ধানের জমিতে হাঁটু পানি

বৃষ্টির হাঁটু পানি জমে যাওয়ায় ধান কাটা নিয়ে বিপাকে পড়েছেন যশোরের চৌগাছা উপজেলার কৃষকরা। করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে এমনিতেই শ্রমিক সংকট তীব্র হয়েছে। এই অবস্থায় দ্রুততম সময়ে ফসল ঘরে তোলা সম্ভব না হলে বড় ধরনের ক্ষতির মুখ দেখতে হবে কৃষকদের।
Benapole_Paddy_9May2020
ছবি: সংগৃহীত

বৃষ্টির হাঁটু পানি জমে যাওয়ায় ধান কাটা নিয়ে বিপাকে পড়েছেন যশোরের চৌগাছা ও ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার কৃষকরা। করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে এমনিতেই শ্রমিক সংকট তীব্র হয়েছে। এই অবস্থায় দ্রুততম সময়ে ফসল ঘরে তোলা সম্ভব না হলে বড় ধরনের ক্ষতির মুখ দেখতে হবে কৃষকদের।

চৌগাছা উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্র জানায়, চলতি মৌসুমে যশোর পৌর এলাকা ও ১১টি ইউনিয়নে ১৭ হাজার ৮২০ হেক্টর জমিতে ১ লাখ ছয় হাজার ৯২০ মেট্রিক টন বোরো ধান উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল। তবে বৈরী আবহাওয়ার কারণে লক্ষ্যমাত্রা পূরণ নাও হতে পারে— এমন আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। গত কয়েক দিনের বৃষ্টিতে শত শত হেক্টর জমিতে হাঁটু পানি জমে গেছে। এর আগেই ঝড়ো বাতাসে কোথাও কোথাও ধানগাছ নুয়ে পড়ে।

উপজেলার চাঁদপাড়া গ্রামের কৃষক আবু সালাম বলেন, ‘বৃষ্টির কারণে এক বিঘা জমির ধান ঘরে তুলতে অতিরিক্ত চার থেকে পাঁচ হাজার টাকা খরচ হবে। মণ প্রতি এক হাজার টাকার উপরে ধান বিক্রি করতে না পারলে লোকসান হবে। একই সমস্যার কথা জানালেন ওই এলাকার কৃষক হোসেন কারিগর, রেজাউল, জাকির হোসেনসহ কয়েকজন।’

সিংহঝু‌লি গ্রা‌মের সা‌বের আলী সরদার ব‌লেন, ‘জমির দিকে তাকালেই চোখ ভিজে যাচ্ছে। ধান হয়তো অধিকাংশটাই কে‌টে আনা যা‌বে। কিন্তু গো-খা‌দ্যের চরম সংকট দেখা দে‌বে।’

হুদাফ‌তেপুর গ্রা‌মের মাওলানা আলী আকবর ব‌লেন, ‘ধান চা‌ষে ক্রমাগত লোকসান গুন‌তে গুন‌তে গত বছর ২০ বিঘা জ‌মি‌তে মা‌ছের ঘের ক‌রে‌ছি। এ বছর যে ধান চাষ ক‌রে‌ছি, তাও পা‌নি‌তে তলিয়ে যাচ্ছে। প্র‌তি‌দিন বৃ‌ষ্টি হ‌চ্ছে। শ্র‌মিক পা‌চ্ছি না।’

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রইচ উদ্দীন বলেন, ‘আমরা কৃষকদের আগে থেকেই আবহাওয়ার পূর্বাভাস জানিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছি। বেশির ভাগ কৃষকই পশু খাদ্যের জন্য পাকা ধানের শুকনো গাছ সংগ্রহ করেন। বৈরী আবহাওয়ার কারণে এ বছর তাদের শুধু ধান সংগ্রহ করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।’

ঝিনাইদহে জমির কাটা ধান পানির নিচে

শুক্রবার রাতের বৃষ্টিতে ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার শত শত একর জমির কাটা ধান তলিয়ে গেছে। কৃষি শ্রমিকের সংকটের মধ্যে এই ধান নিয়ে বিপাকে পড়েছেন কৃষকরা। চোখের সামনেই নষ্ট হয়ে যাচ্ছে কষ্টে উৎপাদিত ধান।

উপজেলা কৃষি অফিসের তথ্যমতে, মহেশপুর উপজেলায় এ বছর বোরো ধানের আবাদ হয়েছে ১৭ হাজার ৪৮৫ হেক্টর জমিতে। তেমনি ভাবে ফলনও ভালো হয়েছে।

মহেশপুর উপজেলার নেপা গ্রামের কৃষক মোসলেম হোসেন ও মিজানুর রহমান জানান, বৃহস্পতিবার সকালে তারা সবাই দুই-তিন বিঘা করে জমির ধান কেটেছেন। পরের রাতের বৃষ্টিতে সব ধান এখন পানির নিচে।

তারা জানান, এমনিতেই বাজারে ধানের দাম কম তার পর খড় বাবদ বিঘা প্রতি তিন থেকে চার হাজার টাকা লোকসান হবে। এ অবস্থায় সময় মতো ধান শুকিয়ে ঘরে না তুলতে পারলে ওই ধান গবাদি পশুকে খাওয়ানো ছাড়া আর কোনো কাজে আসবে না।

Comments

The Daily Star  | English

How Islami Bank was taken over ‘at gunpoint’

Islami Bank, the largest private bank by deposits in 2017, was a lucrative target for Sheikh Hasina’s cronies when an influential business group with her blessing occupied it by force – a “perfect robbery” in Bangladesh’s banking history.

8h ago