জে পিতা-পুত্র, রায়পুরে এক কিশোর ও কমলনগরে একটি বেসরকারি হাসপাতালের মার্কেটিং অফিসার।

নোয়াখালী সিভিল সার্জন ডা. মো. মোমিনুর রহমান বলেন, ‘সোনাইমুড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের প্রধান চিকিৎসা কর্মকর্তা (৪৫) স্বপ্রণোদিত হয়ে গত ২৮ এপ্রিল করোনা পরীক্ষার জন্য নমুনা চট্টগ্রামের বিআইটিআইডিতে পাঠান। গতকাল রাতে পাওয়া ফলে করোনা পজিটিভ আসে। আজ সকালে তাকে ঢাকার উত্তরার একটি হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। তার করোনা শনাক্ত হওয়ার পর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক, নার্স, কর্মচারীসহ ২৪ জনের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। ওই ২৪ জনকে হোম কোয়ারেন্টিনে পাঠানে হয়েছে।’

‘আক্রান্ত ওই চিকিৎসক সোনাইমুড়ী উপজেলা সদরের মেডিকেয়ার হাসপাতালেও রোগী দেখতেন। তাই ওই হাসপাতালটি লকডাউন করা হয়েছে এবং হাসপাতালের ১৮ কর্মকর্তা-কর্মচারীকে কোয়ারেন্টিনে পাঠানো হয়েছে’, বলেন তিনি।

সোনাইমুড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) টিনা পাল বলেন, ‘উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন— এই খবর পেয়ে তার ব্যক্তিগত চেম্বার মেডিকেয়ার হাসপাতালটি আজ সকালে লকডাউন করা হয়েছে। একইসঙ্গে হাসপাতালের ১৮ জন ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ২৪ জনসহ ৪২ জনের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে।’

কবিরহাট উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. বিদ্যুৎ কুমার বিশ্বাস বলেন, ‘উপজেলার মধ্য সুন্দরপুর কমিউনিটি ক্লিনিকের কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রভাইডারের (৩০) নমুনা গত ২৭ এপ্রিল সংগ্রহ করা হয়। ২৮ এপ্রিল তার নমুনা পরীক্ষার জন্য বিআইটিআইডিতে পাঠানো হয়। পরীক্ষার ফলাফলে তার করোনা পজিটিভ আসে। করোনাভাইরাস শনাক্ত হওয়ার পর তার শরীরে উপসর্গ না থাকায় কবিরহাটের নিজ বাড়িতে তাকে কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়েছে।’ 

‘নমুনা সংগ্রহের পর থেকে ৪ মে পর্যন্ত তিনি কমিউনিটি ক্লিনিকে স্বাস্থ্যসেবা দিয়ে আসছিলেন। আজ সকালে তার বাড়িটি লকডাউন ঘোষণা করে লাল পতাকা টাঙিয়ে দেওয়া হয়। এ ঘটনায় তার পরিবারের পাঁচ সদস্যের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে’, বলেন তিনি।

এ নিয়ে নোয়াখালীতে করোনায় আক্রান্ত ১৯ জনকে শনাক্ত করেছেন। এদের মধ্যে দুই জন মারা গেছেন। শনাক্তদের মধ্যে সদরে দুই জন, বেগমগঞ্জে আট জন, সোনাইমুড়িতে চার জন, কবিরহাটে দুই জন, হাতিয়ায় একজন ও সেনবাগে দুই জন। এরমধ্যে সোনাইমুড়ির একজন ও সেনবাগের একজন মারা গেছেন।

অন্যদিকে, লক্ষ্মীপুরে ১৩ বছর বয়সী এক কিশোর ও পিতা-পুত্রসহ আক্রান্ত আরও চার জনকে শনাক্ত করা হয়েছে। এই নিয়ে জেলায় করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ালো ৪৮ জনে। নতুন শনাক্তদের মধ্যে রামগঞ্জে দুই জন, কমলনগরে একজন ও রায়পুরে একজন।

রামগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. গুণময় পোদ্দার জানান, রামগঞ্জ উপজেলার কাঞ্চনপুর ইউনিয়নের একই পরিবারের পিতা (৬০) ও পুত্র (৩২) আক্রান্ত হয়েছেন। তাদের বাড়ি লকডাউন করা হয়েছে। আজ বিকালে তাদের ঢাকায় পাঠানো হবে।

রায়পুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. জাকির হোসেন বলেন, ‘উপজেলার সোনাপুর ইউনিয়নের ১৩ বছর বয়সী এক কিশোরের শরীরে করোনাভাইরাসের উপসর্গ দেখা দিলে গত ২৮ এপ্রিল তার নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়। গতকাল রাতে তার পরীক্ষার ফলাফল পজিটিভ আসে। তার উপসর্গ থাকায় আজ সকালে তাকে রায়পুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। ওই কিশোরের বাড়ি লকডাউন করা হয়েছে।’

কমলনগর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. আবু তাহের জানান, উপজেলা সদরের একটি ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মার্কেটিং অফিসার (২০) করোনার উপসর্গ নিয়ে গত ২৮ তারিখ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আসলে তাকে চিকিৎসাসেবা দিয়ে নমুনা সংগ্রহ করা হয়। গতকাল রাতে পরীক্ষার ফলাফল পজিটিভ আসে। বর্তমানে তিনি কমলনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি রয়েছেন। এ ঘটনায় আক্রান্ত ব্যক্তির বাড়িটি লকডাউন করা হয়েছে এবং তার পরিবারের ছয় সদস্যের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে।

লক্ষ্মীপুর সিভিল সার্জন ডা. আব্দুল গাফফার বলেন, ‘আক্রান্ত রোগীদের হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে। এ নিয়ে জেলায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ৪৮। এদের মধ্যে রামগঞ্জে ১৮ জন, সদর উপজেলায় ১৭ জন, কমলনগরে ছয় জন, রামগতিতে ছয় জন ও রায়পুর উপজেলায় একজন রয়েছেন।’

Comments

The Daily Star  | English

One month of interim govt: Yunus navigating thru high hopes

A month ago, as Bangladesh teetered on the brink of chaos after the downfall of Sheikh Hasina, Nobel Laureate Muhammad Yunus returned home to steer the nation through political turbulences.

7h ago