হিলিতে চালু হলো ১ টাকার বাজার
দিনাজপুরের হাকিমপুর উপজেলায় চালু করা হয়েছে এক টাকার বাজার।
করোনাভাইরাসের সংক্রমণরোধে এই লকডাউনের কারণে ঘর থেকে বের হতে ও কাজে যেতে না পারায় কর্মহীন হয়ে বিপাকে পড়েছেন খেটে খাওয়া নিম্ন আয়ের অসহায় দুঃস্থ মানুষ।
তাদের জন্য এক টাকার বাজার নিয়ে তাদের পাশে দাঁড়িয়েছে উপজেলার বিভিন্ন স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের সমন্বয়ে গঠিত হাকিমপুর ফাউন্ডেশন। যেখান থেকে এক টাকা দিয়ে খাবারের প্রয়োজনীয় পণ্য কিনতে পারবেন।
এক টাকার বাজারের এমন ব্যবস্থা স্বস্তি এনেছে অনেক অসহায় দুঃস্থ মানুষের মধ্যে।
হিলি চেকপোস্ট, বালুরচর বস্তি, চুড়িপট্টি ও আদিবাসীপাড়াসহ সেসব এলাকায় গরীব, অসহায় ও সুবিধাবঞ্চিত মানুষজনের বসবাস, সেসব এলাকায় এই এক টাকার ভ্রমমাণ দোকান নিয়ে গিয়ে সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিতের মাধ্যমে হাকিমপুর ফাউন্ডেশনের সদস্যরা তাদের মাঝে পণ্য বিক্রি করছেন।
এক টাকার বিনিময়ে প্রত্যেককে দেওয়া হচ্ছে- এক কেজি চাল, আড়াইশ গ্রাম পেঁয়াজ, আড়াইশ গ্রাম আলু, বিভিন্ন ধরনের শাক ও মিষ্টি কুমড়া।
হাকিমপুর ফাউন্ডেশন ইফতার সামগ্রীও বিতরণ করছে।
স্থানীয় অধিবাসী গোলজার হোসেন জানান, কাজ করেই সংসার চলত তার। কিন্তু করোনাভাইরাসের কারণে কাজ না থাকায় তার কোনো আয় হচ্ছে না। আয় রোজগার না থাকায় পরিবার পরিজন নিয়ে বিপাকে পড়েছেন তিনি। যে ত্রাণ/খাবার দেওয়া হচ্ছে তা চাহিদার তুলনায় অপ্রতুল।
তিনি বলেন, ‘এই এক টাকার বাজার আমার সব সমস্যার সমাধান করেছে। এমন দোকান আমাদের জন্য আশীর্বাদ। আমরা প্রতিদিন এই দোকান থেকে এক টাকার বিনিময়ে খাবার কিনছি। যা দিয়ে ছেলে-মেয়ে নিয়ে কোনো রকমে জীবিকা নির্বাহ করছি। প্রতিদিন বিকেলে বস্তিতে ভ্যানে করে এসব পণ্য নিয়ে আসলে এক টাকা দিয়ে লাইনে দাঁড়িয়ে সেই দোকান থেকে পণ্য কিনছি।’
বালুচরের নাজমা বেগম বলেন, ‘খেটে খাওয়া গরীব অসহায় মানুষের জন্য এই এক টাকার বাজার খুব ভালো হয়েছে।’
হাকিমপুর ফাউন্ডেশনের সভাপতি মেহেদি হাসান সোহাগ দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘হাকিমপুরসহ দেশের বিভিন্ন স্কুল ও কলেজের ৬০ জন ছাত্র-ছাত্রীদের নিয়ে এই স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন গঠন করা হয়েছে। গত ২৬ মার্চ থেকেই তারা করোনা সম্পর্কে মানুষকে সচেতন করার পাশাপাশি তাদের মাঝে হ্যান্ড স্যানিটাইজার, সাবান ও খাদ্যসামগ্রী বিতরণ কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। পৌর মেয়র জামিল হোসেন চলন্তসহ বিভিন্ন জনের সহযোগিতায় এই কার্যক্রম ধারাবাহিকভাবে করে আসছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘রমজানে শুরু থেকে নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য ইফতার সামগ্রী বিতরণ করা হচ্ছে। সেই সঙ্গে নিম্ন আয়ের মানুষের কথা চিন্তা করে এক টাকার বিনিময়ে মানুষের মাঝে একবেলার খাবারের প্রয়োজনীয় পণ্য সরবরাহ করার উদ্দেশ্যে আমাদের হাকিমপুর ফাউন্ডেশন কাজ করছে।’
মেহেদি হাসান সোহাগ বলেন, ‘হিলির বিভিন্ন বস্তিসহ যেসব এলাকায় গরীব অসহায় দুঃস্থ মানুষ রয়েছে, আমরা সেসব বস্তি ও গ্রামে ভ্যানে করে পণ্য নিয়ে গিয়ে তাদের মাঝে এক টাকার বিনিময়ে এসব পণ্য বিক্রি করছি। যতদিন পর্যন্ত করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হবে ততদিন পর্যন্ত আমাদের এই কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।’
Comments