নোয়াখালীতে করোনা সংক্রমণের কেন্দ্রস্থল এখন চৌমুহনী

নোয়াখালীর প্রধান বাণিজ্যিক কেন্দ্র বেগমগঞ্জ উপজেলার চৌমুহনী এখন জেলায় করোনা বিস্তারের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে। গত তিন-চার দিনে চাটখিল, সোনাইমুড়ী সেনবাগসহ আশপাশের উপজেলাগুলোতে শনাক্ত হওয়া কোভিড-১৯ পজিটিভদের বড় একটি অংশই চৌমুহনী থেকে যাওয়া।
স্টার অনলাইন গ্রাফিক্স

নোয়াখালীর প্রধান বাণিজ্যিক কেন্দ্র বেগমগঞ্জ উপজেলার চৌমুহনী এখন জেলায় করোনা বিস্তারের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে। গত তিন-চার দিনে চাটখিল, সোনাইমুড়ী সেনবাগসহ আশপাশের উপজেলাগুলোতে শনাক্ত হওয়া কোভিড-১৯ পজিটিভদের বড় একটি অংশই চৌমুহনী থেকে যাওয়া।

বর্তমানে বেগমগঞ্জে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ৩৪ জন যা জেলার অন্য সবগুলো উপজেলার চেয়ে বেশি। জেলায় মোট শনাক্ত ৬৯ জনের ৪৯ শতাংশই বেগমগঞ্জ উপজেলার বাসিন্দা। এখানে আক্রান্তদের তালিকায় রয়েছেন স্বাস্থ্যকর্মী, এনজিওকর্মী, শিশু, ব্যাংক কর্মকর্তা, মাছ ব্যবসায়ী ও পরিবহন শ্রমিক।

নোয়াখালীতে করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে গত ১১ এপ্রিল জেলাকে লকডাউন ঘোষণা করা হয়। অন্যান্য উপজেলায় লকডাউন কার্যকর হলেও চৌমুহনীতে শুরু থেকেই লকডাউন ছিল ঢিলেঢালা। লকডাউনের মধ্যেই প্রতিদিন শতশত মানুষকে জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে চৌমুহনীতে অবাধে যাতায়াত করতে দেখা গেছে। পাইকারি দোকানগুলোতে বেচাকেনা। বিভিন্ন যানবাহনও চলাচল করছে।

লকডাউনের মধ্যেই চৌমুহনী থেকে যেসব লোকজন জেলার নয়টি উপজেলা ও ফেনী-লক্ষ্মীপুর-কুমিল্লায় গেছেন তাদের অনেকেই সেখানে করোনা আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত হয়েছেন।

কুমিল্লার লাকসামে করোনা শনাক্ত দুই যুবক চৌমুহনী বাজারের একটি আড়তে কাজ করতেন। তারা শনাক্ত হওয়ার আগে ওই আড়তের এক কর্মচারী (২৮) করোনায় মারা গেলে আড়তের মালিশ তড়িঘড়ি করে মরদেহ শ্মশানে দাহ করে।

এ ঘটনার পর ওই আড়তের মালিক ও তার পরিবারের সদস্যরা করোনায় আক্রান্ত হন। সংক্রমণ যাতে আর বাড়তে না পারে সে জন্য আড়ত লকডাউন করে পরিবারের সবাইকে কোয়ারেন্টিনে থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়। কিন্তু তিনি নির্দেশ অমান্য করে গত সোমবার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খুলে দেন। খবর পেয়ে বেগমগঞ্জের ইউএনও মাহাবুব আলম ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে তাকে এক লাখ টাকা জরিমানা করে আবার তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেন।

চাটখিল উপজেলার খিলপাড়া ইউনিয়নের এক শিক্ষক সম্প্রতি বেগমগঞ্জে তার আত্মীয়ের বাড়িতে যান। সেখান থেকে ফিরবার পর তার করোনার উপসর্গ দেখা দেয়। নমুনা পরীক্ষায় ওই শিক্ষক ও তার ৯ বছর বয়সী ছেলের করোনা পজিটিভ আসে। সোনাইমুড়ী উপজেলার পতিশ গ্রামের বাসিন্দা এক যুবক (৩২) বেগমগঞ্জের মিরওয়ারিশপুর ও চৌমুহনী বাজারে ভ্রাম্যমাণ ব্যবসা করতেন। তিনি করোনায় আক্রান্ত হয়ে গত ৭ মে মারা যান। এছাড়া বিভিন্ন উপজেলায় আক্রান্ত ব্যক্তিদের অনেকে বেগমগঞ্জ ও চৌমুহনীতে যাতায়াত করেছে বলে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. অসীম কুমার দাস নিশ্চিত করেছেন।

বেগমগঞ্জ মডেল থানার ওসি হারুনুর রশিদ চৌধুরী দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, চৌমুহনী পাইকারি বাজার বন্ধ করা যাচ্ছে না। এখানে বিভিন্ন উপজেলা থেকে ব্যবসায়ীরা আসেন। এদের মাধ্যমে করোনা ছড়িয়ে পড়ছে। করোনা ভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে ও পাইকারি বাজারের ব্যাপারে স্থানীয় চৌমুহনী বাজার বণিক সমিতির নেতাদের সঙ্গে স্থানীয় সংসদ সদস্য মামুনুর রশিদ বুধবার বিকেলে বৈঠক করবেন।

Comments

The Daily Star  | English

Abu Sayed’s death in police firing: Cops’ FIR runs counter to known facts

Video footage shows police shooting at Begum Rokeya University student Abu Sayed, who posed no physical threat to the law enforcers, during the quota reform protest near the campus on July 16. He died soon afterwards.

12h ago