যুক্তরাষ্ট্রে এপ্রিল মাসে চাকরি হারিয়েছেন ২ কোটি ৫ লাখ মানুষ

করোনাভাইরাস মহামারিতে যুক্তরাষ্ট্রে আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে বেকারত্বের সংখ্যা। দেশটিতে গত এপ্রিল মাসেই চাকরি হারিয়েছেন ২ কোটি ৫ লাখ মানুষ।
USA-1.jpg
ছবি: সংগৃহীত

করোনাভাইরাস মহামারিতে যুক্তরাষ্ট্রে আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে বেকারত্বের সংখ্যা। দেশটিতে গত এপ্রিল মাসেই চাকরি হারিয়েছেন ২ কোটি ৫ লাখ মানুষ।

যুক্তরাষ্ট্রের শ্রম মন্ত্রণালয় বলছে, ১৯৩৯ সালে সরকার তথ্য পরিসংখ্যান চালু করার পর এ বছরই বেকারত্বের হার সবচেয়ে বেশি।

সিএনএন জানায়, এর আগে মার্চ মাসে যুক্তরাষ্ট্রে চাকরি হারিয়েছিলেন অন্তত ৮ লাখ ৭০ হাজার মানুষ। এপ্রিল মাসে এ সংখ্যা প্রায় দ্বিগুণেরও বেশি বেড়েছে।

২০০৮ সালে অর্থনৈতিক মন্দার সময় যারা চাকরি ও ঘরবাড়ি হারিয়েছিলেন, এ মুহূর্তে তারা সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে আছেন। অচলাবস্থা থেকে ফিরতে তাদের প্রায় কয়েক বছর সময় লেগেছিল। ১০ বছরে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে আরও ২ কোটি ২৮ লাখ মানুষের কর্মসংস্থান তৈরি হয়। করোনার আঘাতে মাত্র দুই মাসের মধ্যে ১০ বছরের এই কর্মসংস্থান কাঠামো ভেঙে গেছে। অসংখ্য মানুষ যাদের ভাগ্য ফিরতে শুরু করেছিল, তারা আবারও অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে ঝুঁকে পড়েছেন। যুক্তরাষ্ট্রে এ মহামারি কেবল জনস্বাস্থ্য সংকট নয়, অর্থনীতিকেও প্রায় ১০ বছর পিছিয়ে দিয়েছে।

মার্কিন শ্রম পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিএলএস) হিসাব অনুযায়ী, এপ্রিলে বেকারত্বের হার বেড়েছে ১৪ দশমিক ৭ শতাংশ, যা দেশটির ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি। এর আগে ১৯৩৩ সালে মহামন্দার সময় বেকারত্বের হার ছিল ২৪ দশমিক ৯ শতাংশ।

করোনা থেকে বাঁচতে গত মার্চ মাসে বাড়িতে থাকার নির্দেশনা দেয় যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় সরকার। হঠাৎ করেই বন্ধ হয়ে যায় ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। কয়েক কোটি মানুষ সেসময় অনির্দিষ্টকালের জন্য কর্মবিরতিতে চলে যান। সরকারি হিসাব বলছে, বিনোদন ও পর্যটন খাতের প্রায় ৭৭ লাখ মানুষ ও খুচরা ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে প্রায় ২১ লাখ মানুষ ইতোমধ্যেই চাকরি হারিয়েছেন।

এমনকি হাসপাতালে রোগীদের উপচেপড়া ভিড়ের মাঝেও স্বাস্থ্যকর্মীদের ছাটাই করা হয়েছে। দন্ত চিকিৎসাসহ অন্যান্য বিভাগের প্রায় ১২ লাখ স্বাস্থ্যকর্মী কাজ হারিয়েছেন। খাদ্য ও পানীয়ের দোকান, যা এই সংকটেও প্রয়োজনীয় সে খাতেও প্রায় ৪২ হাজার কর্মী চাকরি হারিয়েছেন। এ সংখ্যার বাইরে বাস্তব চিত্র আরও ভয়ংকর বলে মনে করছেন অর্থনীতিবিদরা।

কারণ উবার কিংবা লিফটের মতো অনেক স্বতন্ত্র প্রতিষ্ঠান যুক্তরাষ্ট্রে চালু আছে, যাদেরকে সরকারি সমীক্ষায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি।

বিএলএস বলছে, অনেকেই সাময়িকভাবে কর্মবিরতিতে আছেন। ছয় মাসের মধ্যেই তারা কাজে ফিরে যেতে পারবেন। হিসাব অনুযায়ী, মার্চ মাসে কর্মবিরতিতে ছিলেন ১৮ লাখ মানুষ। এক মাস পর এপ্রিলে এ সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ১ কোটি ৮০ লাখ।

অর্থনীতিবিদরা বলছেন, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান স্বাভাবিক কার্যক্রমে ফিরে এলে অনেকেই আবার কাজ ফিরে পাবেন। কিন্তু, সেজন্য কয়েকমাস এমনকি কয়েক বছরও লেগে যেতে পারে।

এদিকে, সামাজিক দূরত্বের নিয়মের কারণে বিনোদন ও পর্যটন খাত একেবারেই ধ্বংসের মুখে বলা চলে। বিনোদন ও পর্যটন খাতের স্বাভাবিক অবস্থা ফিরে আসতে দীর্ঘদিন লাগতে পারে বলে মনে করছেন মার্কিন অর্থনীতিবিদরা।

Comments

The Daily Star  | English

Central bank not blocking any business accounts: Governor 

BB is not blocking or interfering with the accounts of any businesses, regardless of their political affiliations, said BB Governor Ahsan H Mansur

43m ago