সেশনজট কাটাতে ছুটি কমানোর পরিকল্পনা ঢাবির

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের লোগো। প্রতীকী ছবি: স্টার
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের লোগো। প্রতীকী ছবি: স্টার

করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবের কারণে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) চলমান অনির্দিষ্টকালের বন্ধের কারণে যে একাডেমিক ক্ষতি হয়েছে, তা পুষিয়ে নিতে অন্যান্য ছুটি কমানোর পরিকল্পনা করছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

একাডেমিক ক্ষতি পুষিয়ে নিতে কার্যক্রম পুনরায় শুরু করার পর অতিরিক্ত ক্লাসের ব্যবস্থা করার বিষয়েও চিন্তা করছে তারা।

এসব বিষয় বিবেচনায় রেখে ঢাবি উপাচার্য অধ্যাপক মো. আখতারুজ্জামান আগামীকাল সোমবার ডিনদের নিয়ে আলোচনা জন্য একটি সভা করবেন বলে জানিয়েছেন দুটি অনুষদের ডিন।

৮ মার্চ দেশে প্রথম করোনাভাইরাস শনাক্ত হওয়ার খবর প্রকাশের এক সপ্তাহ পর ঢাবি কর্তৃপক্ষ ২৮ মার্চ পর্যন্ত সকল একাডেমিক কার্যক্রম স্থগিত করে। পরে এই স্থগিতাদেশ অনির্দিষ্টকালের জন্য বাড়ানো হয়। এর ফলে অনেক বিভাগের মিডটার্ম পরীক্ষা বাতিল করতে হয়।

বেশ কিছু বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের জন্য অনলাইন ক্লাস পরিচালনা করছে। কিন্তু, ঢাবিসহ অন্যান্য সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো ইন্টারনেট এবং ইলেকট্রনিক গেজেটসহ বিভিন্ন সমস্যার কারণে এখনও অনলাইন ক্লাস চালু করতে পারেনি। ঢাবির কয়েকটি অনুষদ পরীক্ষামূলকভাবে অনলাইন ক্লাস নিচ্ছে।

ঢাবির বিশ্ব ও পরিবেশ বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক এএসএম মাকসুদ কামাল দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘আমরা ছুটি কমিয়ে আনা, সাপ্তাহিক ছুটিতে (শুক্র ও শনিবার) ক্লাস নেওয়া এবং বিশ্ববিদ্যালয় পুনরায় চালু হওয়ার পরে অতিরিক্ত ক্লাসের ব্যবস্থা করার কথা ভাবছি।’

অনলাইন ক্লাস সম্পর্কে তিনি জানান, তারা একটি সমীক্ষা চালাচ্ছেন এটা জানতে যে, শিক্ষার্থীদের কাছে প্রয়োজনীয় গেজেট, ইন্টারনেটের সহজলভ্যতা এবং ইন্টারনেট কেনার আর্থিক সক্ষমতা আছে কী না। আগামীকাল সোমবার এ সমীক্ষার ফলাফল জানতে পারবেন বলেও জানান তিনি।

অধ্যাপক মাকসুদ কামাল বলেন, ‘আরেকটি বড় চ্যালেঞ্জ হলো অনলাইনে বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থীর সঙ্গে শিক্ষকদের সংযুক্ত করা। এ ছাড়া আমাদের কিছু শিক্ষকও অনলাইনে ক্লাস নিতে অভ্যস্ত নন। আমরা সামগ্রিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধি অনুসরণ করে সিদ্ধান্ত নেব।’

তিনি জানান, তারা সমীক্ষার সময় শিক্ষার্থীদের কাছে তাদের আর্থিক এবং মানসিক অবস্থা সম্পর্কে প্রশ্ন করছেন। যাতে প্রয়োজনে বিশ্ববিদ্যালয় যে কাউকে সহায়তা প্রদান করতে পারে।

সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন প্রফেসর সাদেকা হালিম স্বীকার করেছেন যে, কোভিড-১৯ পরিস্থিতির খুব শিগগির উন্নতি না হলে ঢাবি সেশন জটের মুখে পরতে পারে।

তিনি দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘একাডেমিক ক্ষতি কমানোর জন্য আমরা ফেসবুক গ্রুপের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের হ্যান্ড নোট এবং অন্যান্য কোর্স উপকরণ সরবরাহ করতে পারি। এগুলো তাদের পড়াশোনার মধ্যে রাখতে সহায়তা করতে পারে। বিশ্ববিদ্যালয় পুনরায় চালু হওয়ার পরে ক্লাসের সংখ্যা বাড়ানো হবে।’

তিনি জানান, কোভিড-১৯ পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয় একাডেমিক কার্যক্রম পুনরায় শুরু করবে না।

অনেক শিক্ষকের অনলাইনে ক্লাস নেওয়ার প্রশিক্ষণ নেই জানিয়ে উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক মুহাম্মদ সামাদ বলেন, ‘আমাদের শিক্ষক এবং শিক্ষার্থীদের প্রয়োজনীয় প্রযুক্তিগত উপাদান আছে কী না, তা আমাদের অবশ্যই ভাবতে হবে। অনেক সিনিয়র শিক্ষকের অনলাইনে ক্লাস নেওয়ার অভিজ্ঞতা নেই। আমাদের আর্থিকভাবে সক্ষম নয় এমন শিক্ষার্থীদের সংখ্যাও মাথায় রাখতে হবে। এমনকি যদি একজন শিক্ষার্থীও অনলাইনে ক্লাস করতে না পারেন, তাহলে তিনি তার অধিকার থেকে বঞ্চিত হবেন।’

Comments

The Daily Star  | English

Interest payments, subsidies soak up almost half of budget

Interest payments and subsidies have absorbed nearly half of Bangladesh’s total budget expenditure in the first seven months of the current fiscal year, underscoring growing fiscal stress and raising concerns over public finances.

1h ago