গড়েয়ার ১৩০ দুস্থ অভিভাবক পেল বিদ্যালয়ের ঈদ উপহার
![](https://bangla.thedailystar.net/sites/default/files/styles/big_202/public/feature/images/thakurgaon_school.jpg?itok=HWBirgtz×tamp=1589555518)
করোনা পরিস্থিতিতে দেশে চলমান সাধারণ ছুটির কারণে কর্মহীন হয়ে পড়েছেন দেশের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। এমন সময়ে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার গড়েয়া এস সি বহুমুখী উচ্চবিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদের পাশে দাঁড়িয়েছে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
এই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাসহ তাদের পরিবার যেন ঈদ আনন্দ থেকে বঞ্চিত না হয় সেজন্য স্কুল ম্যানেজিং কমিটি দুস্থ শিক্ষার্থীদের পরিবারকে ঈদ উপহার দিয়েছে।
গতকাল এসব অভিভাবকের হাতে ঈদ উপহার তুলে দেওয়া হয়। এরআগে স্কুল কর্তৃপক্ষ এসব অভিভাবককে উপহার নেওয়ার জন্য আমন্ত্রণ জানায়। গতকাল ‘করোনাভাইরাস থেকে রক্ষা পেতে করণীয়’ শীর্ষক সচেতনতামূলক সংক্ষিপ্ত আলোচনা শেষে তাদের প্রত্যেকের হাতে এসব উপহার তুলে দেওয়া হয়। উপহারসামগ্রীর মধ্যে ছিল আতপ চাল, তেল, সেমাই, দুধ, চিনি, সাবান, বিস্কুট, চানাচুর, চকলেট, জুস। এসব উপহার পেয়ে অভিভাবকদের অনেকেই আপ্লুত হয়ে পড়েন।
সেখানে উপস্থিত হওয়া নবম শ্রেণির এক শিক্ষার্থীর বাবা বলেন, ‘জন দিয়ে (দিন মজুরী করে) খাওয়া লোক হামরা। কাহারোঠে (কারো কাছে) কিছু পাবা হলে চাহে চাহে ঘণ্টা ধরে অহিবা (থাকতে) হয়। আইজ স্কুলত সম্মান দিয়া ঈদের উপহার দিছে। এরমধ্যে পোলাও খাবার চাউলও আছে। এমন করিয়া হামাক কাহো কিছু দেয় নাই কোনদিন।’
নবম শ্রেণির আরেক শিক্ষার্থীর বাবা বলেন, ‘ছোট খাট একখান চায়ের দোকান করি। প্রায় পণে দুইমাস ধরিয়া দোকান বন্ধ আছে। খুব কষ্টের মধ্য দিয়া চলেছি। মাঝত ইউএনও অফিস থাকিয়া রিলিফ দিছে। এই অবস্থাত কি ঈদ আছে। তাহ আইজ স্কুলত কিছু খাবার জিনিস দিছে, সঙ্গে ঈদের দিনের তানত পোলাওয়ের চাউলও আছে। স্কুল থেকিয়া এই অভাবের দিনত হামার কথা স্মরণ কইচ্ছে এইটা ভাবিয়া চোখত পানি আসে যাছে।’
এ ব্যাপারে স্কুল ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি নজমুল হুদা শাহ্ এ্যাপোলো বলেন, ‘করোনা পরিস্থিতিতে স্কুলের সব শিক্ষার্থী যেন বাড়িতে পরিবারের সঙ্গে ঈদ আনন্দ উপভোগ করতে পারে তাই ম্যানেজিং কমিটির এই উদ্যোগ। স্কুলের উন্নয়ন তহবিল থেকে নেওয়া কিছু টাকার সঙ্গে আমার ব্যক্তিগতভাবে দেওয়া কিছু টাকা মিলিয়ে এই খাদ্যসামগ্রী প্রদান করা হয়েছে।’
আমাদের এই উদ্যোগ যদি সমাজের সামর্থ্যবান ব্যক্তিদের হতদরিদ্রদের দুঃসময়ে এগিয়ে আসার অনুপ্রেরণা যোগায় তবেই এই ধরনের কাজের সফলতা আসে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
স্কুলের প্রধান শিক্ষক ওহিদুল ইসলাম বলেন, ‘স্কুলে প্রায় সাড়ে ছয়শ শিক্ষার্থী আছে। এদের মধ্য থেকে যাদের পরিবারের আর্থিক অবস্থা নিতান্তই খারাপ সেসব পরিবারকে বেঁছে নেওয়া হয়েছে উপহার প্রদানের জন্য।’
Comments