হাতিয়ায় করোনা উপসর্গ নিয়ে নারীর মৃত্যু, রোগনির্ণয় কেন্দ্র লকডাউন
নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলায় করোনার উপসর্গ নিয়ে ২০ বছর বয়সী এক নারীর মৃত্যু হয়েছে। তিনি সেখানকার একটি রোগনির্ণয় কেন্দ্রে ল্যাব সহকারী হিসেবে কর্মরত ছিলেন। যে কারণে সেই কেন্দ্র লকডাউন করা হয়েছে।
আজ শুক্রবার সকাল ৮টার দিকে হাতিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে তার মৃত্যু হয়। এ নিয়ে জেলায় আট দিনে করোনা উপসর্গ নিয়ে নয় জনের মৃত্যু হলো।
বিষয়টি দ্য ডেইলি স্টারকে নিশ্চিত করেছেন নোয়াখালীর সিভিল সার্জন ডা. মো. মোমিনুর রহমান।
হাতিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডা. নিজাম উদ্দিন মিজান বলেন, ‘হাতিয়া পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের ওই নারী পৌর সদরের একটি রোগনির্ণয় কেন্দ্রে ল্যাব সহকারী হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তার বড় বোনও একই ল্যাবে কাজ করেন। গত ৭-৮ দিন ধরে তিনি জ্বর, গলাব্যথা, নাকের সমস্যা ও শ্বাসকষ্টে ভুগছিলেন। গতকাল রাতে হঠাৎ তার শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটে। আজ সকালে পরিবারের লোকজন অচেতন অবস্থায় তাকে হাতিয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগে নিয়ে আসে। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে চিকিৎসাসেবা দিয়ে সকাল ৭টার দিকে হাসপাতালে ভর্তি করে। সকাল ৮টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।’
হাতিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. নাজিম উদ্দিন বলেন, ‘খবর পেয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল টিম মৃত নারীর, তার বড় বোন ও পরিবারের আরও চার জনের নমুনা সংগ্রহ করেন। একইসঙ্গে মৃত নারী যে রোগনির্ণয় কেন্দ্রে কাজ করতেন, সেটি ও তার বাড়ি লকডাউন করে দেওয়া হয়।’
‘এ ঘটনায় হাতিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ডাক্তার, নার্স ও স্টাফসহ চার জনকে এবং ডায়াগনস্টিক সেন্টারের ছয় জনকে হোম কোয়ারেন্টিনে পাঠানো হয়েছে। মৃত নারীর ও অন্যান্যদের নমুনা পরীক্ষার ফলাফল হাতে আসার আগ পর্যন্ত তারা কোয়ারেন্টিনে থাকবেন’, বলেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, ‘মৃত নারী যে রোগনির্ণয় কেন্দ্রে কর্মরত ছিলেন, সেখানে কিছুদিন আগে করোনায় আক্রান্ত এক ব্যক্তি এসেছিলেন। তার বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা ওই রোগনির্ণয় কেন্দ্রেই করা হয়েছিল। ধারণা করা হচ্ছে, ওই ব্যক্তির কাছ থেকেই মৃত নারী সংক্রমিত হয়ে থাকতে পারেন। করোনা পরীক্ষার ফল পেলে বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া যাবে।’
হাতিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও উপজেলা করোনাভাইরাস প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি মো. রেজাউল করিম ঘটনার বলেন, ‘মৃত নারী যে বাড়িতে থাকতেন, সেই বাড়িটি লকডাউন করে দেওয়া হয়েছে। ইসলামিক ফাউন্ডেশনের লোকজনের মাধ্যমে সরকারি নির্দেশনা অনুসরণ করে মৃত নারীর দাফনের ব্যবস্থা করা হয়েছে।’
Comments