২ জন নয়, এক রোহিঙ্গার করোনা শনাক্ত
বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া দুই রোহিঙ্গার করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে— এমন প্রতিবেদন গতকাল প্রকাশের পর আজ শুক্রবার জানা গেল আক্রান্ত সেই দুই জনের একজন রোহিঙ্গা নন, তিনি রোহিঙ্গা শিবিরের পাশে বসবাসকারী বাঙালি।
বিশেষ সুবিধা পাওয়ার আশায় ‘রোহিঙ্গা’ হিসেবে নিজের পরিচয় দিয়েছিলেন।
যে ব্যক্তি নিজের প্রকৃত পরিচয় গোপন করেছিলেন তিনি বান্দরবান জেলার নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম ইউনিয়নের কচুবনিয়া গ্রামের স্থানীয় বাসিন্দা ও বাংলাদেশের নাগরিক।
পেশায় ফর্মেসীর মালিক সেই ব্যক্তি চিকিৎসায় বাড়তি সুবিধা পাওয়ার আশায় মিথ্যা পরিচয় দিয়ে তার বাড়ির কাছে এমএসএফ পরিচালিত হাসপাতালে পরীক্ষার জন্য নমুনা জমা দেয়। ওই নমুনা পরীক্ষায় তার করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়।
ওই ব্যক্তি যে নামে নিজেকে পরিচয় দেন সে নামে কেউ রোহিঙ্গা ক্যাম্পে বাস করেন না, সে তথ্য গত রাতেই ক্যাম্প ইনচার্জ খলিলুর রহমান শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনারকে (আরআরআরসি) জানিয়ে দেন।
বিষয়টি উখিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নিকারুজ্জামান চৌধুরীকে জানানো হলে তিনি গত রাত ১১টায় কচুবনিয়া গ্রামে গিয়ে করোনা শনাক্ত ওই রোগীর সঙ্গে কথা বলেন এবং চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হবে বলে জানান।
আজ শুক্রবার দুপুরে ওই রোগীর সন্তানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘আজ সকালে পুলিশ এসে আমাদের ঘরের বাইরে যেতে বারণ করে গেছে। তবে বাবার চিকিৎসার কোন ব্যবস্থা এখনও করা হয়নি। বিষয়টি কক্সবাজার জেলা ও বান্দরবান জেলার সিভিল সার্জনকে জানানো হয়েছে।’
এদিকে, আরআরআরসি কার্যালয়ের প্রধান স্বাস্থ্যবিষয়ক সমন্বয়কারী ডা. আবু তোহা রেজোয়ান ভুঁইয়া দ্য ডেইলি স্টারকে জানিয়েছেন, উখিয়ার কুতুপালং লম্বাশিয়া এক নম্বর ক্যাম্পের পশ্চিম ব্লকে বসবাসরত যে রোহিঙ্গার শরীরে করোনা শনাক্ত হয়েছে তাকে দুই নম্বর ক্যাম্পের পশ্চিম ব্লকে আইওএম পরিচালিত আইসলেশন কেন্দ্রে রেখে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। তার করোনায় আক্রান্ত হওয়ার প্রকৃত কারণ বের করতে কয়েকটি সংস্থা কাজ করছে।
তার পরিবারের সাত সদস্যকে আইওএমের প্রশিক্ষিত টিম সার্বক্ষনিক নজরদারি করছে। তাদের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হবে।
ডা. আবু তোহা রেজোয়ান ভুঁইয়া বলেন, ‘সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে আজ দুপুর থেকে উখিয়া উপজেলার কুতুপালং লম্বাশিয়া এক নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পের পশ্চিমে পুরো এফ-ব্লক লকডাউন করা হয়েছে।’
‘এই ব্লকে এক হাজার ২৭৫ পরিবারের পাঁচ হাজার নারীপুরুষ শিশু বাস করছে। সবাইকে লকডাউনের আওতায় নিয়ে আসা হয়েছে। পুনারাদেশ না দেওয়া পর্যন্ত তারা কেউই নিজ নিজ ঘর থেকে বের হতে পারবে না। তাদের জীবনধারণের সব কিছু আরআরআরসি কার্যালয় থকে যথাযথভাবে সরাবরাহ করা হবে,’ যোগ করেন তিনি।
আরও পড়ুন:
Comments