নোয়াখালীতে কালবৈশাখী ঝড়ে দেড় শতাধিক ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত
কালবৈশাখী ঝড়ের আঘাতে নোয়াখালী সদর ও কবিরহাট উপজেলায় দেড় শতাধিক কাচা ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত ও দুই শতাধিক গাছপালা উপড়ে গেছে। এছাড়া, ভেঙে পড়েছে বিদ্যুতের খুঁটি। আজ বুধবার ভোরে ও সকাল সাতটার এ অঞ্চলে কালবৈশাখী ঝড় আঘাত হানে।
জানা গেছে, বুধবার ভোরে ও সকাল সাতটার দিকে আকস্মিক ঝড়বৃষ্টি শুরু হয়। ঝড়ে নোয়াখালী জেলা সদরের দুইটি ইউনিয়ন ও করিবহাট দুইটি দেড় শতাধিক কাচা ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়। উপড়ে গেছে দুই শতাধিক গাছ।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, সদর উপজেলার আন্ডারচর ইউনিয়নের পূর্ব মাইজচরা, পশ্চিম মাইজচরা ও আন্ডারচর গ্রামে শতাধিক বসতঘর বিধ্বস্ত হয়। এছাড়াও কবিরহাট ধানসিড়ি ও সুন্দলপুরে অর্ধ শতাধিক ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে। উপড়ে পড়েছে কয়েকশ গাছপালা। ভেঙে পড়েছে পল্লী বিদ্যুতের খুঁটি।
সদর উপজেলার আন্ডারচর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলী হায়দার বক্স জানান, সকাল সাতটায় তার ইউনিয়নের ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া কালবৈশাখী ঝড়টি পূর্ব মাইজচরা, পশ্চিম মাইজচরা ও আন্ডারচর গ্রামে এই তিনটি গ্রামে বেশি আঘাত হানে। এতে শতাধিক বসতঘর বিধ্বস্ত হয়। এছাড়ও, আরও অনেক বসতঘর আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর তালিকা তৈরির কাজ চলছে।
সদর উপজেলার এওয়াজবালিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুল জাহের বলেন, ‘কালবৈশাখী ঝড়ে ইউনিয়নের পশ্চিম এওয়াজবালিয়া, চর করমুল্লা গ্রামে ২০ থেকে ৩০ টি কাচা ঘর বিধ্বস্ত হয় এবং কয়েকশ গাছপালা উপড়ে পড়েছে, ভেঙে পড়েছে বিদ্যুতের খুঁটি।’
কবিরহাট উপজেলার ধানসিঁড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুল মান্নান মুনাফ জানান, কালবৈশাখী ঝড়ের আঘাতে তার ইউনিয়নের উত্তর জগদানন্দ, নলুয়া, নবগ্রাম এলাকায় ৩০ থেকে ৪০ টি কাচা ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে এবং বেশ কিছু গাছপালা উপড়ে গেছে ও বিদ্যুতের খুঁটি ভেঙে পড়েছে।
কবিরহাট উপজেলার সুন্দলপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি নুরুল আমিন রুমি জানান, কালবৈশাখী ঝড়ে তার ইউনিয়নের পশ্চিম লামচি, উত্তর লামচি, পূর্ব রাজুরগাঁও, পশ্চিম রাজুরগাঁও ও ছগিরপাইক গ্রামে অনেকগুলো ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে এবং গাছপালা উপড়ে পড়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর তালিকা প্রস্তুতির কাজ চলছে। তালিকা প্রণয়ন শেষে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার মাধ্যমে জেলা ত্রাণ শাখায় প্রেরণ করা হবে।
কবিরহাট উপজেলা পল্লী বিদ্যুতের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার গোপাল চন্দ্র শীব জানান, কালবৈশাখী ঝড়ে কবিরহাট উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে গাছপালা ভেঙে পড়ে বিদ্যুতের তার ছিড়ে যায়, এতে কয়েকটি ইউনিয়নের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। এছাড়াও কালবৈশাখী ঝড়ে জেলার বেগমগঞ্জ সুবর্ণচর ও সদর উপজেলায় ৭ টি পল্লী বিদ্যুতের খুঁটি ভেঙে পড়েছে।
ভেঙে যাওয়া খুঁটিগুলোর মেরামতের কাজ চলছে বলে জানান পল্লী বিদ্যুৎ নোয়াখালী অঞ্চলের জেনারেল ম্যানেজার (জিএম) প্রকৌশলী মো. গোলাম মোস্তফা।
সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার আরিফুর রহমান সর্দার কালবৈশাখী ঝড়ে ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হওয়ার খবর শুনেছেন বলে জানান। তবে ক্ষতিগ্রস্থ বাড়িঘরের সংখ্যা তিনি বলতে পারেননি। স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ও প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার মাধ্যমে খোঁজ খবর নেবেন।
কবিরহাট উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাজিয়া পারভীন বলেন, ‘কালবৈশাখী ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্থ বাড়ীঘর সম্পর্কে ধানসিঁড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মুঠোফোনে তাকে বিষয়টি জানিয়েছেন। অন্য কোনো ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বুধবার বিকেল পর্যন্ত তাকে এ বিষয়টি অবহিত করেননি।’
Comments