‘হয় খাবার দেন, না হলে বাস চলার অনুমতি দেন’
গণপরিবহন চালুর দাবিতে মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন পঞ্চগড় জেলা বাস, মিনিবাস, কোচ ও মাইক্রোবাস শ্রমিক ইউনিয়নের কর্মহীন শ্রমিকরা। এ সময় তারা বলেন, ‘হয় খাবার দেন, না হলে বাস চলার অনুমতি দেন। আমাদের ঘরে খাবার নেই, পরিবার নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছি।’
আজ রবিবার সকাল ১১ টা থেকে দুপুর দুইটা পর্যন্ত তিন ঘণ্টাব্যাপী পঞ্চগড় শহরের চৌরঙ্গী মোড়ে পঞ্চগড়-ঢাকা মহাসড়ক অবরোধ এ বিক্ষোভ করেন তারা।
এ সময় অবরোধ স্থানের দু’ধারে সড়কে আটকা পড়ে অসংখ্য যানবাহন। আর দুর্ভোগের মুখে পড়েন সাধারণ মানুষ।
খবর পেয়ে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) গোলাম রব্বানী ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা ঘটনাস্থলে গিয়ে শ্রমিকদের ত্রাণ সহায়তার আশ্বাস দেন। পাশাপাশি সরকারের নির্দেশনা অমান্য করে চলা যানবাহনের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানান। পরে দুপুর দুইটার দিকে অবরোধ তুলে নেন শ্রমিকেরা।
বিক্ষোভকারী শ্রমিকরা জানান, সরকারের গণপরিবহন বন্ধ ঘোষণার পর গত মার্চের শেষ সপ্তাহ থেকে তারা কর্মহীন হয়ে ঘরে বসে আছেন। নিজেদের তেমন কোনো সঞ্চয় না থাকায় মানবেতর জীবনযাপন করছেন। কেউ কেউ সরকারি ত্রাণ সহায়তা পেলেও তা চাহিদার তুলনায় নগণ্য। জেলায় দুই আড়াই হাজার শ্রমিক আছে এরমধ্যে পৌরসভায় বসবাসরত শতাধিক শ্রমিক ১০ কেজি করে চাল পেয়েছিলেন। তা দিয়ে কিছুদিন চলার পর আবার তারা শূন্য হয়ে গেছেন।
এ সময় অনেক শ্রমিক অভিযোগ করেন শ্রমিক নেতারাও তাদের পাশে দাঁড়ায়নি। তারা দাবি করেন, সরকার ধীরে ধীরে সবকিছু শিথিল করছে। মার্কেট খুলে দিচ্ছে। পণ্যবাহী ট্রাক চলছে, ছোট ছোট যানবাহনগুলোতে মানুষ চলাচল করছে। শুধু তাদের যাত্রীবাহী বাস চলাচল করতে দিচ্ছে না।
এটা তাদের সঙ্গে অন্যায় করা হচ্ছে বলে মনে করেন তারা।
বিক্ষোভকারী বাস চালক মো. নফিউল বলেন, ‘প্রায় সব ধরনের যান চলাচল করছে শুধু যাত্রীবাহী বাস ছাড়া। এতদিন ঘরে বসা কি করে চলব। ঘরে খাবার নেই বলেই রাস্তায় নেমেছি। যতদিন বাস চলাচল বন্ধ থাকবে ততদিন খাবার দেন, তা না হলে আমাদের গাড়ি চালানোর অনুমতি দেন।’
পঞ্চগড় জেলা বাস, মিনিবাস, কোচ ও মাইক্রোবাস শ্রমিক ইউনিয়নের সড়ক সম্পাদক মনির হোসেন বলেন, ‘জেলার পাঁচটি উপজেলায় আমাদের সংগঠনের মোট শ্রমিক দুই হাজার পাঁচশ জন। বাস চলাচল বন্ধের পর শ্রমিক ইউনিয়ন থেকে ৫ কেজি করে চাল দেওয়া হয়েছিল।’
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইএনও) গোলাম রব্বানী বলেন, ‘শ্রমিকরা গণপরিবহণ চালুর দাবিতে সড়ক অবরোধ করেছিলেন। সরকারের কেন্দ্রীয় নির্দেশনা ছাড়া তা সম্ভব নয় বলে তাদের বোঝানো হয়।
এছাড়া যেসব শ্রমিক ত্রাণ সহায়তা পাননি পর্যায়ক্রমে তাদের ত্রাণ সহায়তা দেওয়া হবে।’
Comments