ফরিদপুরের ২ উপজেলায় শিলাবৃষ্টিতে পাটের ব্যাপক ক্ষতি
![](https://bangla.thedailystar.net/sites/default/files/styles/big_202/public/feature/images/faridpur-damage-jute.jpg?itok=Vi9cAY6m×tamp=1589187444)
ফরিদপুরের বোয়ালমারী ও মধুখালী উপজেলায় শিলাবৃষ্টিতে পাটের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। গত ৯ মে সন্ধ্যার দিকে ওই দুই উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে শিলাবৃষ্টি হয়।
ফরিদপুর কৃষি অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, শিলাবৃষ্টিতে দুটি উপজেলার প্রায় ৬৭৬ হেক্টর জমির পাট সম্পূর্ণ নষ্ট হয়ে গেছে।
বোয়ালমারীর ঘোষপুর ইউনিয়নের ঘোষপুর গ্রামের কৃষক আশুতোষ বিশ্বাস বলেন, ‘আমি ৩৬০ শতাংশ জমিতে পাটের আবাদ করেছিলাম। শিলাবৃষ্টিতে পুরো জমির পাট নষ্ট হয়ে গেছে।’
একই উপজেলার সাতৈর ইউনিয়নের কাদিরদি গ্রামের চাষি নূরুল ইসলাম মোল্লা বলেন, ‘আমি ২৭০ শতাংশ জমিতে পাটের চারা বুনেছিলাম। শিলাবৃষ্টিতে ক্ষেতের অন্তত ২৫০ শতাংশ জমির পাটের চারার মাথা ভেঙে গেছে। এখন এই ক্ষতি কীভাবে সামাল দেবো, সেই চিন্তায় রয়েছি।’
সাতৈর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান বলেন, ‘আকস্মিক শিলাবৃষ্টিতে ক্ষেতের পাটগুলো মাঠের সঙ্গে মিশে গেছে। পাটের চারার মাথা ভেঙে গেছে। অনেক জমির পাকা ধানের গাছগুলো ঝড়ের কারণে মাটিতে শুয়ে পড়েছে। সবমিলিয়ে সাতৈর ইউনিয়নে প্রায় এক হাজার পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।’
মধুখালী উপজেলার মেঘচামী ইউনিয়নের আশাপুর গ্রামের পাটচাষি ইসহাক খন্দকার জানান, তিনি ১০০ শতাংশ জমিতে পাট চাষ করেছিলেন। পাটগাছগুলো কেবল গা ঝাড়া দিয়ে উঠছিল। কিন্তু, শিলাবৃষ্টিতে গাছের মাথাগুলো ভেঙে গেছে।
বোয়ালমারী উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, এ বছর উপজেলায় ১৪ হাজার আট শ হেক্টর জমিতে পাটের আবাদ করা হয়েছে। শিলাবৃষ্টিতে উপজেলার ২ হাজার ১৩৫ হেক্টর জমির পাটের ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর মধ্যে সম্পূর্ণভাবে বিনষ্ট হয়েছে প্রায় ৪ শ হেক্টর জমির পাট। এর মধ্যে বিনষ্ট হয়েছে প্রায় ৫৬৫ হেক্টর। এই উপজেলায় এ ছাড়াও ৭৩ হেক্টর জমির ধান, ১২ হেক্টর জমির মরিচ, সাড়ে নয় হেক্টর জমির তিল ও ১৫ হেক্টর জমিতে রোপণ করা শাকসবজি আংশিক বিনষ্ট হয়ে গেছে শিলাবৃষ্টিতে।
মধুখালী উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, একই সময়ে মধুখালী উপজেলার আশাপুর ও পৌরসভা সদরের কিছু এলাকার ১১১ হেক্টর জমির পাটের ক্ষেতের ফসল সম্পূর্ণ বিনষ্ট হয়ে গেছে।
বোয়ালমারী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা প্রীতম কুমার হোড় বলেন, ‘গতকাল সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা সরেজমিনে পরিদর্শন করেছি। এর মধ্যে বোয়ালমারীর সাতৈর ও ঘোষপুর ইউনিয়নে ক্ষতির পরিমাণ বেশি।’
তিনি বলেন, ‘ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা প্রস্তুত করা হচ্ছে। শেখর, চতর ও দাদপুর ইউনিয়নসহ বোয়ালমারী পৌর এলাকারও বিভিন্নস্থানে কৃষি জমি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।’
ফরিদপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কার্তিক চন্দ্র চক্রবর্তী বলেন, ‘ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদেরকে আমরা অন্য ফসল চাষের পরামর্শ দিয়েছি। সরকার কোনো প্রণোদনা দিলে এসব ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের আগে সেই সুবিধা প্রদানের ব্যবস্থা করা হবে।’
Comments