প্রশিক্ষণদানের ৫ মাস পরেও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে দেওয়া হয়নি সরকারি অনুদান

পাঁচ মাস আগে পেশাগত দক্ষতা বৃদ্ধির প্রশিক্ষণ দেওয়া হলেও, সুবিধাভোগী প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে এখনো দেওয়া হয়নি সরকারি বরাদ্দের অনুদান। নিয়ম অনুযায়ী প্রশিক্ষণদানের পরই এ অনুদান তাদের হাতে তুলে দেওয়ার কথা ছিল। দীর্ঘদিনেও সরকারি বরাদ্দের অনুদান না পেয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর অনেকেই।
Lalmonirhat marginal people.jpg
লালমনিরহাটের সুবিধাভোগী প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর এক সদস্য। ছবি: স্টার

পাঁচ মাস আগে পেশাগত দক্ষতা বৃদ্ধির প্রশিক্ষণ দেওয়া হলেও, সুবিধাভোগী প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে এখনো দেওয়া হয়নি সরকারি বরাদ্দের অনুদান। নিয়ম অনুযায়ী প্রশিক্ষণদানের পরই এ অনুদান তাদের হাতে তুলে দেওয়ার কথা ছিল। দীর্ঘদিনেও সরকারি বরাদ্দের অনুদান না পেয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর অনেকেই।

গত বছরের ডিসেম্বরে লালমনিরহাটের পাঁচ উপজেলা ও দুই পৌরসভার এক হাজার ৭০০ জন নরসুন্দর, রবিদাস, কামার, কুমার, কুটিরশিল্পী ও হস্তশিল্পী সমাজসেবা অধিদপ্তরের অধীনে তিন দিনের পেশাগত দক্ষতা বৃদ্ধির প্রশিক্ষণে অংশ নেন। প্রশিক্ষণ শেষে পেশার উন্নয়নে প্রত্যেক সুবিধাভোগী প্রান্তিকজন ১৮ হাজার করে সরকারি অনুদানের টাকা পাওয়ার কথা।

আদিতমারী উপজেলার ভাদাই বাজারের জুতা সেলাইয়ের কাজে নিয়োজিত প্রেমচাঁদ রবিদাস জানান, প্রশিক্ষণের পর তিনি সরকারি অনুদানের ১৮ হাজার টাকার জন্য অনেকবার সমাজসেবা অফিসে গেছেন, কিন্তু আজ দেবে কাল কাল দেবে বলে শুধু ঘুরিয়েছে। এখন ওই অনুদানের জন্য সমাজসেবা অফিসে যাওয়া বাদই দিয়েছেন।

করোনা দুর্যোগকালে সরকারি অনুদানের এই টাকাটা পেলে তাদের অনেক উপকারে আসতো বলেও জানান তিনি।

লালমনিরহাট সদরের কালমাটি গ্রামে জুতা সেলাইয়ের কাজে নির্ভরশীল ধনেশ্বর রবিদাস জানান, টাকার অভাবে ছোট দোকান মেরামত করতে পারছেন না। পাঁচ মাসেও সরকারি বরাদ্দের অনুদান না পেয়ে তারা হতাশ। সমাজসেবা থেকে এ টাকা পাবেন কী না, এ নিয়ে তাদের মধ্যে সন্দেহ কাজ করছে। টাকাটা পেলে নিজেদের পেশাগত কাজে লাগাতে পারবেন এই দুর্যোগে।

লালমনিরহাট শহরের কলেজ রোডের নরসুন্দর মিলন চন্দ্র শীল জানান, করোনার কারণে তাদের ব্যবসা পুরো অচল হয়ে পড়েছে। দোকান খুলতে পারছেন না। এই দুর্যোগকালে সরকারি বরাদ্দের অনুদানটা পেলে অনেক উপকারে আসতো।

শহরের পুরান বাজার এলাকার আরেক নরসুন্দর রোস্তম আলী জানান, সরকারি বরাদ্দের অনুদান কবে পাবেন, সেটা এখন তাদের জানার বাইরে। সমাজসেবা অফিসে যোগাযোগ করতে করতে ক্লান্ত হয়ে গেছেন।

আদিতমারী উপজেলার সারপুকুর কুমারপাড়া গ্রামের কুমার ননী গোপাল পাল জানান, পেশাগত দক্ষতা বৃদ্ধির প্রশিক্ষণ নিয়েছেন, কিন্তু পেশার মান উন্নয়নে সরকারি বরাদ্দের টাকা আজও পাননি। আর পাবেন কী না, তাও জানেন না।

আদিতমারী সমাজসেবা কর্মকর্তা রওশানুল মণ্ডল জানান, সরকারি বরাদ্দের অনুদানের চেক প্রস্তুত। শুধু জেলা অফিসের নির্দেশনার অপেক্ষায় রয়েছেন তারা।

কালীগঞ্জ উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা সুকান্ত সরকার বলেন, ‘উপজেলার ৪০০ জন সুবিধাভোগী প্রান্তিকজনের মধ্যে ১১০ জনকে চেক হস্তান্তর করে জেলা অফিসের নির্দেশে অবশিষ্টদের বিতরণ বন্ধ রাখা হয়েছে। জেলা অফিসের নির্দেশ পেলে বাকিদের হাতে অনুদানের চেক তুলে দেওয়া হবে।’

জেলা সমাজসেবা অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক অনিরুদ্ধ রায় দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘সুবিধাভোগী প্রান্তিকজনের হাতে সরকারি বরাদ্দের অনুদান তুলে দেওয়ার প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছিল, কিন্তু বিতরণের আগেই করোনা পরিস্থিতির কারণে পিছিয়ে গেছে।’

পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে আনুষ্ঠানিকভাবে অনুদানের চেক তাদের হাতে তুলে দেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।

Comments

The Daily Star  | English

One month of interim govt: Yunus navigating thru high hopes

A month ago, as Bangladesh teetered on the brink of chaos after the downfall of Sheikh Hasina, Nobel Laureate Muhammad Yunus returned home to steer the nation through political turbulences.

10h ago