করোনা রোগীদের সেবায় চাঁদপুরের চিকিৎসক দম্পতি

চাঁদপুরে প্রতিদিনই করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। সিভিল সার্জন কার্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, এখন পর্যন্ত জেলায় আক্রান্ত ৪৮ জনকে শনাক্ত করা হয়েছে। ‘আরও আক্রান্ত থাকতে পারে’— এমনটি আশঙ্কা করে নমুনা পরীক্ষা চলছে।
চাঁদপুরের চিকিৎসক দম্পতি ডা. সুজাউদ্দৌলা রুবেল ও ডা. সাজেদা বেগম।

চাঁদপুরে প্রতিদিনই করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। সিভিল সার্জন কার্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, এখন পর্যন্ত জেলায় আক্রান্ত ৪৮ জনকে শনাক্ত করা হয়েছে। ‘আরও আক্রান্ত থাকতে পারে’— এমনটি আশঙ্কা করে নমুনা পরীক্ষা চলছে।

জেলা প্রশাসনের তথ্যমতে, করোনা রোগীদের সেবায় পুরো জেলায় সরকারি-বেসরকারি মিলিয়ে ২৪৭ জন চিকিৎসক রয়েছেন। এদের মধ্যে দিনরাত অক্লান্ত পরিশ্রম করে ইতোমধ্যে প্রশংসা কুড়িয়েছেন চিকিৎসক দম্পতি ডা. সুজাউদ্দৌলা রুবেল ও ডা. সাজেদা বেগম। চাঁদপুরে করোনার সংক্রমণের শুরুর দিকে থেকে তারা অবিরামভাবে সেবা দিয়ে যাচ্ছেন। ভয়-ক্লান্তিকে হার মানিয়ে করোনাযুদ্ধে সম্মুখভাগে থেকে কাজ করছেন এই দম্পতি।

চাঁদপুরের সিভিল সার্জন ডা. মো সাখাওয়াত উল্লাহ দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘এই চিকিৎসক দম্পতি শহরে আলাদা প্রতিষ্ঠানে থেকেও করোনা রোগীদের চিকিৎসাসেবা, নমুনা সংগ্রহ ও সচেতনতায় শুরু থেকে সক্রিয় রয়েছেন। ইতোমধ্যে ডা. সাজেদা বেগমকে স্বাস্থ্য বিভাগের চট্টগ্রাম বিভাগীয় পরিচালক করোনাযুদ্ধের জেনারেল” উপাধিতে ভূষিত করেছেন। ওই পরিচালকের মতে, চাঁদপুরে করোনাযুদ্ধে কাজ করা অন্যতম শ্রেষ্ঠ চিকিৎসক হলেন ডা. সাজেদা।’

চাঁদপুর সদরের উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা হিসেবে কর্মরত রয়েছেন ডা. সাজেদা বেগম। তার স্বামী ডা. সুজাউদ্দৌলা রুবেল ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট চাঁদপুর সরকারি জেনারেল (সদর) হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক কর্মকর্তা (আরএমও) হিসেবে কর্মরত আছেন। একইসঙ্গে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ডা. রুবেলকে করোনা বিষয়ক ফোকাল পারসন ও মেডিক্যাল টিমের প্রধান হিসেবে মনোনীত করেন।

ডা. রুবেল দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘করোনা-ঝুঁকি জেনেও আমি সদর হাসপাতালের নিয়মিত কাজের পাশাপাশি চিকিৎসা নিতে আসা করোনা সন্দেহভাজন রোগীদের চিহ্নিত করে নমুনা সংগ্রহের ব্যবস্থা করি। তাদের প্রাথমিক চিকিৎসাপত্র দেওয়া, শনাক্ত রোগীদের হাসপাতাল অথবা বাসায় চিকিৎসাপত্র দেওয়া, আইসোলেশনে চিকিৎসাধীন রোগীদের বাড়তি নজর রাখাসহ মৃত ব্যক্তির ময়নাতদন্তের কাজ করি। এর পাশাপাশি সংবাদকর্মীদেরও তথ্য দিতে হয় প্রতিনিয়ত।’

ডা. সাজেদা বেগম বলেন, ‘চিকিৎসাসেবা দানের ক্ষেত্রে আমার কোনো হাসপাতাল নেই। তবে, করোনায় আক্রান্ত বা উপসর্গ নিয়ে মারা যাওয়া ব্যক্তিদের বিশেষ ব্যবস্থায় দাফন করা এবং প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের বাড়ি বাড়ি টিম পাঠিয়ে নমুনা সংগ্রহের ব্যবস্থা করাসহ সন্দেহভাজন, আক্রান্ত, মৃতের বাসা-বাড়ি লকডাউন করার কাজটি করে যাচ্ছি প্রতিদিনই।’

‘পাশাপাশি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে “কোভিড-১৯” নামে একটি ফেসবুক পেজে প্রতিদিন ভিডিও লাইভের মাধ্যমে করোনা বিষয়ে তথ্য, পরামর্শ, চিকিৎসা ও সতর্কতা তুলে ধরছি। সেখানে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা মানুষের বিভিন্ন প্রশ্নের সরাসরি জবাব দিচ্ছেন। এ ছাড়া, ২৪ ঘণ্টা মুঠোফোনের মাধ্যমে করোনাবিষয়ক টেলিমেডিসিন সেবা দিয়ে যাচ্ছি’, বলেন তিনি।

ডা. রুবেল বলেন, ‘স্বাস্থ্যঝুঁকি থাকা সত্ত্বেও আমরা দুই জন এই কাজ করে যাচ্ছি। শুধু চাকরি নয়, মানবিক কারণে আমরা এগুলো করে যাচ্ছি। মাঝেমধ্যে খারাপ লাগে, ক্লান্তিও আসে। কিন্তু, পিছুহটলে তো হবে না। নিজেদের করোনাযুদ্ধের প্রহরী মনে করে আবার এগিয়ে যাই।’

উল্লেখ্য, গত ৬ মে চট্টগ্রাম বিভাগের ১৪ জন স্বাস্থ্য কর্মকর্তাকে করোনাযুদ্ধের ‘জেনারেল’ উপাধি দেওয়া হয়। তাদের মধ্যে ডা. সাজেদা বেগম অন্যতম।

Comments

The Daily Star  | English
government changed office hours

Govt office hours 9am-3pm from Sunday to Tuesday

The government offices will be open from 9:00am to 3:00pm for the next three days -- from Sunday to Tuesday -- this week, Public Administration Minister Farhad Hossain said today

31m ago