১৩ উপজেলায় করোনার নমুনা সংগ্রহ করছেন ১৪ জন
স্বল্প সংখ্যক মেডিকেল টেকনোলজিস্ট দিয়ে করোনাভাইরাস পরীক্ষার জন্য নমুনা সংগ্রহ করতে হিমশিম খেতে হচ্ছে দিনাজপুর জেলা স্বাস্থ্য বিভাগকে। এই অবস্থায় অস্থায়ীভাবে আরও মেডিকেল টেকনোলজিস্ট নিয়োগের আবেদন করা হয়েছে।
জেলা সিভিল সার্জন ডা. আব্দুল কুদ্দুছ জানান, মাত্র ১৪ জন মেডিকেল টেকনোলজিস্ট দিয়ে ১৩টি উপজেলায় নমুনা সংগ্রহের কাজ চলছে।
সর্বোচ্চ ঝুঁকি নিয়ে প্রতিদিন গড়ে তারা প্রায় ২০ জনের নমুনা সংগ্রহ করছেন। অব্যাহতভাবে প্রতিদিন অধিক সংখ্যক নমুনা সংগ্রহ করায় মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ও যাদের নমুনা সংগ্রহ করা হচ্ছে-উভয়েই পড়ছেন স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে।
সিভিল সার্জন জানান, ৩-৪ দিন পর পর মেডিকেল টেকনোলজিস্টদের নমুনা পরীক্ষা করা হচ্ছে। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, নমুনা সংগ্রহ করতে গিয়ে ইতোমধ্যে দিনাজপুরের বীরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের একজন মেডিকেল অফিসার এবং বোচাগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের একজন অ্যাম্বুলেন্স চালক করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন।
দিনাজপুরের বিরল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল টেকনোলজিস্ট আরমান আলী জানান, তাকে প্রতিদিন অন্তত বিভিন্ন জায়গায় গিয়ে ২০ জনের নমুনা সংগ্রহ করতে হয়। আজ সোমবার তাকে ১৯ জনের নমুনা সংগ্রহ করতে হয়েছে। এই গরমে পিপিই পড়ে বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে একাধারে নমুনা সংগ্রহ করায় তিনিও অসুস্থ হয়ে পড়ছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন মেডিকেল টেকনোলজিস্ট জানান, ছুটির দিনও তাদের নমুনা সংগ্রহ করতে হয়।
তারা জানান, যেখানে চিকিৎসকরা করোনা ইউনিটে টানা সাত দিন দায়িত্ব পালন করে ১৫ দিন আইসোলশনে যাচ্ছেন, সেখানে সর্বোচ্চ ঝুঁকি নিয়েও তাদের প্রতিদিন নমুনা সংগ্রহ করতে হচ্ছে।
জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের তথ্যে, দিনাজপুরের জনসংখ্যা প্রায় ৩১ লাখ ১০ হাজার। এছাড়াও প্রতিদিন দেশের বিভিন্ন জেলা বিশেষ করে ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জ থেকে দিনাজপুরে ফিরেছেন শত শত মানুষ। এখনও প্রতিদিন কোন না কোনভাবে দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে মানুষ আসছে। ফলে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ রোধে বেশি সংখ্যক নমুনা পরীক্ষা জরুরি হয়ে পড়েছে।
এ বিষয়ে সিভিল সার্জন জানান, বেসরকারি ল্যাব ও প্যাথোলজি সেন্টারের অনেক মেডিকেল টেকনোলজিস্ট রয়েছেন। এই পরিস্থিতিতে নমুনা সংগ্রহের জন্য উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছে তাদের মধ্য থেকে আউটসোর্সিং-এর ভিত্তিতে অন্তত ২ মাসের জন্য মেডিকেল টেকনোলজিস্ট নিয়োগের আবেদন করা হয়েছে।
স্বাস্থ্য বিভাগের তথ্যে, জেলায় আজ পর্যন্ত আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ৫১ জন। এদের মধ্যে সুস্থ হয়েছেন ৬ জন এবং মারা গেছেন একজন।
Comments