পদ ছাড়লেও বিদ্যানন্দে আছি, থাকব: কিশোর কুমার

স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা কিশোর কুমার দাস প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান পদ ছেড়ে দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। কিন্তু হঠাৎ করে ছাড়লেন কেন? কিশোর কুমারের উত্তর, ‘আমাকে যদি কেউ জিজ্ঞেস করেন এই পৃথিবীতে এই মুহূর্তে আপনার সবচেয়ে প্রিয় কি- আমি বলবো বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশন। কিন্তু কখনো কখনো মানুষের স্বার্থে, ভালোবাসার স্বার্থে অনেক কিছু ত্যাগ করতে হয়। আমিও তাই চেয়ারম্যানের পদ থেকে সরে যাচ্ছি। তবে আমি বিদ্যানন্দে আছি। থাকবো।’
কিশোর কুমার দাস। ছবি: সংগৃহীত

স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা কিশোর কুমার দাস প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান পদ ছেড়ে দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। কিন্তু হঠাৎ করে ছাড়লেন কেন? কিশোর কুমারের উত্তর, ‘আমাকে যদি কেউ জিজ্ঞেস করেন এই পৃথিবীতে এই মুহূর্তে আপনার সবচেয়ে প্রিয় কি- আমি বলবো বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশন। কিন্তু কখনো কখনো মানুষের স্বার্থে, ভালোবাসার স্বার্থে অনেক কিছু ত্যাগ করতে হয়। আমিও তাই চেয়ারম্যানের পদ থেকে সরে যাচ্ছি। তবে আমি বিদ্যানন্দে আছি। থাকবো।’

গতকাল মঙ্গলবার দ্য ডেইলি স্টারকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাতকারে এসব কথা বলেন কিশোর কুমার দাস। বিদ্যানন্দের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ থেকে গতকাল তার সরে যাওয়ার ঘোষণা দেওয়া হয়। এরপরেই কিশোর কুমার দাসের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। তিনি বর্তমানে প্রশান্ত মহাসাগরের উপকূলে অবস্থিত একটি ছোট্ট দেশ পেরুতে বাস করছেন। সেখান থেকেই মুঠোফোনে গতকাল দুপরে এই সাক্ষাতকার দেন। সেই আলাপে উঠে আসে এই সংগঠনের শুরু থেকে নানা উদ্যোগের কথা। পাশাপাশি চেয়ারম্যান পদ ছাড়ার কারণও বলেন।

চট্টগ্রামের প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কম্পিউটার প্রকৌশল বিভাগে স্নাতক শেষ করা কিশোর বড় হয়েছেন চট্টগ্রামে। তিনি একটি আইটি প্রতিষ্ঠানের প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের উচ্চ পদে চাকুরী করতেন। যেটি থার্ড পার্টি হিসেবে গুগলের কাজ করতো। তবে ওই চাকুরী ছেড়ে বর্তমানে তিনি উদ্যোক্তা। বিদেশে থেকেই সংগঠনটির কাজে যুক্ত আছেন।

কিশোরের সঙ্গে আলাপ করে জানা গেল, সুবিধা বঞ্চিত শিশুদের শিক্ষা সহায়তা দিতে ২০১৩ সালে গড়ে তুলেছিলেন বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশন। এখন সারাদেশে বিদ্যানন্দের ১২টি শাখার মাধ্যমে প্রতিদিন দুই হাজারেরও বেশি পথশিশু মৌলিক শিক্ষা ও খাবার পায়। এছাড়া দরিদ্র শিক্ষার্থীদের মাঝে পোশাক, শিক্ষা উপকরণ, মাসিক বৃত্তি প্রদান করে থাকে এবং সামাজিক বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজ করে। বিদ্যানন্দের এক টাকায় আহার, এক টাকায় চিকিৎসা, এক টাকায় আইন সেবা কার্যক্রমগুলো নিম্ন আয়ের মানুষের মুখে হাসি ফোটাচ্ছে। গরীব ও অসহায় কিন্তু মেধাবী ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য শিক্ষাবৃত্তির ব্যবস্থা আছে। আছে বাংলাদেশের রামু ও রাজবাড়ীতে নিজস্ব জমিতে দুইটি আলাদা এতিমখানা। বিদ্যানন্দ অনাথালয়ে এতিমদের থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনের বিভিন্ন শাখায় বিনামূল্যে গ্রন্থাগার সুবিধা রয়েছে। এসব গ্রন্থাগারে আট হাজারের অধিক বইয়ের সংগ্রহ আছে। এই গ্রন্থাগার গুলো সকাল-সন্ধ্যা খোলা থাকে এবং যে কেউ সেখানে গিয়ে বিনামূল্যে বই পড়তে পারেন। ৭১ টাকায় নারীদের জন্য আবাসিক হোটেলও করেছে বিদ্যানন্দ। ঢাকা সিটি করপোরেশন নির্বাচনের পর ঢাকার অলিগলিতে ছেয়ে যাওয়া পোস্টারগুলোকে সংগ্রহ করে শিক্ষা উপাদান বানানোর অভিনব কৌশল নেয় বিদ্যানন্দ।

