‘চীনে যে করোনাভাইরাস ছড়িয়েছে তা ইউরোপ, যুক্তরাষ্ট্রে ছড়ায়নি’
নতুন করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব ২০১৯ সালের অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহে শুরু হয়ে থাকতে পারে বলে ধারণা করছেন এক দল গবেষক।
গত মঙ্গলবার বৈজ্ঞানিক জার্নাল ইনফেকশন, জেনেটিকস অ্যান্ড ইভ্যালুশেন-এ প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সার্স-কোভ-২ ভাইরাসটি বনরুই থেকে ৬ অক্টোবর থেকে ১১ ডিসেম্বরের মধ্যে কোনো একটি সময়ে মানুষের মধ্যে সংক্রমিত হয়েছে।
দ্য সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট জানায়, জানুয়ারি থেকে বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলের ৭ হাজারেরও বেশি জিনোম সিকোয়েন্স বিশ্লেষণ করে এই ফলাফল পাওয়া গেছে। মিউটেশনের মাধ্যমে ভাইরাসটির বিবর্তন যাচাই করে সংক্রমণের শুরুর বিন্দুতে পৌঁছাতে চেষ্টা করেন ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডন ও ইউনিভার্সিটি অব রিইউনিয়ন আইল্যান্ডের গবেষকরা।
তারা করোনাভাইরাসের প্রধান বিবর্তনগুলো শনাক্ত করতে সক্ষম হন। মানুষের দেহে প্রবেশের পরেও ভাইরাসটির মিউটেশন ঘটেছে বলে জানান তারা।
পাশাপাশি, গবেষকরা সরকারি তথ্যসহ অন্যান্য সূত্র ধরে করোনা আক্রান্ত রোগীর তথ্য সংগ্রহ করেন।
এর আগে, সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টের প্রতিবেদনে গত ১৭ নভেম্বর প্রথম করোনা রোগী শনাক্তের সংবাদ প্রকাশিত হয়েছিল।
জানুয়ারিতে চীনের করোনা আক্রান্তদের তথ্য ও ভাইরাসটির নমুনা সংগ্রহ করে সাংহাই ল্যাব থেকে জিনোম সিকোয়েন্স নিয়ে একটি গবেষণা প্রকাশিত হয়েছিল। বিজ্ঞানীরা ওই গবেষণার পাশপাশি অন্যান্য জিনোম সিকোয়েন্স যাচাই করে সার্স-কোভ-২ বাদুড় থেকে মধ্যবর্তী কোনো হোস্টের মাধ্যমে নভেম্বর মাসে মানবদেহে ছড়ানোর কথা জানিয়েছেন।
সর্বশেষ গবেষণাটিতে ভাইরাসটির ৭ হাজার ৭১০টি জিনোম অ্যাসেম্বলি নির্বাচন করে ৭ হাজার ৬৬৬টি ডেটা সেটের ওপর সেগুলো বিশ্লেষণ করে সময়ের সঙ্গে এর জিনোমিক পরিবর্তন যাচাই করা হয়েছে।
করোনাভাইরাসের বিস্তার কীভাবে হয়েছে তা বুঝতে হলে প্রথম আক্রান্তের (পেশেন্ট জিরো) সম্পর্কে জানা প্রয়োজন। বিশ্লেষণ থেকে প্রাথমিক পর্যায়ে ভাইরাসটির সংক্রমণ সম্পর্কে জানার চেষ্টা করেছেন গবেষকরা।
সম্প্রতি, ডিসেম্বর মাসেই ফ্রান্সে করোনা আক্রান্তের সংবাদ পাওয়া গেছে। রাজধানী শহর প্যারিসের কাছে গত ২৭ ডিসেম্বর একজনের নিউমোনিয়া শনাক্ত হয়েছিল। কিছুদিন আগে সেই রোগীর নাক ও গলা থেকে সংগ্রহ করা লালা পরীক্ষা করে কোভিড-১৯ পজিটিভ পাওয়া গেছে। এর অর্থ হলো, আগে যা ধারণা করা হচ্ছিল তার প্রায় একমাস আগেই ইউরোপে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ হয়েছে।
এর আগে ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের এক দল গবেষক জানায়, চীনে ভাইরাসটির যে সংস্করণ ছড়িয়েছে তা ইউরোপ কিংবা যুক্তরাষ্ট্রে ছড়ায়নি।
Comments