পাঁচ মিনিটের ঝড়ে দেড় শতাধিক বাড়ি তছনছ
পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলার দুটি ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রামের উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া ঝড়ে প্রায় দেড় শতাধিক বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। উপড়ে গেছে সহস্রাধিক গাছ, ক্ষতি হয়েছে ফসলের।
এছাড়া বিভিন্ন এলাকায় বিদ্যুতের খুঁটি ভেঙে প্রায় দশটি গ্রামে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে গেছে।
বুধবার সন্ধ্যা সোয়া ছয়টার দিকে মাত্র পাঁচ মিনিট স্থায়ী এই আকস্মিক ঝড় ময়দানদিঘী ও বেংহারী বনগ্রাম ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রামের ওপর দিয়ে বয়ে গেছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে দুটির বিভিন্ন গ্রামে গিয়ে দেখা যায় গাছপালা উপরে পড়ে ও গাছের ডাল ভেঙে বাড়িঘরের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ঘরের টিনের চালা উড়ে গেছে। ফসলেরও মারাত্মক ক্ষতি হয়েছে।
ক্ষতিগ্রস্ত গ্রামগুলোর মধ্যে ময়দানদিঘী ইউনিয়নের সিপাইপাড়া, তাসের পাড়া, কেরানীপাড়া, বানিয়াপাড়া এবং বেংহারী বনগ্রাম ইউনিয়নের ঝলঝলি, তেপুকুরিয়া, প্রধান পাড়া, সুভাসুজন খারিজা, ছেতনাইপাড়া অন্যতম।
সিপাইপাড়া গ্রামের মো. ইসলাম জানান, একটি আম গাছ তার শোবার ঘরের উপর ভেঙে পড়েছে।
তাসেরপাড়ার কয়েকটি উপজাতি পরিবারের কলা বাগান সম্পূর্ণ নষ্ট হয়ে গেছে। তাদের একজন শান্তি সরেন বলেন, আর ক’টা দিন পরই ফল আসত। আর এসময়েই এমন সর্বনাশ হয়ে গেল। বাড়ির ঘরও ভেঙে গেছে, কোনমতে জীবন রক্ষা হয়েছে আমাদের।
বর্গা নেওয়া জমির টাকাসহ অন্যান্য খরচ কিভাবে মেটাব এখন সেই চিন্তায় মাথা কাজ করে না, বলেন তিনি।
বেংহাড়ি ইউনিয়েনের ঝলঝলি গ্রামের আলাউদ্দীন বলেন, আমাদের দুটি ঘরের উপর গাছ ভেঙে পড়ায় ঘর দুটি নতুন করে করতে হবে। এছাড়া বাড়ির পাশে লাগানো ভুট্টা ও টমেটো খেত পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে গেছে।
ময়দানদিঘী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল জব্বার বলেন, ঘূর্ণিঝড়ে আমার ইউনিয়নের তিনটি গ্রামের প্রায় ৩০/৪০টি বাড়ি পুরাপুরি ভেঙে গেছে। অসংখ্য গাছপালা ভেঙে গেছে, খেতের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
বেংহারী বনগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ বলেন, আকস্মিক ঝড়ে ইউনিয়নের প্রায় দেড় শ বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা তৈরির কাজ চলছে।
বোদা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. সোলেমান আলী বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলো পরিদর্শন করেছি। স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানদের সহায়তায় ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা তৈরি করা হচ্ছে। তালিকা তৈরি হলেই ক্ষতির মাত্রা অনুযায়ী সহায়তার ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
Comments