এতো কাজ করেও হঠাৎ করে চেয়ারম্যান পদ থেকে সরে যাওয়ার ঘোষণা দিলেন কেন? কিশোর কুমার বললেন, ‘আমি কখনোই সংগঠনে নিজের পদটা আঁকড়ে ধরে রাখেতে চাইনি। আমি চেয়েছি সংগঠনে নতুন নেতৃত্ব আসুক। আমি বলেছিলাম বয়স ৪০ হয়ে গেলে আমি আর সংগঠনের চেয়ারম্যান থাকবো না। যদিও আমার এখনো ৪০ বছর বয়স হয়নি কিন্তু তরুণ নেতৃত্ব আসুক সেটাই চাইছি। তারা নতুন মেধা দিয়ে সংগঠন এগিয়ে নিক।’

শুধুই তরুণ নেতৃত্ব নাকি আর কোনো কারণ আছে? কিশোর কুমার বললেন, ‘কোনো সিদ্ধান্ত মানুষ একটি কারণে নেয় না। অনেকগুলো কারণ থাকে। আমারও আরও বেশ কিছু কারণ আছে।’

অভিযোগ উঠেছে, কিশোর কুমারের ধর্মীয় পরিচয় তুলে প্রায়শই বিদ্যানন্দের ফেসবুক পেজে তাকে গালিগালাজ করা হতো। বিদ্যানন্দের ফেসবুক পেজের ঘোষণায় বলা হয়, প্রবাসী উদ্যোক্তা সশরীরে খুব অল্পই সময় দিতে পারেন। ৯০ ভাগ মুসলিম স্বেচ্ছাসেবকরাই চালিয়ে যান বিশাল কর্মযজ্ঞ। তবুও উদ্যোক্তার ধর্ম পরিচয়ে অনেকেই অপপ্রচার চালায় মিথ্যা তথ্য দিয়ে। আমরা বিষয়টি প্রকাশ করতে চেয়েছিলাম চলমান ক্যাম্পেইনের পরে। কিন্তু কিছুদিন ধরে চলা মাত্রাতিরিক্ত সাম্প্রদায়িক অপপ্রচারে জল ঢালতে খবরটি আজকে শেয়ার করলাম। সে সমস্যাও আশা করি সমাধান হয়ে যাবে।’

এই বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে কিশোর কুমার বলেন, ‘আমি সারাজীবন মানুষ পরিচয়ে বড় হয়ে উঠতে চেয়েছি। বিদ্যানন্দ নামটি দিয়েছেন এক মুসলিম ব্র্যান্ড এক্সপার্ট। “আনন্দের মাধ্যমে বিদ্যা অর্জন” স্লোগানে তিনি এই নাম দিয়েছিলেন। কিন্তু অনেকেই ভাবে কারো নাম থেকে বিদ্যানন্দ নামটি এসেছে। এজন্য আমরা নাম পরিবর্তন করতে চাইলেও স্বেচ্ছাসেবকরা রাজি হননি। কিন্তু গত ছয় মাস ধরে নানাভাবে আমাকে হিন্দু পরিচয় দিয়ে গালিগালাজ করা হয়েছে। এর কোনো শেষ নেই। করোনা সংকট মোকাবিলায় আমরা যখন মার্চে কাজ শুরু করলাম, তখন এর মাত্রা আরও বাড়লো। কোনো কারণ ছাড়া কিছু মানুষ পেজে ধর্ম তুলে গালি দিচ্ছে, এটা আমাকে আহত করতো। এর ফলে মূল কাজটাও বাঁধাগ্রস্ত হচ্ছিল। শুধু সাধারণ মানুষ নয়, কিছু মানুষ দান করার সময়ও হিন্দু পরিচয়টাকে প্রতিবন্ধকতা মনে করতো। এসব দেখে মনে হলো, আচ্ছা তাহলে আমি চেয়ারম্যান পদ থেকে সরে যাই। মানুষের গালিগালাজ বন্ধ হোক। সংগঠনটা এগিয়ে যাক। তবে একটা কথা বলতে চাই। সব ধর্মের মানুষের সহযোগিতায় এতদূর আসা। কিছু মন্দ মানুষ অপপ্রচার করে, সেটা খুবই নগণ্য।’

