চা-শ্রমিকদের সন্তানরাই ত্রাণ দিলো বন্ধ থাকা রেমা চা-বাগানের শ্রমিকদের

চা-শ্রমিকদের সন্তানরাই ত্রাণ দিলো দুই মাসের বেশি সময় বন্ধ থাকা হবিগঞ্জের চুনারুঘাটের রেমা চা-বাগানের শ্রমিকদের।
দুই মাসের বেশি সময় ধরে বন্ধ থাকা রেমা চা-বাগানের শ্রমিকদের ত্রাণ দেয় চা-শ্রমিকদের সন্তানরা। ১২ মে, ২০২০। ছবি: স্টার

চা-শ্রমিকদের সন্তানরাই ত্রাণ দিলো দুই মাসের বেশি সময় বন্ধ থাকা হবিগঞ্জের চুনারুঘাটের রেমা চা-বাগানের শ্রমিকদের।

বিভিন্ন বাগানের চা-শ্রমিক সন্তানরা বাগানের ৪৮০ অসহায় ও কর্মহীন পরিবারের হাতে তুলে দিয়েছে খাদ্য সামগ্রী ও নগদ অর্থ। চলমান জাতীয় সংকটে চা-শ্রমিক সন্তানদের এমন উদ্যোগ এই প্রথম বলে আয়োজকদের উৎসাহ দিচ্ছেন অনেকে।

গতকাল মঙ্গলবার দিনব্যাপী এই কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয় ‘কালিটির নবসঞ্চার’ ব্যানারে।

আয়োজকরা জানান, এই উদ্যোগের প্রধান উদ্যোক্তা ও সমন্বয়ের কাজ করেন শমশেরনগর চা-বাগানের বাসিন্দা অনুময় বর্মা। তার আহ্বানে দ্রুত চা-শ্রমিক সন্তানেরা এই প্লাটফর্মে নিজেদের সম্পৃক্ত করতে থাকেন।

মাত্র ১২ দিনের আড়াই লাখ টাকা তহবিলে জমা হয়। সেই টাকা দিয়ে খাবার কেনা হয়, যা গত ১০ তারিখে কালিটি চা বাগানে বিতরণের কথা ছিল। কিন্তু, এরই মধ্যে আন্দোলনের সুফল পাওয়ার ঘোষণা পান কালিটি চা-বাগানের শ্রমিকরা। গত ৯ মার্চ বলা হয়, ১০ মার্চ বাগানের সব বকেয়া পরিশোধ করা হবে।

দেশব্যাপী অঘোষিত লকডাউন চলাকালে প্রায় ৮৫ কিলোমিটার অতিক্রম করে গতকাল মঙ্গলবার ‘মানবতার উপহার নিয়ে আপনাদের পাশে আমরা’ এই স্লোগান নিয়ে গবির-অসহায় ৪৮০ পরিবারের পাশে দাঁড়ান শ্রমিক সন্তানরা।

ত্রাণ বিতরণ অনুষ্ঠানে রামাষ্কো সংঘের সভাপতি লক্ষ্মী নারায়ণ পাশী বলেন, ‘শ্রমিকদের এই দুযোর্গের সময় এমন একটা প্লাটফর্ম খুবই দরকার।’ সাধ্যমত সহযোগিতার আশ্বাসও দেন তিনি।

পাত্রখোলা চা-ছাত্র যুব পরিষদের সাধারণ সম্পাদক প্রদীপ পাল হাতে হাত রেখে কাজ করার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন।

কালিটি চা-বাগানের দিলিপ কুমার দাশ ও দয়াল অলমিক বলেন, ‘১২ মার্চ রেমা চা-বাগানের সব চা-শ্রমিক পরিবারের (৪৮০টি) মধ্যে খাদ্য সামগ্রী দেওয়া হয়। চা-জনগোষ্ঠীর নিজেদের অর্থায়নে এই প্রথম বাগানের প্রতিটি পরিবারকে সহযগিতা করার নজির স্থাপন করলো।’

এ উদ্যোগের সমন্বয়ক শমশেরনগর চা-বাগানের বাসিন্দা অনুময় বর্মা বলেন, ‘কালিটি চা-বাগান প্রায় ১২ সপ্তাহ ধরে বন্ধ। বাগান খোলার জন্যে শুরু হয় আন্দোলন। ভুখা মিছিল, লংমার্চ করেন চা-শ্রমিকরা। এমন পরিস্থিতিতে কালিটি চা-বাগানের জন্য তহবিল গঠন করার কথা মাথায় আসে।’

‘আমাদের এই উদ্যোগে শুধু চা-বাগানেরই নয়, বাগানের বাইরের অনেক হৃদয়বান মানুষ এগিয়ে আসেন,’ যোগ করেন তিনি।

বাংলাদেশ চা-শ্রমিক ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সাধারণ সম্পাদক নিপেন পাল বলেন, ‘এই প্রথম চা-শ্রমিক সন্তানরা এই রকম উদ্যোগ নিলেন। আমরা তাদের কাছে কৃতজ্ঞ।’

Comments

The Daily Star  | English

Over 5,500 held in one week

At least 738 more people were arrested in the capital and several other districts in 36 hours till 6:00pm yesterday in connection with the recent violence across the country.

13h ago