বাবার সরকারি চাকরিসূত্রে কিশোর বেড়ে উঠেছেন চট্টগ্রামের কালুরঘাটে। পাঁচ ভাই-বোনের মধ্যে কিশোর তৃতীয়। নিম্নবিত্ত পরিবারে জন্ম বলে অবহেলা, বঞ্চনা আর দারিদ্র্যের সংগ্রামে নিজেদের টিকিয়ে রাখাটাই তাদের কাছে দুঃসাধ্য ছিল। বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনের শুরুর গল্প বলতে গিয়ে কিশোর বলেন, ‘২০১৩ সালে ছোট পরিসরে গড়ার পরিকল্পনা নিয়েছিলাম। আমাদের বিদ্যানন্দের প্রথম কর্মসূচি ছিল সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের শিক্ষা প্রদান করা। নারায়ণগঞ্জের এক রেলস্টেশনকে বেছে নেওয়া হয়। প্রথম দিকে বিদ্যানন্দের সব আর্থিক জোগান পেরু থেকে আমিই দিতাম। আর সব কার্যক্রম স্বেচ্ছাসেবকরা পরিচালনা করত। পরে সবার আর্থিক সহায়তায় ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, কক্সবাজারসহ আরও ১২টি এলাকায় যাই।’

২০১৬ সালে সুবিধাবঞ্চিত শিশু, প্রতিবন্ধী ও ষাটোর্ধ কর্মহীন মানুষদের জন্য ‘এক টাকায় আহার’ নামে প্রকল্প চালু করে বিদ্যানন্দ। কিশোর জানালেন, এর আওতায় গত চার বছরে ৪২ লাখ মানুষের মাঝে খাবার বিতরণ করেছেন তিনি। এক টাকায় খাবার বিক্রি করার কারণ হিসেবে বললেন, ‘যারা এই খাবার গ্রহণ করছেন তারা যেন খাবারটিকে দান ভেবে নিজেদের ছোট মনে না করেন, সেজন্যই এক টাকা।’

একই ভাবে ‘এক টাকায় চিকিৎসা’ নামে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে স্বেচ্ছাসেবী চিকিৎসকদের মাধ্যমে স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করছে এ সংগঠন।

কোভিড-১৯ যখন সারাদেশে আতঙ্ক নিয়ে এলো তখন যেন সাধারণ ও নিম্ন আয়ের মানুষের কাছে আশার আলো হয়ে উঠে বিদ্যানন্দ। গনপ‌রিবহ‌ন জীবাণুমুক্ত করল, সমাজের সব শ্রেণীর মানুষের জন্য আহার, চল‌তি প‌থে প‌থি‌কের ক্ষুধা নিবারণ, শহ‌রের রাস্তায় জীবাণুনাশক ছিটা‌নো কিংবা রাস্তার অসহায় প্রাণীকে খাও‌য়ানো থেকে শুরু করে নানা কাজে যুক্ত হয় প্রতিষ্ঠানটির স্বেচ্ছাসেবকরা।

করোনা সংকট মোকাবিলায় এত বিপুল কাজে যুক্ত হওয়ার বিষয়টি মাথায় কীভাবে এলো? কিশোর কুমার বলেন, ‘দেশের বাইরে থাকায় করোনায় কি হতে পারে সেটা বুঝতে পারছিলাম। তাই মার্চেই প্রস্তুতি নেই। শুরুতে বিদ্যানন্দের বাসন্তী গার্মেন্টসে বানানো মাস্ক ও হ্যান্ড স্যানিটাইজার বিভিন্ন এলাকায় বিতরণ করা হয়। মার্চের মাঝামাঝি থেকে জীবাণুনাশক ছিটানো শুরু করি। ঢাকা ও চট্টগ্রামে প্রতিদিন প্রায় নয় হাজার লিটার জীবাণুনাশক ছিটিয়ে দিচ্ছি। এটি বাংলাদেশে জীবাণুনাশক ছিটানোর সবচেয়ে বড় কার্যক্রমগুলোর একটি। এরপর দেখলাম দরিদ্র মানুষের খাবার কষ্ট। আমরা এক লাখ ৮৬ হাজার পরিবারকে এখন পর্যন্ত সাত থেকে দশ দিনের খাবার দিয়েছি। এছাড়া প্রতিদিন বিভিন্নস্থানে ২০ হাজার মানুষকে খাওয়ানো হচ্ছে। আরও অনেক কাজ আছে। আমরা চেষ্টা করেছি যেকোনো ভাবে মানুষের পাশে থাকতে। আমরা মনে করেছি করোনা সংকট মোকাবিলা করা শুধু সরকারের একার কাজ নয়। বিভিন্ন সংগঠন ও ব্যক্তিকে মিলেই কাজটি করতে হবে।’

স্বেচ্ছাসেবক ও কর্মীরা কি আপনার এই পদত্যাগ মেনে নেবে? কিশোর বলেন, ‘আমি জানি না স্বেচ্ছাসেবকরা কেনো আমাকে এতো ভালোবাসে। বিদ্যানন্দকে আজ এই জায়গায় নিয়ে আসার কৃতিত্ব পুরোটাই তাদের। আমাদের সকল স্বেচ্ছাসেবকরাই কোনো না কোনো পেশায় নিয়োজিত; কেউ চাকরিজীবী কিংবা কেউ শিক্ষার্থী। সকলেই নিজ নিজ জায়গা থেকে পরিবর্তনের উদ্দেশ্যে এখানে এসেছেন। আমাদের কাজে প্রচুর অর্থের প্রয়োজন হয়েছে। যেটা দেশ-বিদেশের লাখো মানুষ সম্মিলিতভাবে বহন করছেন। মানুষ আমাদের প্রতি বিশ্বাস রেখেছেন। আর বারবার বলতে চাই, আমাদের স্বেচ্ছাসেবকরাই আমাদের শক্তি। তবে আমি কিন্তু মার্চ মাসেই তাদের বলেছি, আমি চেয়ারম্যান থাকবো না। তবে আমি তো আছি। সবার সঙ্গেই আছি।’

বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনের আয়-ব্যয়ের হিসাব কীভাবে রাখা হয় জানতে চাইলে কিশোর কুমার দাস বলেন, ‘আয়-ব্যয়ের সব টাকার স্বচ্ছ হিসাব রাখা হয়। পাশাপাশি আন্তর্জাতিক খ্যাতি আছে এমন নিরীক্ষা প্রতিষ্ঠান দিয়েও আয়-ব্যয়ের হিসাব যাচাই করা হয়।’

সবাই অনুরোধ করলে চেয়ারম্যান পদ ছাড়ার সিদ্ধান্তটা পুনর্বিবেচনা করবেন কি না জানতে চাইলে কিশোর কুমার বলেন, ‘পদ আঁকড়ে থাকার মানসিকতার এই সমাজে উল্টো পথে হাঁটতে পারার জন্য গর্ব হচ্ছে। আমি নিজেকে প্রতিষ্ঠাতা পরিচয়ে কখনোই গড়ে তুলতে চাইনি। অনেকেই আমার গল্প নানাভাবে তুলে ধরে। বিষয়গুলো আমি এড়িয়ে চলতে চেষ্টা করি। আর পদে কি যায় আসে? আগে চেয়ারম্যান ছিলাম। এখন নিচের দিকের পদে থাকবো। সাংগঠনিক সম্পাদক। কারণ আমি আসলে গোছানোর কাজটা করতে পারি। কাজেই সবাইকে নিয়ে সেই কাজটা করবো। আর পদে কিছু যায় আসে না। চেয়ারম্যান না থাকলেও কিছু যায় আসে না। সমালোচকরা বলবে, বড় বড় কথা বলছে। কিন্তু আমি আসলেই মন থেকে বিশ্বাস করে কথাগুলো বলছি। বিদ্যানন্দ কারো একার নয়, এটা আমাদের সবার। এটা ধর্ম-বর্ণ সব পরিচয়ের ঊর্ধ্বে উঠে সাধারণ মানুষের। এই সংগঠনের জন্য আমি যে কোনো ত্যাগ করতে রাজি আছি। আবারও বলছি আমি বিদ্যানন্দ ছাড়ছি না, পরিচালনা পর্ষদেই থাকছি। শুধু দায়িত্ব পরিবর্তন করার সিদ্ধান্ত জানিয়েছি।’

Comments

The Daily Star  | English

One month of interim govt: Yunus navigating thru high hopes

A month ago, as Bangladesh teetered on the brink of chaos after the downfall of Sheikh Hasina, Nobel Laureate Muhammad Yunus returned home to steer the nation through political turbulences.

8h ago